সাতসকালে: খবর পেয়ে হাজির পুলিশ। রবিবার। নিজস্ব চিত্র
আবার মন্দিরে চুরির ঘটনা ঘটল বাঁকুড়ার বিষ্ণুপুরে। শনিবার রাতে এক দল দুষ্কৃতী হানা দেয় বিষ্ণুপুর শহরের কৃষ্ণগঞ্জ এলাকার রাধালাল জিউ মন্দিরে। অভিযোগ, প্রণামীর বাক্স ভেঙে টাকা লুট করে তারা। রবিবার সন্ধ্যা পর্যন্ত ওই ঘটনায় কাউকে গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ। চলতি বছরের মাঝামাঝি মৃন্ময়ী মন্দিরে চুরির ঘটনায় শোরগোল পড়েছিল এলাকায়। রাধালাল জিউয়ের মন্দিরে চুরির খবর ছড়িয়ে পড়তেই শহরবাসীর মধ্যে ক্ষোভের সঞ্চার হয়। নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন তাঁরা।
এলাকায় গিয়ে এ দিন সকালে দেখা যায়, মন্দির চত্বরে ভিড় করেছেন বহু মানুষ। এসেছেন পুলিশ আধিকারিকেরাও। দুষ্কৃতীদের দ্রুত গ্রেফতারের দাবিতে বিষ্ণুপুর থানায় স্মারকলিপি জমা দেওয়া হয় এলাকাবাসীর তরফে। বিষ্ণুপুরের এসডিপিও প্রিয়ব্রত বক্সী বলেন, ‘‘খবর পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে পুলিশ তদন্তে গিয়েছে। দুষ্কৃতীরা ধরা পড়বে। প্রশাসন সজাগ রয়েছে। শহরে টহলদারি বাড়ানো হচ্ছে।’’ পুলিশ জানিয়েছে, মন্দিরে ক্লোজ়ড সার্কিট ক্যামেরা নেই। থাকলে তদন্তে সুবিধা হত। এসডিপিওর কথায়, ‘‘মন্দিরে নজরদারি ক্যামেরা রাখা উচিত ছিল।’’
কী ঘটেছিল শনিবার রাতে?
কৃষ্ণগঞ্জ আটপাড়া ষোলোআনার রাধালাল জিউ মন্দির কমিটির সভাপতি রবিলোচন দে জানাচ্ছেন, মন্দিরের ‘কেয়ারটেকার’ রঞ্জন কর প্রতিদিনের মতো এ দিন-ও ভোরবেলায় মন্দিরে আসেন। তিনি দেখেন, যে ঘরে ভোগ রান্না হয়, তার গ্রিলের দরজা খোলা। সিঁড়ি দিয়ে উপরে উঠে তিনি দেখতে পান, মূল মন্দিরের সামনে রাখা প্রণামীর বাক্সের তালা ভাঙা। রান্নাঘর থেকে গর্ভগৃহে ঢোকার দরজা জোর করে খোলার চেষ্টা করেছিল দুষ্কৃতীরা।
চুরির খবর পাওয়ার পরে সকলে মন্দির চত্বরে ছুটে আসেন। মন্দিরে রাধালাল জিউ ছাড়া, একাধিক রাধাকৃষ্ণের বিগ্রহ রয়েছে। এ ছাড়া, জোড়বাংলা মন্দিরের কৃষ্ণরায় জিউ-সহ আট জোড়া রাধাকৃষ্ণ বিগ্রহের নিত্য পুজা, অন্নভোগ এবং সন্ধ্যা আরতি হয়। দুষ্কৃতীরা মন্দিরের পিছনের দরজা ভাঙার চেষ্টা করেছিল। কিন্তু সফল হয়নি। তবে প্রণামীর বাক্সের তালা ভেঙে মোটা টাকা নিয়ে গিয়েছে বলে দাবি রবিলোচনবাবুর। তিনি বলেন, ‘‘রাসের সময় থেকে প্রণামীর বাক্স খোলা হয়নি। অনুমান করা যায়, ভাল অঙ্কের টাকা ছিল সেখানে।’’
এলাকাবাসীর বক্তব্য, একের পর এক মন্দিরে চুরির ঘটনা শহরের নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন তুলে দিয়েছে। রাধালাল জিউ মন্দিরের কোষাধ্যক্ষ হেমন্ত নাগ এবং স্থানীয় দুই বাসিন্দা অশোক ক্ষেত্রপাল ও অমিতাভ পাল জানান, সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় আরতি হওয়ার পরে, সাড়ে ৮টা নাগাদ মন্দিরের দরজা বন্ধ হয়ে যায়। মন্দিরটি জনবহুল এলাকায় হওয়ায় সেখানে অনেক রাত পর্যন্ত লোকজন থাকে। কিন্তু শনিবার প্রচণ্ড শীত এবং কুয়াশা থাকায় বিকেলের পরে এলাকা ফাঁকা হয়ে যায়।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, আগে কখনও রাধালাল জিউয়ের মন্দিরে চুরি হয়নি। মৃন্ময়ী মন্দিরে চুরির পরে এলাকায় দু’জন সশস্ত্র পুলিশকর্মী টহল দেন। তার পরেও কী করে চুরি হল, তা বুঝতে পারছেন না এলাকাবাসী। তদন্তে আসা বিষ্ণুপুর থানার এক আধিকারিক জানান, সব কিছু খতিয়ে দেখা হচ্ছে। তদন্তের স্বার্থে কিছু জিনিস বাজেয়াপ্ত হয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy