নিকাশি নালা নেই। জমে জল। বাঁকুড়ার কলেজ রোডে। ছবি: অভিজিৎ সিংহ
জল নিকাশি ব্যবস্থার বেহাল অবস্থা নিয়ে বার বার প্রশ্নের মুখে পড়ছে বাঁকুড়া পুরসভা। জেলা প্রশাসনের গণ অভিযোগ মঞ্চে প্রায় রুটিন মাফিক এ নিয়ে অভিযোগ উঠছে। পরিস্থিতি এমনই যে খোদ শাসকদলের কাউন্সিলরও নিজেই গণঅভিযোগ মঞ্চে গিয়ে জেলাশাসকের কাছে এলাকায় নালা তৈরির আর্জি জানাচ্ছেন। এই পরিস্থিতিতে শহরের নিকাশি ব্যবস্থা ঢেলে সাজাতে নতুন করে পরিকল্পনা নিয়েছে পুরসভা।
বাঁকুড়া পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, শহরের ২৪টি ওয়ার্ডে মোট ৪৮টি পাকা নালা তৈরির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। যার মধ্যে শহরের ৪ নম্বর ওয়ার্ডে ছ’টি, ১২ নম্বর, ১৪ নম্বর, ৮ নম্বর, ২১ নম্বর, ৬ নম্বর ও ১৮ নম্বর ওয়ার্ডে দু’টি করে, শহরের ১৯ নম্বর, ২০ নম্বর, ২৪ নম্বর ও ১৬ নম্বর ওয়ার্ডে তিনটি করে, শহরের ৯ নম্বর, ১৫ নম্বর, ১১ নম্বর ওয়ার্ডে চারটি করে নালা তৈরি করা হবে। শহরের ৫ নম্বর, ৭ নম্বর ও ১৭ নম্বর ওয়ার্ডে একটি করে নালা হবে। এ ছাড়াও শহরের ২২ নম্বর ও ১৫ নম্বর ওয়ার্ড, ২২ নম্বর ও ২৪ নম্বর ওয়ার্ড এবং, ১ নম্বর ও ৩ নম্বর ওয়ার্ডে যৌথ ভাবে একটি করে মোট তিনটি নালা তৈরি হতে চলেছে এই প্রকল্পে।
পুরসভা সূত্রে খবর, ৪৮টি নালার মোট দৈর্ঘ প্রায় ২৭ কিলোমিটার। সে জন্য প্রয়োজন প্রায় ১২ কোটি টাকা। ওই প্রকল্পের পরিকল্পনা রাজ্য পুর ও নগরোন্নয়ন দফতরে কয়েক মাস আগেই জমা দেওয়া হয়েছে। এখন প্রকল্পটি মঞ্জুরের অপেক্ষায় বয়েছে বলে জানাচ্ছেন পুরকর্তৃপক্ষ।
বাঁকুড়ার পুরপ্রধান মহাপ্রসাদ সেনগুপ্ত বলেন, “এই প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে শহরের জল নিকাশি সমস্যা অনেকাংশেই মিটবে। রাজ্য পুর দফতরের তরফে আমাদের আশ্বাস দেওয়া হয়েছে, শীঘ্রই প্রকল্পটির জন্য অর্থ বরাদ্দ করা হবে।” অর্থাৎ, এ বারও ভারী বৃষ্টি হলে বাসিন্দাদের একাংশকে সেই নালা উপচে যাওয়া জলেই আটকে থাকতে হবে।
ফি বছর বর্ষায় অল্প বৃষ্টিতেই বাঁকুড়া শহরের বিভিন্ন ওয়ার্ডে জল জমে যায়। বৃষ্টির পরিমাণ বাড়লে শহরের বেশ কিছু এলাকায় কার্যত বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। দমকল বিভাগের সাহায্য নিয়ে এলাকা থেকে জল বের করতে হয়। শহরের নিকাশি ব্যবস্থার সমস্যা মেটাতে খোদ জেলাশাসক উমাশঙ্কর এস একাধিকবার পুরসভাকে ব্যবস্থা নিতে বলেছেন।
সম্প্রতি প্রশাসনের গণ অভিযোগ মঞ্চে বাঁকুড়া শহরের ১১ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর অলকা সেন মজুমদার জেলাশাসকের কাছে এলাকায় নিকাশি ব্যবস্থা না থাকার জেরে সমস্যার কথা তুলে ধরেন।
জেলাশাসক ওই ওয়ার্ড পরিদর্শন করে পুরসভাকে বিশেষ ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেন। মহাপ্রসাদবাবু জানাচ্ছেন, ১১ নম্বর ওয়ার্ডের জন্য আলাদা ভাবে একটি প্রকল্প নেওয়া হচ্ছে। সে জন্য বিশেষজ্ঞ বাস্তুকারদের একটি দলের সঙ্গে যোগাযোগ করছে পুরসভা।
পুরকর্তৃপক্ষের দাবি, এই মুহূর্তে শহরের ৯০ শতাংশ এলাকাতেই পাকা নালা রয়েছে। এই প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে শহরের ৯৫ শতাংশ এলাকা পাকা নালার আওতায় আসবে। এ দিকে বর্ষা এসে পড়েছে। কিন্তু এখনও নালা তৈরির কাজ শুরু না হওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করছেন বাঁকুড়া পুরসভার ১৬ নম্বর ওয়ার্ডের বিজেপি কাউন্সিলর নীলাদ্রিশেখর দানা।
তিনি বলেন, “প্রকল্পটির কাজ আরও আগেই শুরু করে দেওয়া উচিত ছিল। মনে হচ্ছে ওই প্রকল্পকে সামনে রেখে সামনের বছর পুরভোটে ময়দানে নামতে যাচ্ছে তৃণমূল। মানুষ কিন্তু প্রকল্পের গল্পে ভুলবেন না। তাঁরা কাজ দেখতে চান।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy