বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয় মিলেছে ৩১টি আসনে। মনোনয়ন প্রত্যাহার পর্ব মিটতেই বাঁকুড়া জেলা পরিষদ তৃণমূলের হাতে এসে গিয়েছে। চিন্তা নেই বটে, তবে অস্বস্তি রয়েছে। জেলা তৃণমূলের একটি সূত্রের দাবি, যে আসনগুলিতে লড়াই হবে, তার মধ্যে কয়েকটিতে দলেরই গোঁজ-প্রর্থী নির্দল হয়ে থেকে গিয়েছেন। অন্য দিকে, বিরোধী বিজেপিও কিছু জায়গায় একই ‘কাঁটায়’ বিদ্ধ।
বাঁকুড়ায় পঞ্চায়েতের তিনটি স্তরেই অনেক আসনে শাসকদলের একাধিক প্রার্থী মনোনয়ন জমা করেছিলেন। জেলা তৃণমূল নেতৃত্ব জানিয়েছিলেন, দলের অনুমোদিত প্রার্থী ছাড়া বাকিরা মনোনয়ন প্রত্যাহার করে নেবেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত যে সব গোঁজ-প্রার্থীই সরে দাঁড়াননি, প্রশাসনের হিসেব সেটা জানান দিচ্ছে। জেলা পরিষদের ৪৬টি আসনের জন্য তৃণমূলের হয়ে ৭৪ জন মনোনয়ন জমা করেছিলেন। নির্দল প্রার্থীর সংখ্যা ছিল ১। মনোনয়ন প্রত্যাহারের পরে দেখা যাচ্ছে নির্দলের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে হয়েছে ১৪।
অতিরিক্ত এই ১৩ জন নির্দলের অনেকেই তৃণমূলের গোঁজ-প্রার্থী। প্রশাসনের সূত্রে জানাচ্ছে, মনোনয়ন জমা করার সময়ে দলের নাম উল্লেখ করতে হয়। সেই ভাবে তৃণমূলের অতিরিক্ত ২৮ জন ছিলেন। তাঁদের একাংশ মনোনয়ন ফিরিয়ে নিয়েছেন। বাকিরা সরেও দাঁড়াননি। আর দলও তাঁদের প্রতীক দেয়নি। ফলে নির্দল হিসাবে তাঁরা লড়াইয়ে থাকছেন।
পঞ্চায়েত সমিতি ও গ্রামপঞ্চায়েত স্তরেও ‘নির্দল’ হয়েছেন শাসকদলের বেশ কিছু গোঁজ-প্রার্থী। পঞ্চায়েতের ২৫০৫টি আসনে তৃণমূলের হয়ে ৩০৫০টি মনোনয়ন জমা পড়েছিল। তখন নির্দল ছিলেন ২৯১ জন। প্রত্যাহার পর্ব শেষে নির্দলের সংখ্যা হয়েছে ৪৪০। পঞ্চায়েত সমিতি স্তরে ৫৩৫টি আসনের মধ্যে নির্দল ছিলেন ৫৩ জন। তৃণমূলের মনোনয়ন জমা পড়েছিল ৭৯২টি। প্রত্যাহার পর্বের শেষে নির্দল প্রার্থীর সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ১২৮।
খাতড়া মহকুমায় জেলা পরিষদের আসন ১৫টি। তার মধ্যে শুধু একটিতে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয় পেয়েছে তৃণমূল। দল সূত্রের খবর, বাকিগুলির মধ্যে কয়েক’টি আসনে বিরোধীদের পাশাপাশি এক বা একাধিক নির্দল প্রার্থীর সঙ্গে তৃণমূলের নির্বাচনী লড়াই হতে চলেছে। বাঁকুড়া সদর মহকুমায় জেলা পরিষদের ১৮টি আসনের ১৭টিই বিনা বাধায় দখলে এসেছে তৃণমূলের। ভোট হবে শুধু বাঁকুড়া ২ ব্লকের ২৬ নম্বর জেলা পরিষদ আসনে। সেখানেও তৃণমূলের অনুমোদিত প্রার্থী সোনাই মুখোপাধ্যায়। তাঁর বিরুদ্ধে নির্দল হিসাবে লড়ছেন তৃণমূলের হয়ে মনোনয়ন জমা করে প্রতীক না পাওয়া অনুপমা মণ্ডল।
তৃণমূলের বাঁকুড়া জেলা সভাপতি অরূপ খান বলেন, ‘‘দলের কোনও কর্মী যদি নির্দল হিসাবে দাঁড়িয়ে থাকেন তাঁর বিরুদ্ধে কী ব্যবস্থা হবে সেই ব্যাপারে দলীয় ভাবে সিদ্ধান্ত হবে।’’ আর জেলা পরিষদের বিদায়ী সভাধিপতি অরূপ চক্রবর্তীর দাবি, ‘‘দু’-একজন গোঁজ প্রার্থী থাকলেও তাঁদের আমরা গুরুত্ব দিচ্ছি না। কারন মানুষ উন্নয়নের স্বার্থেই তৃণমূলকে ভোট দেবেন।”
এই নতুন করে নির্দল হয়ে যাওয়া এই প্রার্থীদের মধ্যে বিরোধী দলেরও গোঁজও রয়েছেন বলে খবর। যেমন প্রশাসনের একটি সূত্রের দাবি, ছাতনা পঞ্চায়েত সমিতির ১৫ নম্বর আসনে বিজেপির হয়ে দু’জন প্রার্থী মনোনয়ন দাখিল করেছিলেন। তাঁদের একজন দলীয় প্রতীক পেয়ছেন। অন্য জন নির্দল হয়েছেন। একই ভাবে সিমলাপালের কয়েকটি গ্রাম পঞ্চায়েতেও বিজেপির কয়েকজন গোঁজ প্রার্থী রয়েছেন বলে জানা গিয়েছে। বিজেপির রাজ্য নেতা সুভাষ সরকার বলেন, ‘‘প্রতীক না পেয়েও যাঁরা সরে দাঁড়াননি, দল তাঁদের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেবে। তবে দু’-একটি জায়গায় এমনটা হয়ে থাকলেও বিজেপির ভোটব্যাঙ্কে এর কোনও প্রভাব পড়বে না।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy