মঙ্গল মাহাতো।—নিজস্ব চিত্র।
প্রতিবন্ধী পড়ুয়াদের সরকারি ভাতা জমা পড়ার কথা ব্যাঙ্কে। কিন্তু এক মাস ধরে ব্যাঙ্কে আনাগোনা করেও পুঞ্চার বরাকচা গ্রামের এক পড়ুয়া প্রতিবন্ধী ভাতা জমা করার জন্য সেভিংস অ্যাকাউন্ট খোলাতে পারেনি। বিভিন্ন জায়গায় আবেদন জানিয়েও কাজ হয়নি বলে পরিবারের অভিযোগ।
মঙ্গল মাহাতো নামের ওই ছাত্রের মানসিক বিকাশ আর পাঁচজনের থেকে কম। গ্রামের স্কুলে সে চতুর্থ শ্রেণিতে পড়ে। সম্প্রতি মঙ্গল প্রতিবন্ধী শংসাপত্র পেয়েছে। ওই শংসাপত্র থাকলে সরকারি ভাবে পড়ুয়াদের বার্ষিক আড়াই হাজার টাকা সহায়তা দেওয়ার কথা। তার বাবা পেশায় দিনমজুর শুকদেব মাহাতো জানান, স্কুলের শিক্ষকেরা তাঁকে জানিয়েছিলেন, প্রতিবন্ধী শংসাপত্র দেখিয়ে সরকারি ভাতা পাওয়া যায়। কিন্তু, সে জন্য ওই ছাত্রের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট থাকা দরকার। তাঁর অভিযোগ, ‘‘ছেলের নামে পুঞ্চার নপাড়ায় একটি গ্রামীণ ব্যাঙ্কে অ্যাকাউন্ট খুলতে গিয়েছিলাম। মানসিক প্রতিবন্ধীদের অ্যাকাউন্ট খোলা যায় না বলে ওঁরা জানিয়েছেন। খুলতে চাননি। পড়ুয়ার একাউন্ট তারা খুলতে পারেন নাওঁরা ফিরিয়ে দিয়েছে। আমি ছেলের সঙ্গে জয়েন্ট অ্যাকাউন্ট খুলতে চেয়েছিলাম, তাতেও ওঁরা রাজি হননি। এক মাস ধরে ব্যাঙ্কে বারবার আবেদন জানিয়েও ফল হয়নি।’’ মঙ্গলের মা অষ্টমী মাহাতো বলেন, ‘‘ছেলেটা ওই ক’টা টাকা পেলে ওর লেখাপড়ায় কাজে লাগত।’’
বরাকচা প্রাথমিক স্কুলের প্রধানশিক্ষক মানিক মহাপাত্র জানান, সর্বশিক্ষা মিশন থেকে সব প্রতিবন্ধী পড়ুয়াদেরই আর্থিক সাহায্য দেওয়া হয়। কোথাও ব্যাঙ্কে এ রকম সমস্যা হয়েছে বলে তিনি শোনেননি। তবে ওই ব্যাঙ্কের ম্যানেজার বাসুদেব সাহা দাবি করেছেন, ‘‘মানসিক প্রতিবন্ধী পড়ুয়ার অ্যাকাউন্ট খোলা যায় না। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে এ জন্য বিশেষ অনুমতি নিতে হবে।’’ তা হলে এতদিন কথা বলেন নি কেন? সদুত্তর মেলেনি তাঁর কাছে।
মানসিক প্রতিবন্ধী পড়ুয়াদের নিয়ে কাজ করা মানবাজার ১ চক্রের স্পেশ্যাল এডুকেটর বিশ্ববিকাশ রায় মাহাতো বলেন, ‘‘মানবাজারের কয়েকটি ব্যাঙ্কে আমরা এই ধরনের পড়ুয়াদের জয়েন্ট অ্যাকাউন্ট খোলা করিয়েছি। ব্যাঙ্কগুলি তো সহযোগিতাই করেছে।’’ পুঞ্চার বিডিও অজয় সেনগুপ্ত বলেন, ‘‘ওই ছাত্রের সমস্যা নিয়ে অভিযোগপত্র পেয়েছি। তার অ্যাকাউন্ট খুলতে বাধা কোথায়, তা ওই ব্যাঙ্কের কাছে জানতে চাইব।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy