কলকাতা বইমেলা। —ফাইল চিত্র।
বাংলাদেশের কলকাতা বইমেলায় আসা না-আসা পুরোটাই এ দেশের উপরমহলের নির্দেশের উপরে নির্ভর করছে বলে জানাচ্ছেন পাবলিশার্স অ্যান্ড বুকসেলার্স গিল্ডের কর্তাব্যক্তিরা। সোমবার ঢাকা থেকে বাংলাদেশের জাতীয় গ্রন্থ কেন্দ্রের পরিচালক আফসানা বেগমের দাবি, “বাংলাদেশের প্রকাশকেরা কলকাতা বইমেলায় আসতে প্রবল আগ্রহী। দু’দেশের মধ্যে বন্ধুতার স্বার্থে কূটনৈতিক আনুষ্ঠানিকতার বাইরে গিয়েও আগ্রহ দেখিয়েছি। কিন্তু এখনও সাড়া মেলেনি। বিষয়টা হল, আপনাদের তরফে দাওয়াত না-এলে আমরা তো আপনার বাসায় খেতে যেতে পারি না!”
আফসানা ইতিমধ্যেই গিল্ডকর্তা ত্রিদিব চট্টোপাধ্যায়ের কাছে ইমেলে বইমেলায় আসার জন্য আগ্রহই দেখিয়েছেন। ত্রিদিব এ দিন বলেন, “বিষয়টি গিল্ডের উপরে নির্ভর করছে না। যা সিদ্ধান্ত কেন্দ্রের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষই বলতে পারবেন।” গিল্ডের ঘনিষ্ঠমহল এই পরিস্থিতির জন্য বাংলাদেশের পালাবদল পরবর্তী পরিস্থিতিকে দায়ী করছে। তাঁদের বক্তব্য, দু’দেশের সাধারণ মানুষের সম্পর্ক যেখানে দাঁড়িয়ে তাতে অপ্রীতিকর কিছুর ঝুঁকি এড়ানোই মঙ্গল। রাজ্য সরকারও সতর্কতার পক্ষপাতী বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রের খবর। সেই সঙ্গে প্রশ্ন উঠছে, প্রতি বছরের মতো ঢাকা এ বার কেন কলকাতায় বাংলাদেশ বইমেলা বা চলচ্চিত্র উৎসব আয়োজন করল না, তা নিয়েও। পালাবদলের পরে বাংলাদেশ পুস্তক প্রকাশক এবং বিক্রেতা সমিতির (বাপস) কিছু অভ্যন্তরীণ রদবদল চলছে এবং কলকাতায় বাংলাদেশের ডেপুটি হাই কমিশনও ভারপ্রাপ্ত আধিকারিকের হাতে চলছে, এই যুক্তি দিয়ে ঢাকার সংশ্লিষ্ট সূত্র বইমেলা করা যায়নি বলে জানাচ্ছে। তবে কলকাতা ও ঢাকার শুভবুদ্ধিসম্পন্ন অনেকেই বিশ্বাস করেন, ১৯৯৬ সাল থেকে বইমেলায় অবিচ্ছেদ্য বাংলাদেশ প্যাভিলিয়ন এ বার না-থাকলে দু’দেশের বিদ্বেষপন্থীদেরই জিত হবে।
পশ্চিমবঙ্গের বই বাংলাদেশের পাঠকদের কাছে পৌঁছনো যায় না-বলে এখানকার প্রকাশক মহলেও ক্ষোভ যথেষ্ট। এই ক্ষোভ সঙ্গত বলে মনে করেন আফসানা। তিনি এর প্রতিকারে গিল্ডকর্তা ত্রিদিবকে ইমেলে স্পষ্ট বার্তা দিয়েছেন বলে জানান। আফসানার কথায়, “অপ-রাজনীতির কারণে দীর্ঘ দিন জাতীয় গ্রন্থ কেন্দ্র আয়োজিত আন্তর্জাতিক বইমেলা (ঢাকা বইমেলা) বন্ধ। তাতে আগে কলকাতার প্রকাশকেরা গিয়েছেন। ২০২৫-এর শেষার্ধে সেই বইমেলা আয়োজনের তোড়জোড় চলছে। আমাদের কলকাতা বইমেলায় যাওয়া হোক না-হোক, ঢাকার আন্তর্জাতিক বইমেলায় ভারতের জন্য আমাদের দরজা খোলা থাকছে।”
ঢাকার সংশ্লিষ্ট মহলের দাবি, বইমেলায় যেতে যাতে সমস্যা না-হয়, তার জন্য পররাষ্ট্র মন্ত্রালয়ের মাধ্যমে পদক্ষেপ করা হয়েছে। বইমেলা দু’মাসেরও বেশি বাকি থাকলেও এত বই নিয়ে কলকাতায় আসা, বাংলাদেশ প্যাভিলিয়ন তৈরির জন্যও হাতে কিছু সময় দরকার। ভারতের সংশ্লিষ্ট সূত্রের মতে, পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে বইমেলার মাঠে বাংলাদেশের উপস্থিতির জন্য সতর্কতা দরকার। আফসানা বলছেন, “বিভিন্ন পণ্য আমদানি-রফতানির মতো বই আদানপ্রদানের কূটনীতি অক্ষুণ্ণ রাখতে না-পারার কারণ নেই। সাংস্কৃতিক কার্যক্রম যে কোনও সাময়িক অস্থিরতার উর্ধ্বে রাখাই অভিপ্রেত।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy