জেলে যে ভাবে থাকার কথা, সে ভাবে থাকতে পারছেন না পার্থ, ক্ষোভপ্রকাশ প্রাক্তন মন্ত্রীর। ফাইল চিত্র।
আদালত চত্বরে দাঁড়িয়েই ক্ষোভের কথা জানালেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়। রীতিমতো অনুযোগের সুরে সংবাদমাধ্যমের সামনে রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী বলেন, “জেলে যে ভাবে থাকার কথা, থাকতে পারছি না।” তবে ঠিক কোন ভাবে তিনি জেলে রয়েছেন আর কোন ভাবে থাকার কথা ছিল, তা ব্যক্ত করেননি পার্থ।
সোমবার নিয়োগ দুর্নীতিকাণ্ডে আলিপুরের বিশেষ সিবিআই আদালতে হাজির করানো হয়েছিল পার্থকে। আদালত চত্বরেই পার্থকে লক্ষ্য করে ওঠে ‘চোর-চোর’ স্লোগান। কয়েক জন প্রবীণ চেঁচিয়ে বলেন, ‘‘চোর-চোর, পার্থ চোর। এই পার্থ চোর।’’ পরে স্লোগান দেওয়া এক ব্যক্তি জানিয়েছেন, তিনি কোনও রাজনৈতিক দলের সঙ্গে যুক্ত নন। তিনি এক জন সাধারণ মানুষ। কসবা বিধানসভা এলাকার বাসিন্দা। নিজে নিয়োগ দুর্নীতিকাণ্ডের ‘শিকার’ কি না জানতে চাওয়ায় ওই ব্যক্তি বলেন, ‘‘দেশের কী করে উন্নতি হবে? চোর কোনও দিন বলবে না, আমি সাধু নই। বলবে আমি ভাল।’’ তিনি এই প্রশ্নও করেন যে, নিয়োগ দুর্নীতিকাণ্ডের অত কোটি টাকা কোথায় গেল? এর পর পার্থকে গাড়িতে তোলা হয়। তখন অন্য এক ব্যক্তি ছুটে এসে বলেন, ‘‘এই পার্থ কত খেলি? কালীঘাটে কত পাঠালি?’’ পার্থ যদিও এ নিয়ে কোনও প্রতিক্রিয়া দেননি। গাড়িতে ওঠার সময় এক বার মাথা উঁচু করে স্লোগান দেওয়া লোকজনকে দেখে ভিতরে ঢুকে যান।
সোমবার সকালে অবশ্য খোশমেজাজেই ছিলেন পার্থ। আলিপুর আদালত চত্বরে গাড়ি থেকে নামার ঠিক মুখে একেবারে ফুরফুরে মেজাজে ধরা দেন তিনি। সাংবাদিকদের সব প্রশ্নের আগেই নিজেই কবিতার দু’লাইন শোনান প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী। যে দুই লাইন তাঁর গ্রেফতারি এবং পরবর্তী ঘটনাপ্রবাহের প্রেক্ষিতে বেশ অর্থবহ। পাশাপাশি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রশংসাও শোনা যায় তাঁর গলায়।
সোমবার আলিপুরে সিবিআইয়ে বিশেষ আদালত চত্বরে গাড়িতে বসেই পার্থ শোনান কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ‘সোনার তরী’ কাব্যগ্রন্থের অন্তর্গত কবিতার দুই লাইন। একগাল হেসে বলেন, ‘‘আমি শুধু একটা কবিতার লাইন বলব।’’ এর পরই বললেন, ‘‘মসী লেপি দিল তবু ছবি ঢাকিল না। অগ্নি দিল তবুও তো গলিল না সোনা।’’ মঙ্গলবার ২৫ বৈশাখ। বিশ্বকবির জন্মদিন। ঠিক তার আগের দিনই আদালতে হাজিরা দিতে এসে পার্থ-কণ্ঠে রবিঠাকুরের এই কবিতার লাইন আলাদা নজর কেড়েছে।
‘মসী’ শব্দের অর্থ কলঙ্ক বা কালি। নিয়োগ দুর্নীতিকাণ্ডে গত ২৩ জুলাই গ্রেফতার করা হয়েছিল পার্থকে। তার পর যত তদন্ত এগিয়েছে, ততই তাঁর বিরুদ্ধে একের পর এক অভিযোগ করেছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। বর্তমানে পার্থের ঠিকানা প্রেসিডেন্সি সংশোধনাগার। গ্রেফতারের পর মন্ত্রিত্ব খুইয়েছেন পার্থ। পাশাপাশি তৃণমূল থেকে তাঁকে সাসপেন্ড করা হয়েছে। সব কিছু হারিয়ে স্বাভাবিক ভাবেই ভেঙে পড়েছেন তিনি। অতীতে তাঁর গলায় আক্ষেপের সুরও শোনা গিয়েছে। তবে সোমবার একেবারে হাসিমুখে প্রকাশ্যে দেখা যায় পার্থকে। পাশাপাশি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের কবিতার লাইন শুনিয়ে জনমানসে বিশেষ বার্তাও দেন তিনি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy