ঘোষণার পরই দিঘা ছাড়তে তৎপর পর্যটকরা নিজস্ব চিত্র।
সোমবার থেকে ঘুরে বেড়ানো যাবে না দিঘা সমুদ্র সৈকতে। এমনকি সমুদ্রের ঢেউয়ে পা ডোবানোও মানা পর্যটকদের। সরকার রাজ্যজুড়ে কঠোর বিধিনিষেধের ঘোষণা করার পরই সিদ্ধান্ত নিল পূর্ব মেদিনীপুর জেলা প্রশাসন। রাজ্যজুড়ে করোনার ক্রমবর্ধমান সংক্রমণে রাশ টানতে রবিবার বেশ কিছু কঠোর বিধিনিষেধের ঘোষণা করেছে সরকার। এর ফলে সোমবার থেকেই তালা ঝুলবে রাজ্যের পর্যটনকেন্দ্রগুলিতে। তাই বিধিনিষেধ ঘোষণার পর থেকে তত্পর পূর্ব মেদিনীপুর জেলা প্রশাসনও। রবিবার রাত থেকেই দিঘা সৈকতে মাইক নিয়ে প্রচারে নেমেছে স্থানীয় পুলিশ প্রশাসন।
ঘোষণার পর থেকে দিঘার পাশাপাশি মন্দারমণি, তাজপুর-সহ সৈকতনগরী ছেড়ে বাড়ি যাওয়ার জন্য হুড়োহুড়ি পড়ে যায় পর্যটকদের মধ্যে। যারা নিজস্ব গাড়ি এনেছেন, তাঁদের কিছুটা স্বস্তি থাকলেও চরম ভোগান্তির মুখে ট্রেন বা বাসে সফর করে দিঘায় বেড়াতে আসা যাত্রীরা। রাতেই অনেকে হোটেল ছেড়ে বাড়ি ফেরার জন্য স্টেশন ও বাসস্ট্যান্ডে জড়ো হতে শুরু করেন। তবে বাস বা ট্রেন না পেয়ে রীতিমতো হতাশ হয়ে পড়েন তারা।
রবিবার রাতে দিঘা বাসস্ট্যান্ডে অপেক্ষারত হাওড়ার পাঁচলার বাসিন্দা হিরাজ কয়াল বলেন, ‘‘কোভিড বিধিনিষেধ চালু হচ্ছে জেনে ১৮ জনের দল নিয়ে রাতেই বাড়ি ফিরতে চাইছি। কিন্তু বাস বা ট্রেন কিছুই নেই। অগত্যা বাসে দেড়শো টাকার টিকিট সাড়ে তিনশো টাকায় কিনে বাড়ি ফিরতে হচ্ছে। আমার মতো শয়ে শয়ে লোক রাতেই বাড়ি ফেরার জন্য বাসস্ট্যান্ড ও রেল স্টেশনে ভিড় করে দাঁড়িয়ে আছে।’’
দিঘার হোটেল ব্যবসায়ী স্বপন রাউলের কথায়, ‘‘গত দু’বছরের ডামাডোলে এমনিই দিঘার হোটেল ব্যবসার চূড়ান্ত ক্ষতি হয়েছে। কিন্তু এ বার জানুয়ারিতে টানা হোটেল বুকিং ছিল। কিন্তু রবিবার বিকেলের পর থেকে আচমকা হুহু করে বুকিং বাতিল হতে শুরু করেছে। সমস্ত হোটেল খালি করে পর্যটকরা বাড়ি ফিরছেন। এর পর সরকার যদি হোটেল ব্যবসায়ীদের জন্য প্যাকেজ ঘোষণা না করে, তবে হোটেল ব্যাবসা মুখ থুবড়ে পড়বে।’’
পূর্ব মেদিনীপুর জেলা প্রশাসন সূত্রে খবর, সোমবার সকাল থেকেই সমুদ্র সৈকত চেন ও দড়ি দিয়ে ঘিরে ফেলা হচ্ছে। সেই সঙ্গে রবিবার রাত থেকে শুরু হয়েছে প্রচারের কাজ। কেউ জোর করে জলে নামতে চাইলে বা প্রশাসনের নির্দেশ অমান্য করলে তাঁদের বিরুদ্ধে কড়া ব্যাবস্থা নেওয়া হবে বলেও প্রশাসন সূত্রে খবর। দিঘা থানা জানিয়েছে, রবিবারই ছয় পর্যটককে মাস্ক না পরার কারণে বিপর্যয় মোকাবিলা আইনে গ্রেফতার করা হয়েছে।
তবে পরিস্থিতির গুরুত্ব বুঝে রাতে প্রশাসনের তরফে পর্যটকদের ফেরার জন্য বেশ কিছু বাসের বন্দোবস্ত করা হয়েছে। সকালের ট্রেন ধরেও বাড়ি ফিরেছেন বহু পর্যটক। জেলা শাসক পূর্ণেন্দুকুমার মাজি বলেন, ‘‘হোটেলে থাকায় কোনও বিধিনিষেধ না থাকলেও সমুদ্র পাড়ে যাওয়া বা স্নানে নিষেধাজ্ঞা জারি হয়েছে। সেই সঙ্গে ধাপে ধাপে পর্যটকদের বাড়ি ফেরানোর চেষ্টা চলছে। অতিরিক্ত ভিড়ে গা না ভাসিয়ে সাধারণ মানুষদেরও কিছুটা সচেতন হওয়া দরকার।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy