Advertisement
২৩ নভেম্বর ২০২৪
political clash

বোমা-গুলিতে তপ্ত বাবুইজোড়

শুক্রবার  দুপুরে ঘটনাটি ঘটেছে ওই ব্লকের কাঁকরতলা থানা এলাকার বাবুইজোড় গ্রামে। পরিস্থিতি সামাল দিতে বিশাল পুলিশ বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে। 

ভাঙচুরের পরে গাড়ি (বাঁ দিকে)। দেওয়ালে বোমা। নিজস্ব চিত্র

ভাঙচুরের পরে গাড়ি (বাঁ দিকে)। দেওয়ালে বোমা। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
কাঁকরতলা শেষ আপডেট: ০৫ সেপ্টেম্বর ২০২০ ০৩:১৫
Share: Save:

পঞ্চায়েতের রাশ কার হাতে থাকবে, তা নিয়ে সংঘর্ষে ফের উত্তপ্ত হয়ে উঠল খয়রাশোল। বোমা-গুলি চলার অভিযোগ উঠল। ঘটল পঞ্চায়েতে ঢুকে হামলা ও গাড়ি ভাঙচুরের ঘটনাও। শুক্রবার দুপুরে ঘটনাটি ঘটেছে ওই ব্লকের কাঁকরতলা থানা এলাকার বাবুইজোড় গ্রামে। পরিস্থিতি সামাল দিতে বিশাল পুলিশ বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে।
এ দিন সন্ধ্যা পর্যন্ত পুলিশের পুলিশের কাছে কোনও লিখিত অভিযোগ না হলেও ঘটনার নেপথ্যে তৃণমূলের যুযুধান দুই গোষ্ঠীর লড়াইকেই দায়ী করছেন এলাকার মানুষ। জেলা তৃণমূল নেতা তথা খয়রাশোলের পর্যবেক্ষক বিকাশ রায় চৌধুরী বলেন, ‘‘যে বা যারা ঘটনার নেপথ্যে, পুলিশকে বলব কোনও পক্ষ না দেখে তাদেরকে চিহ্নিত করে আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে।’’
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, মোট ১১ আসন বিশিষ্ট বাবুইজোড় পঞ্চায়েতের রাশ রয়েছে ব্লকের তৃণমূল নেতা আব্দুর রহমানের হাতে। ওই পঞ্চায়েতে তাঁর অনুগামী ৮ জন সদস্য। পঞ্চায়েতে তাঁর প্রবল বিরোধী রয়েছেন
মৃণালকান্তি ঘোষ (কেদার)। তাঁর হাতে রয়েছে তিন সদস্য। পঞ্চায়েতের কর্তৃত্ব কার দখলে থাকবে, এই নিয়ে দুই নেতার বিবাদ নতুন নয়। দু’জনকেই নিজেদের মধ্যে বিরোধ মিটিয়ে নেওয়ার পরামর্শ একাধিক বার দিয়েছেন জেলা তৃণমূল সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল। কিন্তু পরিস্থিতি বদলায়নি। দল সূত্রের খবর, পঞ্চায়েতের রাশ একা কেন আব্দুরের হাতে থাকবে, সে প্রশ্ন তুলে এবং বিহিত চাইতে এ দিনই বিকাশবাবুর সঙ্গে দেখা করেন কেদার। এ দিন যা ঘটেছে বাবুইজোড় গ্রামে, তা-ও দুই নেতার মধ্যে বিরোধেই বহিঃপ্রকাশ বলে জানাচ্ছেন দলের নিচুতলার কর্মীদের একাংশ।
ঠিক কী হয়েছিল?
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, স্থানীয় হরিএকতলা গ্রামের বেহাল রাস্তা সংস্কারের দাবিতে এ দিন কেদার গোষ্ঠীর লোকজন বাবুইজোড় পঞ্চায়েতের প্রধানের কাছে এসেছিলেন। তাঁদের অভিযোগ, তাঁদের পথ আটকায় আব্দুরের অনুগামীরা। আব্দুর-ঘনিষ্ঠ শেখ পলাশের সঙ্গে হাতাহাতিতে জড়িয়ে পড়েন কেদার
অনুগামীরা। অভিযোগ, হঠাৎ পঞ্চায়েতের ছাদ থেকে কেদারের লোকজনকে লক্ষ্য করে গুলি চালানো হয়। প্রাথমিক ভাবে কেদার-গোষ্ঠী পিছু হটলেও পরে দল ভারী করে ফিরে এসে পঞ্চায়েতে ঢুকে ভাঙচুর চলায় ও বোমাবাজি করে বলে অভিযোগ। পাল্টা বোমাও
ছোড়া হয়। পঞ্চায়েতের সামনে রাখা একটি গাড়ি ভাঙচুর হয়েছে। পঞ্চায়েত ভবন লক্ষ্য করেও একাধিক বোমা ছোড়া হয়েছে।
কেদারের দাবি, ‘‘ঘটনার সময় আমি ছিলাম না। তবে যেটুকু জেনেছি, রাস্তা নিয়ে বিহিত চাইতে গিয়ে বাধা পাওয়ায় এবং তাদের লক্ষ্য করে গুলি চালানোয় ক্ষোভ ছড়িয়েছিল গ্রামে। এর পর কী হয়েছে বলতে পারব না।’’ তাঁর অভিযোগ, ‘‘ওই এলাকায় আমাদেরকে কোণঠাসা করে রাখার চেষ্টা হচ্ছে। ১০০ দিনের কাজ থেকে আবাস যোজনার বাড়ি, স্বাস্থ্যসাথীর কার্ড— সব ক্ষেত্রেই বঞ্চনা চলছে।’’
অভিযোগ মানেননি আব্দুর রহমান। তিনি বলছেন, ‘‘ভিত্তিহীন অভিযোগ। উন্নয়ন নিয়ে কোনও পক্ষপাতিত্ব করা হয় না। এ দিন পঞ্চায়েতের ভিতরে বাইরে যা কিছু হয়েছে, সবটাই পরিকল্পিত। আমাদের কেউ বোমা-গুলি চালায়নি। সবটাই ওরা করেছে।’’ তাঁর দাবি, এই ঘটনায় কেদার ঘোষের সঙ্গে ব্লকের আর এক নেতার মদত রয়েছে। যিনি বড়রা হজরতপুর , নাকড়াকোন্দা থেকে দুষ্কৃতীদের পাঠিয়ে চেয়েছিলেন বাবুইজোড়ে অস্থিরতা তৈরি করতে। যে নেতার দিকে ইঙ্গিত, তিনি আবার বলেন, ‘‘আমি সিউড়িতে। আমি কেন ঝামেলায় জড়াব। পুলিশ তদন্ত করুক। সত্যিটা সামনে আসবে।’’ তবে কেদারের অভিযোগগুলি সঠিক বলেও ওই নেতার দাবি।
বিডিও (খয়রাশোল) সঞ্জয় দাস জানান, পঞ্চায়েত ঘিরে বোমাবাজি হয়েছে বলে শুনেছেন। তবে, পঞ্চায়েতের কোনও কর্মীর কিছু হয়নি। পুলিশ তদন্ত করছে।

অন্য বিষয়গুলি:

Political Clash Birbhum
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy