খন্দপথ। মুরারই বাসস্ট্যান্ড থেকে স্টেশন যাওয়ার রাস্তা। ছবি: অনির্বাণ সেন।
ঘটনা ১: বাজার করতে এসে রাস্তার ধার দিয়ে যাওয়ার সময় আচমকা পাথর ভর্তি দশ চাকা লরির চাকা ফেটে ছিটকে আসা পাথর পায়ের ভিতরে ঢুকে যায়। অস্ত্রোপচার করে পাথর বের করতে হয় মুরারই থানার বাহাদুরপুর গ্রামের এক বাসিন্দা।
ঘটনা ২: মুরারই-ভাদিশ্বর রাস্তার ধারে সোনার দোকান। আচমকা রাস্তা থেকে পাথর ছিটকে দোকানের কাচ ভেঙে যায়। প্রথম ঘটনাটি ঘটে মুরারই পোস্টঅফিস মোড় সংলগ্ন এলাকায়। দ্বিতীয় ঘটনাটি ঘটে মুরারই রেলগেট সংলগ্ন এলাকায়। এলাকাবাসীর ক্ষোভ, সম্প্রতি ঘটে যাওয়া এই দু’টি ঘটনা কোনও বিচ্ছিন্ন নয়। বেহাল রাস্তার কারণে প্রায় প্রতিদিনই ঘটছে এমন দুর্ঘটনা ঘটছে।
এলাকাবাসী মুরারই নাগরিক সমিতির তরফ থেকে বছর দেড়েক আগে দু’টি রাস্তা সংস্কারের জন্য রাস্তা অবরোধ করেছিল। অভিযোগ, কিন্তু প্রশাসনিক আশ্বাস ছাড়া কোনও কাজ হয়নি। উল্টে সংস্কারের নামে পাথর গুঁড়ো, মোরাম দিয়ে জোড়া তালি দেওয়া হয়েছিল রাস্তায়। এর ফলে বৃষ্টি কাল তো বটেই, অন্য সময় রাস্তার ধুলো দূষণে দমবন্ধ অবস্থা হয় এলাকার বালিন্দাদের। ক্ষোভে বুধবার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত মুরারই নাগরিক সমিতি ফের দু’টি রাস্তা সংস্কারের দাবিতে পথ অবরোধ করেন। প্রায় ঘণ্টা তিনেক ধরে অবরোধ কর্মসূচি চলার পর এলাকায় আসেন মুরারই ১ ব্লকের বিডিও আবুল কালাম। তিনি আশ্বাস দেন, “এলাকাবাসীর দাবি মেনে খুব শীঘ্রই সংশ্লিষ্ট দফতরের আধিকারিকদের সঙ্গে আলোচনায় বসে দু’টি রাস্তা দ্রুত সংস্কার করার জন্য বলা হবে।”
মুরারই নাগরিক সমিতির ক্যাশিয়ার তথা মুরারই ১ পঞ্চায়েত সমিতির বিরোধী দলনেতা সিপিএমের উপল গঙ্গোপাধ্যায়, এলাকার বাসিন্দা মহম্মদ দীপু দে বলেন, “মুরারই রেলগেট থেকে পশ্চিম দিকে যাওয়া রাস্তাটি ঝাড়খণ্ড এবং পূর্বদিকের রাস্তা মুর্শিদাবাদ জেলার সঙ্গে সংযোগ রক্ষা করে। দু’টি গুরুত্বপূর্ণ রাস্তার বেহাল অবস্থার জন্য মানুষ জেরবার। অথচ দু’টি রাস্তার উপর দিয়ে মুরারই থেকে রাজগ্রাম, সিউড়ি, রামপুরহাট, হরিষপুর, পাইকর, রঘুনাথগঞ্জ এবং ঝাড়খণ্ডের সোনারপাড়া, মহেশপুর এই সমস্ত রুটগুলির উপর দিয়ে বাস যাতায়াত করে। রাজগ্রাম পাথর শিল্পাঞ্চলের পাথর বোঝাই ভারিট্রাক যাতায়াত করে। সেক্ষেত্রে দিনের পর দিন রাস্তা সংস্কারের অভাবে রাস্তায় যান চলাচল দূরের কথা রাস্তায় হাঁটাচলা করা দায় হয়ে উঠেছে।” মুরারই থেকে আমড়া পাড়া রাস্তার প্রায় পাঁচ কিমি অংশ দেখভাল করে জেলা পূর্তদফতর। ওই দফতরের রামপুরহাট মহকুমার সহকারী বাস্তুকার প্রিয়ঙ্কর মাজি বলেন, “রাস্তাটি সংস্কারের কাজ চলছে। মুরারইয়ের বাইরে প্রায় ৫০ শতাংশ সংস্কারের কাজ শেষ হয়েছে। মুরারইবাসী যেভাবে মুরারই শহরের ভিতর রাস্তা সংস্কার চাইছে সে ভাবে কাজটি অনুমোদন হয়নি। মুরারইবাসীর দাবি কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। যেমন নির্দেশ আসবে সেই মতো কাজ করব।” অন্য দিকে মুরারই থেকে মিত্রপুর রাস্তা দেখভাল করে পূর্ত দফতরের সড়ক বিভাগ। ওই বিভাগের রামপুরহাট মহকুমার সহকারী বাস্তুকার সুজয় রায় প্রতিহার বলেন, “রাস্তাটি পুরোমাত্রায় সংস্কারের জন্য প্রজেক্ট রিপোর্ট কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠানো হয়েছে। সেখান থেকে অনুমোদন হলে অবশ্যই পুরোমাত্রায় রাস্তাটি সংস্কারের কাজ করা হবে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy