—প্রতীকী চিত্র।
আবাস প্রকল্পে বাড়ি গড়তে সম্প্রতি টাকা পেয়েছিলেন এক উপভোক্তা। অভিযোগ, তাঁর বাড়ি গিয়ে আবাসের ঘর পাইয়ে দেওয়ার জন্য ২০ হাজার টাকা ‘কাটমানি’ দাবি করেছেন তৃণমূলের এক মহিলা বুথ সভাপতি। সমাজমাধ্যমে সেই ভিডিয়ো (ভিডিয়োর সত্যতা যাচাই করেনি আন্দবাজার) ভাইরাল হতেই সুতির গাজিপুর গ্রামে শোরগোল পড়ে যায়। এ দিন সুতি ২ ব্লকের বিডিও হুমায়ুন চৌধুরী নীলিমা দাস নামে ওই মহিলার বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন। ওই মহিলার খোঁজ নেই। তাঁর স্বামীকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করেছে পুলিশ।
ওই ভিডিয়োয় দেখা গিয়েছে, নিজেকে কাশিমনগর পঞ্চায়েতের গাজিপুর গ্রামের ৪৯ নম্বর বুথের তৃণমূল বুথ সভাপতি পরিচয় দিয়ে টিনু বিবি নামে এক উপভোক্তার বাড়িতে গিয়ে নীলিমা বলছেন, “আপনি আবাস প্রকল্পে টাকা পেয়েছেন। সেই টাকা ঢুকেছে আপনার ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে। তা থেকে আমার হকের বিশ হাজার টাকা দিতে হবে।’’ তা শুনে টিনু বলেন, “এই টাকা তো সরকার দিয়েছে। অথচ তোমরা কেউ ১০ হাজার, কেউ ২০ হাজার টাকা দাবি করছ কেন? টাকা আমার অ্যাকাউন্টে ঢুকেছে বলে ছেলের মোবাইলে মেসেজ এসেছে। টাকা এখনও তুলিনি।’’ এরপর তৃণমূল নেত্রী ওই মহিলা ফের তাঁকে বলেন, “কাউকে সে টাকা দেবেন না। আমি ওই এলাকার দলের কাজ করি। এই টাকা পাওয়ার দাবি আমার। কেউ তা চাইতে এলে আমাকে ফোন করবেন।”
সমাজমাধ্যমে দ্রুত ভাইরাল হয় ওই ভিডিয়ো। নীলিমা এ দিন স্বীকারও করে নেন টাকা চাওয়ার কথা। তবে এ নিয়ে তিনি বলেন, “আমি নতুন। প্রথম বার ৪৯ নম্বর বুথের তৃণমূল সভাপতি হয়েছি। তাই অত অভিজ্ঞতা নেই। ঠিক বুঝতে পারিনি। আমার ভুল
হয়ে গিয়েছে।” ভিডিয়োয় দেখা গিয়েছে, নীলিমা পঞ্চায়েতের দলীয় প্রধানের নাম করছেন। প্রধান কি তাঁকে টাকা চাইতে বলেছিলেন? এই প্রশ্নে নীলিমা বলেন, “আসলে আমাদের অনেক খাটাখাটনি করতে হয় তো। প্রধানের নাম নিলেও তিনি আমাকে কিছু বলেননি। যা করেছি, ভুল করে করেছি।” এ দিন টিনু বলেন, “তিনি (নীলিমা) আমার বাড়িতে এসেছিলেন। আরও অনেকেই এসেছিলেন। জোর করে টাকা নেবেন বলছিলেন। টাকা ঢুকেছে অ্যাকাউন্টে। তা জানতে পেরে ওই মহিলা ২০ হাজার টাকা চাইছিলেন। আবার অন্য এক জন এসে ১০ হাজার টাকা চাইছিলেন। বলছিলেন টাকা না দিলে ঘরের টাকা আসা বন্ধ করে দেবেন।” তবে এ নিয়ে রাজ্যের শাসক দলকে বিঁধতে ছাড়েনি বিরোধীরা। সিপিএমের অরঙ্গাবাদ এরিয়া কমিটির সম্পাদক জুলফিকার আলি বলেন, “এই ভাবে টাকা তুলে নেতাদের কাছে পাঠাবে। তৃণমূলে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ পেয়েছে দুর্নীতি। প্রায় সব বুথেই এই কাটমানি সংস্কৃতি চলছে। কাটমানি বন্ধ হলে আর কেউ তৃণমূল করবে না।”
জঙ্গিপুর মহকুমা কংগ্রেসের সভাপতি আলফাজুদ্দিন বিশ্বাস বলেন, “এক জন বুথ সভাপতি বাড়িতে গিয়ে কাটমানি চাইছেন! কার প্রশ্রয়ে গিয়েছিলেন তিনি! গোটা জেলাতেই চলছে কাটমানির খেলা।”
তবে এ নিয়ে তৃণমূলের বিধায়ক ইমানি বিশ্বাসের প্রতিক্রিয়া, “ওই মহিলা তৃণমূলের বুথ সভাপতি নন। কাশিমনগরে আমাদের মহিলা বুথ সভাপতি কেউ নেই। কেন তিনি টাকা চাইতে গেলেন, তা তিনিই বলতে পারবেন। আমাকে পুলিশও জিজ্ঞাসা করেছিল বিষয়টি সম্পর্কে। আমিও তাদের এই কথাই বলেছি।” জঙ্গিপুরের তৃণমূলের জেলা সভাপতি খলিলুর রহমান বলেন, ‘‘আমি খোঁজ নিয়ে জেনেছি, যে মহিলাকে টাকা চাইতে দেখা গিয়েছে তিনি দলের কেউ নন। সব উপভোক্তার কাছে আবেদন, আবাসের ঘর পাওয়ার জন্য কাউকে একটি পয়সাও দেবেন না। কেউ চাইলে পুলিশকে জানান।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy