প্রধানমন্ত্রীর একটা ঘোষণায় মাথায় হাত পড়েছিল তাঁর। আরও একটা ঘোষণায় বুকে বলও পেয়েছিলেন। বিয়ের কার্ড আর প্রয়োজনীয় কাগজপত্র নিয়ে ছুটেছিলেন ব্যাঙ্কে। কিন্তু, শত মিনতির পরেও মেয়ের বিয়ের জন্য এক লক্ষ টাকা তুলতে পারেননি। তাঁকে খালি হাতেই ফিরিয়ে দিয়েছে সিউড়ির ওই রাষ্ট্রায়ত্ত শাখা। আজ, সোমবার মেয়ের বিয়ে কী করে পার করবেন ভেবে কুল পাচ্ছেন না মহম্মদবাজারের কাপাসডাঙার বাসিন্দা সুনীল দাস।
শুধু সুনীলই নন, কমবেশি একই ছবি সর্বত্র। নোটের এই আকালে বিয়ের জন্য কোথা থেকে এত নগদ টাকা আসবে, কুল পাচ্ছে না পাত্র এবং পাত্রীপক্ষেরা। অথচ যে সব পরিবারে বিয়ে-বৌভাত আছে, তারা সর্বোচ্চ আড়াই লক্ষ টাকা নিজেদের অ্যাকাউন্ট থেকে তুলতে পারবে বলে গত বৃহস্পতিবারই ঘোষণা করেছিলেন কেন্দ্রের অর্থ বিষয়ক সচিব শক্তিকান্ত দাস। তিনি জানান, বিয়ের কার্ড ও প্যান দিয়ে আবেদন জানালে পরিবারের এক জনের অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা তোলা যাবে।
কিন্তু কোথায় সেই টাকা? গ্রাহকদের দু’হাজারের বেশি টাকা কোনও ব্যাঙ্ক দিচ্ছে না এখনও। সরকারকে কর দিয়ে নিজেদেরই আয় করা টাকা তুলতে না পেরে ক্রমেই ক্ষোভ আর হতাশা বাড়ছে পাত্রপাত্রীদের পরিজনদের মধ্যে। সুনীল বলছেন, ‘‘নতুন ঘোষণার পরে কিছুটা দুশ্চিন্তামুক্ত হয়েছিলাম। শুক্রবার এক লক্ষ টাকা তোলার জন্য সিউড়ির ব্যাঙ্কে দীর্ঘক্ষণ লাইনও দিয়েছিলাম। ভিতরে গিয়ে প্রমাণপত্র হিসাবে মেয়ের বিয়ের ছাপানো কার্ড, পাত্রের বাড়ির বিয়ের কার্ড, প্রধানের লিখিত শংসাপত্র জমা দিই। কিন্তু ব্যাঙ্ক জানায়, সরকারের তরফে এমন কোনও নির্দেশ আসেনি। তাই বাড়তি টাকা দেওয়া যাবে না।’’ ব্যাঙ্ক ম্যানেজারের কাছ থেকে এই কথা শুনে মাথায় বাজ পড়ার অবস্থা হয় তাঁক। শেষমেশ মুশকিল আসান হয়ে এগিয়ে আসেন সুনীলের বন্ধু -পরিজনেরা। যার কাছে যা ছিল, তা-ই দিয়ে সবাই তাঁর পাশে দাঁড়ান।
তবু তা যে প্রয়োজনের তুলনায় কম, তা জানাচ্ছেন সুনীল। তাঁর এক পরিজনের বক্তব্য, ‘‘সরকারের উদ্দেশ্য মহৎ। কিন্তু সাধারণ মানুষকে হয়রান করাটাও ঠিক নয়। ঠিকমতো পরিকাঠামো গড়ে এটা বাস্তবায়িত করা দরকার ছিল। এই বিয়ের মরসুমে গরিব পরিবারগুলির কী অবস্থা, তা আমার অভিজ্ঞতা দিয়েই হাড়ে হাড়ে টের পাচ্ছি।’’ ব্যাঙ্ক ম্যানেজারের সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়নি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy