গড় পঞ্চকোট পাহাড়ে মহাকাশ পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রে। —ফাইল চিত্র।
পূর্ব তথা উত্তর-পূর্ব ভারতের প্রথম মহাকাশ পর্যবেক্ষণ তথা গবেষণা কেন্দ্র তৈরি হল পুরুলিয়ায়। ‘সত্যেন্দ্রনাথ বোস ন্যাশন্যাল সেন্টার ফর বেসিক সায়েন্সেস’-এর উদ্যোগে বুধবার পুরুলিয়ার গড়পঞ্চকোট পাহাড়ে সূচনা হয় কেন্দ্রটির। পুরুলিয়া সিধো-কানহো-বীরসা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে কেন্দ্রের আনুষ্ঠানিক সূচনায় ছিলেন কেন্দ্রীয় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি দফতরের অতিরিক্ত সচিব তথা অর্থ উপদেষ্টা বিশ্বজিৎ সহায়, কেন্দ্রের গভর্নিং বডির চেয়ারম্যান তথা আইআইটি মুম্বইয়ের পদার্থবিদ্যার অধ্যাপক বিএন জগতাপ, বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য পবিত্রকুমার চক্রবর্তী প্রমুখ। দেশের ষষ্ঠ এই পর্যবেক্ষণ তথা গবেষণাকেন্দ্রের নামকরণ হয়েছে বিজ্ঞানী সত্যেন্দ্রনাথ বসুর নামে।
সংস্থার অধিকর্তা তনুশ্রী সাহা দাশগুপ্ত জানান, পাহাড়ের উপরে ৪.৯ একর জমিতে কেন্দ্রটি তৈরির কাজ শুরু হয় ২০১২-তে। মাঝে প্রয়োজনীয় কিছু ছাড়পত্র পেতে সময় লেগেছিল। পাহাড়ে বর্তমানে একটি অস্থায়ী কেন্দ্র, ‘রোল অফ রুফ অবজ়ার্ভেটরি’ তৈরি হয়েছে। দুই পর্যায়ে ১২ ইঞ্চি ও ১৪ ইঞ্চি ব্যাসের দু’টি টেলিস্কোপ বসানো হয়েছে। তাঁর কথায়, “এই স্থানের ‘সিয়িং ভ্যালু’ ১.৩ আর্ক সেকেন্ড, যা দেশের অন্য কেন্দ্রগুলির সঙ্গেতুলনীয়। মহাকাশে কোনও বস্তুর পর্যবেক্ষণ স্পষ্টই করা যাবে। বিশেষত নভেম্বর থেকে এপ্রিল, আকাশ পর্যবেক্ষণের জন্য ভাল সময়।” পাহাড়ের উপরে একটি স্বয়ংক্রিয় আবহাওয়া কেন্দ্রও গড়া হয়েছে। সেখান থেকে তাপমাত্রা, বৃষ্টিপাত, বাতাসের গতি ইত্যাদি মাপা যাবে।
গোড়া থেকে প্রকল্পে যুক্ত সংস্থার বিজ্ঞানী রামকৃষ্ণ দাস জানান, কেন্দ্রটি গড়তে অযোধ্যা পাহাড় ও বাঁকুড়ার শুশুনিয়া পাহাড়েও নিরীক্ষণ চলেছিল। শেষমেশ গড়পঞ্চকোট পাহাড়কে বেছে নেওয়া হয়। তাঁর কথায়, “এ সব ক্ষেত্রে যে রোবোটিক টেলিস্কোপ ব্যবহার করা হয়। তার জন্য দূষণমূক্ত এলাকা দরকার। বাহ্যিক আলোর উপস্থিতিও সমস্যা করতে পারে। সে সব মাথায় রেখে পাহাড়ের উপরে প্রায় ৬০০ মিটার উচ্চতায় কেন্দ্রটি তৈরি হয়েছে।”
তিনি আরও জানান, লে বা লাদাখ, নৈনিতাল, মাউন্ট আবু, পুণের গিরাবনি পাহাড় ও তামিলনাড়ুর কাভালুরে মহাকাশ পর্যবেক্ষণ ও গবেষণা কেন্দ্র রয়েছে। পূর্ব বা উত্তর-পূর্ব ভারতে কোনও কেন্দ্র ছিল না। অবস্থানগত ভাবে এই কেন্দ্রটি গুরুত্বপূর্ণ। তাঁর কথায়, ‘‘দু’টি টেলিস্কোপ ছাড়াও পরবর্তী পর্যায়ে দেড় মিটার ব্যাসের আরও একটি টেলিস্কোপ বসানো হবে। গবেষণার জন্য ভবনও তৈরি হবে।” কেন্দ্রীয় সচিব বলেন, “গবেষণার পাশাপাশি পড়াশোনা ও অ্যাস্ট্রো-টুরিজ়মের কেন্দ্র হিসেবে পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রটি কাজ করবে।” মহাকাশ নিয়ে পড়াশোনাতেও নতুন প্রজন্মকে উৎসাহিত করবে, জানান বিএন জগতাপ। কেন্দ্রটি তৈরি করতে সিধো-কানহো-বীরসা বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে ‘মউ’ সই করেছে ‘সত্যেন্দ্রনাথ বোস ন্যাশন্যাল সেন্টার ফর বেসিক সায়েন্সেস’। তাঁরা প্রকল্পে সহযোগী হিসেবে কাজ করছেন, জানিয়ে উপাচার্য বলেন, “জ্যোতির্বিদ্যা ও জ্যোতির্পদার্থবিদ্যা মতো বিষয় নিয়ে পড়াশোনায় আগ্রহ বাড়াবে এই কেন্দ্র।
তথ্য সহায়তা: শুভ্রপ্রকাশ মণ্ডল
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy