Advertisement
৩০ অক্টোবর ২০২৪

ব্রিগেডে খাবার জোগাতে ঘরে ঘরে রান্না

এ দিন সাতসকালেই কলকাতা স্টেশনে এসে নামেন বুনিয়াদপুর, বালুরঘাট, হিলি, গঙ্গারামপুর, ফতেপুর, ইটাহার, কালিয়াগঞ্জ থেকে সিপিএমের কয়েকশো কর্মী-সমর্থক। সকলের গলায় সমাবেশে যোগ দেওয়ার ব্যাজ। সকালে কলকাতা স্টেশনে নেমেই ছিল জলখাবারে রুটি আর ফুলকপি ভাজার ব্যবস্থা।

প্রস্তুতি: সভার রঙে সাজছে মাঠ। শনিবার, ময়দানে। ছবি: স্বাতী চক্রবর্তী

প্রস্তুতি: সভার রঙে সাজছে মাঠ। শনিবার, ময়দানে। ছবি: স্বাতী চক্রবর্তী

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ০৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ ০২:২১
Share: Save:

কেউ এসে নেমেছেন কলকাতা স্টেশনে, কেউ বা হাওড়া, কেউ শিয়ালদহে। ট্রেন থেকে নেমেই অনেকে সরাসরি চলে গেলেন ব্রিগেডের ময়দানে। সেখানেই থাকার ব্যবস্থা হয়েছে কারও কারও। কেউ আবার গেলেন শহরের বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে থাকা ধর্মশালায়। সে সব জায়গায় রাতটা কাটিয়ে সকাল সকাল সমাবেশে যোগ দিতে যাবেন। আজ, রবিবার বামফ্রন্টের ব্রিগেড-সভার জন্য শনিবার থেকে এ ভাবেই কর্মী-সমর্থকেদের জমায়েত শুরু হয়ে গিয়েছে এ শহরে।

এ দিন সাতসকালেই কলকাতা স্টেশনে এসে নামেন বুনিয়াদপুর, বালুরঘাট, হিলি, গঙ্গারামপুর, ফতেপুর, ইটাহার, কালিয়াগঞ্জ থেকে সিপিএমের কয়েকশো কর্মী-সমর্থক। সকলের গলায় সমাবেশে যোগ দেওয়ার ব্যাজ। সকালে কলকাতা স্টেশনে নেমেই ছিল জলখাবারে রুটি আর ফুলকপি ভাজার ব্যবস্থা। শেষপাতে অমৃতি অথবা নলেন গুড়ের সন্দেশ কিংবা গুড়। তাঁরা জানালেন, দলীয় সমর্থকেরাই সব কিছু গুছিয়ে রেখেছিলেন। জলখাবার খেয়েই তাঁরা রওনা দিয়েছেন ব্রিগেডের উদ্দেশে। কলকাতা স্টেশন থেকে পাঁচ টাকা দিয়ে চক্ররেলের টিকিট কেটে সোজা ইডেন গার্ডেন্স। তার পরে হেঁটে ব্রিগেডে। শনিবার রাত্রিবাস সেখানেই। ট্রেনের টিকিটের ব্যবস্থা কি দল থেকেই করা হয়েছে? এর উত্তরে এক দলীয় কর্মী সমাবেশে যোগ দেওয়ার ব্যাজ দেখিয়ে বললেন, ‘‘ব্যাজটা দেখাতেই আর টিকিট চায়নি।’’

ব্রিগেডের ময়দানে পার্ক স্ট্রিটের দিকে লম্বা-চওড়া শামিয়ানা খাটানো। প্লাস্টিক, ত্রিপল পেতে শোয়ার ব্যবস্থা। দেখা গেল, শামিয়ানা খাটিয়ে পেল্লায় ডেকচিতে রাখা রান্না করা খিচুড়ি। ছোট ছোট প্যাকেটে রুটি, আলুর দমও আছে। দূরদূরান্ত থেকে সমাবেশে যোগ দিতে আসা কর্মী-সমর্থকেদের থাকা-খাওয়ার তদারকি করছেন সিপিএমের কলকাতা জেলা কমিটি ও বামফ্রন্টের স্বেচ্ছাসেবকেরা। সিপিএমের কলকাতা জেলার সচিব কল্লোল মজুমদার বলেন, ‘‘আমাদের বহু কর্মী-সমর্থক বাড়িতে রান্না করে রুটি আলুর দম ও মিষ্টি দিয়েছেন। এ ছাড়া ফুলকপি, মটরশুঁটি দিয়ে খিচুড়িও রান্না হয়েছে। দুপুর ও রাতে খিচুড়ি খাওয়ানো হবে সকলকে।’’

এক স্বেচ্ছাসেবক জানালেন, এ দিন ভোরে যাঁরা ব্রিগেডে আসবেন, তাঁদের দেখভালের জন্য শুক্রবার রাত থেকে প্রস্তুতি নিয়েছেন তাঁরা। কলকাতা পুরসভার জলের গাড়ি আসতে দেরি হলেও দলীয় কর্মীদের যাতে জল পেতে অসুবিধা না হয়, সেই জন্য অঢেল জলের বোতল রাখা হয়েছে। তিনি আরও জানান, রাতেও তৈরি করা খাবার দেওয়া হবে কর্মী-সমর্থকেদের। বালুরঘাটের কেশ দেবশর্মা, কালিয়াগঞ্জের আব্দুল হাকিম, মোক্তার মোল্লারা জানালেন, দুপুরে ফুলকপি, আলুর খিচুড়ি খেয়ে একটু আশপাশ ঘুরেও এসেছেন তাঁরা। নিজের শিশুপুত্রকে কোলে নিয়ে কেশদেবী বলেন, ‘‘ছেলেটাকেও একটু কলকাতা দেখিয়ে আনলাম। আবার কবে আসব তো জানি না!’’

কল্লোলবাবু জানালেন, বড়বাজারের সত্যনারয়ণ পার্কের কাছে একটি ধর্মশালায় ও খিদিরপুরের একটি ধর্মশালাতেও হাজার খানেক সমর্থক থাকবেন। অধিকাংশই উত্তরবঙ্গ থেকে এসেছেন। এ দিন সকালে ধর্মশালায় এসে জিনিসপত্র রেখেই শহর ঘুরতে বেরিয়ে পড়েছেন তাঁরাও। কেউ কেউ আবার কলকাতায় আত্মীয়দের বাড়িতে দেখা করতে গিয়েছেন। বড়বাজারের সত্যনারায়ণ পার্কের ধর্মশালায় ওঠা এক বাম সমর্থক বলেন, ‘‘এক বন্ধুর সঙ্গে দেখা করব বলে সভার আগের দিনই চলে এলাম। প্রায় বারো বছর পরে দেখা হবে আমাদের।’’

শনিবার দুপুরে ব্রিগেডে মূল মঞ্চ তৈরির কাজ চলেছে পুরো দমে। ব্রিগেড সাজানোর কাজ করছেন মহিলা সমর্থকেরাও। তাঁরা জানালেন, শনিবার রাতের মধ্যেই ব্রিগেড সাজানোর কাজ শেষ হয়ে যাবে। এ দিন দুপুর থেকে জনসভার মাইক পরীক্ষাও চলেছে পুরদমে। এক ইলেকট্রিশিয়ান জানান, সন্ধ্যার মধ্যে মাইক ও শব্দ পরীক্ষার কাজ হয়ে যাবে। কারণ, সন্ধ্যায় সিপিএমের নেতারা এসে ঘুরে দেখবেন ব্যবস্থাপনা।

অন্য বিষয়গুলি:

CPM CPM's Brigade Rall Preparation
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE