পুরুলিয়ার কাশীপুরে সিপিএমের সূর্যকান্ত মিশ্র। নিজস্ব চিত্র
আগের দিন তালড্যাংরায় দলের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য অমিয় পাত্রের বাড়িতে হামলার প্রতিবাদে পথে নেমেছিলেন। সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্র রবিবার দলের কর্মীদের সঙ্গে পা মেলালেন কাশীপুরে। এখানেই দলের প্রার্থীদের মনোনয়ন করাতে নিয়ে যাওয়ার পথে সিপিএমের কেন্দ্রীয় কন্ট্রোল কমিশনের চেয়ারম্যান তথা প্রাক্তন সাংসদ বাসুদেব আচারিয়া-সহ কয়েকজন বর্ষীয়ান নেতা আক্রান্ত হয়েছিলেন। রাজ্যে সরকার পরিবর্তন না হলে কেন্দ্রীয় বাহিনী এনেও এখানে শান্তিপূর্ণ, অবাধ, নিরপেক্ষ নির্বাচন হবে না। সিপিএমের মতোই ছুটির দিনে বিজেপির শীর্ষ নেতারাও দুই জেলায় প্রচারে নেমেছিলেন।
সকালে কাশীপুরে মিছিল ও পথসভা আর দুপুরে পুরুলিয়া শহরের নিস্তারিণী কলেজে বামফ্রন্টের কর্মিসভা করেন সূর্যবাবু। দু’জায়গাতেই তিনি সন্ত্রাস রুখতে মানুষকে সঙ্গে নিয়ে লড়াই করার উপরে জোর দিয়েছেন। সূর্যবাবুর কথায়, ‘‘তৃণমূল ভয় পেয়েছে বলেই সন্ত্রাস করে আমাদের নেতা-কর্মীদের উপরে আক্রমণ করছে। আপনারা মানুষকে সাথে নিয়ে মানুষের পাশে থেকে সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে লড়াই করুন।” এ দিন সকাল ১০টা নাগাদ কাশীপুরের দলীয় কার্যালয় থেকে মিছিল করে শহরের একাংশ পরিক্রমা করে হাটতলায় পথসভা হয়। সূর্যবাবু ছাড়াও ছিলেন বাসুদেব আচারিয়া, দলের পুরুলিয়া জেলা সম্পাদক প্রদীপ রায়-সহ স্থানীয় নেতারা। আর নিস্তারিণী কলেজে ছিলেন ফব-র রাজ্য সম্পাদক নরেন চট্টোপাধ্যায়, আরএসপির রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য তপন হোড় প্রমুখ।
পঞ্চায়েত নির্বাচনে পুরুলিয়াতে জনসভা করার বদলে ছোট ছোট কর্মিসভার উপরে জোর দিচ্ছে সিপিএম। তবে ব্যতিক্রম শুধু কাশীপুর। মনোনয়ন পর্বে এখানেই তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতীদের বিরুদ্ধে মারধরের অভিযোগ তুলেছিল সিপিএম। কাশীপুরে সব আসনে প্রার্থীও দিতে পারেনি সিপিএম। সেই প্রেক্ষিতেই দলের রাজ্য সম্পাদককে এই ব্লকে এনে মিছিল ও পথসভা করে কর্মীদের উজ্জীবিত করার চেষ্টা করা হল বলে দাবি করেছেন সিপিএম নেতৃত্ব। জেলা সম্পাদক প্রদীপ রায় বলেন, ‘‘কাশীপুরকে সন্ত্রাসমুক্ত করতে প্রতি ইঞ্চিতে কর্মীদের লড়াই করতে হবে।”
নিস্তারিণী কলেজে তিনি বলেন, ‘‘তৃণমূল ও বিজেপিকে রুখতে যে আসনে বামফ্রন্টের প্রার্থী নেই, সেখানে ধর্মনিরপেক্ষ শক্তি বা শক্তিশালী নির্দল প্রার্থীকে সমর্থন করুন। আর যেখানে ওই ধরনের কোনও প্রার্থীই নেই, সেখানে ভোট দিতে গিয়ে ব্যালটে রসগোল্লা এঁকে আসুন।”
সাংবাদিকদের তিনি বলেন, ‘রাজ্যের নির্বাচন কমিশনার তো আসল নয়, তিনি সামনে আছেন। পিছন থেকে সুতো টানছে এই সরকার। আমরা বারবার বলেছি, এই সরকার যতদিন থাকবে, ততদিন পশ্চিমবঙ্গে শান্তিপূর্ণ, অবাধ, নিরপেক্ষ নির্বাচন হবে না। অতীতের নির্বাচনগুলিতে আমরা কেন্দ্রীয় নির্বাচন কমিশনকেও দেখেছি, কেন্দ্রীয় বাহিনীকেও দেখেছি।’’
এ দিকে, প্রার্থীদের নিয়ে প্রচারে বেড়িয়ে বিজেপির রাজ্য নেতা সুভাষ সরকার সিমলাপালের পার্শ্বলা পঞ্চায়েতের বিভিন্ন গ্রামে ঘুরে সাধারণ মানুষের সঙ্গে কথা বলেন। সুভাষের দাবি, ‘‘অনুন্নয়ন, দুর্নীতি এবং স্বজনপোষণ নিয়ে রাজ্য সরকারের উপরে ক্ষুব্ধ এই এলাকার মানুষজন।’’ তৃণমূলের জেলা সভাপতি অরূপ খানের পাল্টা কটাক্ষ, ‘‘বিজেপির নেতারা বিভাজন জানেন। উন্নয়ন তাঁরা চিনতে পারবেন না।’’
রাতে মানবাজারে এসে রোড শো করেন বিজেপির তারকা নেতা তথা কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয়। দর্শকরা দু’-এক কলি গানের আব্দার করায় তিনি বলেন, ‘‘আপনারা বিজেপিকে সুযোগ দিন, গান শুনিয়ে যাব।’’ ভিড় সামাল দিতে নাকাল হন পুলিশ কর্মীরা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy