সিপিমের উত্তর ২৪ পরগনা জেলা সম্মেলনে দলের রাজ্য সম্পাদক সূর্য্যকান্ত মিশ্র নিজস্ব চিত্র।
হল ভাড়া নেওয়া ছিল তিন দিনের জন্য। তিন দিন পেরিয়ে তেরাত্তির গড়িয়ে গেলেও তৈরি করা গেল না সিপিএমের উত্তর ২৪ পরগনা জেলা কমিটি! ভোটাভুটি এড়াতে পরে জেলা কমিটি গঠিত হবে বলে ঘোষণা করে সম্মেলন শেষ করে দিলেন নেতারা!
দল ক্ষমতায় থাকার সময়ে সিপিএমের রাজনীতিতে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ জেলা ছিল উত্তর ২৪ পরগনা। ক্ষমতা হারানোর পরে সংগঠনের হাল করুণ। কিন্তু তার পরেও সেই জেলায় দলের কমিটি গঠন ঘিরে এমন কাণ্ড দেখে অবাক দলেরই বড় অংশ! নৈহাটিতে সিপিএমের উত্তর ২৪ পরগনা জেলার ২৫তম সম্মেলনের শেষ দিন ছিল বুধবার। বিতর্ক এবং কমিটি গঠন ঘিরে টানাপড়েনের জেরে সম্মেলন গড়িয়েছে বেশি রাত পর্যন্ত। দলীয় সূত্রের খবর, রাতে ৬৫ জনের জেলা কমিটির প্যানেল পেশ করা হয়েছিল। কিন্তু সম্মেলন থেকে প্যানেলের বাইরে বেশ কিছু নাম জমা পড়ে। ভোটাভুটি এড়ানোর জন্য শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত চেষ্টা চালান দলীয় নেতৃত্ব। কিন্তু কমিটির জন্য নাম প্রত্যাহার করে নিতে রাজি হননি অন্তত ১৫-১৭ জন। তখন ঘোষণা করা হয়, জেলা সম্মেলন এখানেই সমাপ্ত। পরে এরিয়া কমিটি ভিত্তিতে নির্দিষ্ট দিনে জেলা কমিটির নাম সম্পর্কে মতামত জানিয়ে আসবেন প্রতিনিধিরা। সেই ভোট পরে আবার গুনে জেলা কমিটি চূড়ান্ত হবে। এমন আজব কাণ্ড যখন ঘটছে, তখন সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্র ও অন্য দুই পলিটবুরো সদস্য বিমান বসু এবং মহম্মদ সেলিম।
সিপিএম সূত্রের খবর, উত্তর ২৪ পরগনা জেলার সম্পাদক হওয়ার দৌড়ে আছেন অন্তত তিন জন নেতা। দলের মধ্যে শিবিরের লড়াই ঠেকানোর জন্য বিদায়ী জেলা সম্পাদক মৃণাল চক্রবর্তীকেই রেখে দিতে চেয়েছেন প্রাক্তন জেলা সম্পাদক গৌতম দেব ও তাঁর অনুগামীরা। কিন্তু সম্মেলন-কক্ষের হাওয়া ছিল অন্য রকম!
সদ্য হয়ে যাওয়া পুরভোটে গোটা ব্যারাকপুর শিল্পাঞ্চলে কোনও প্রতিরোধ গড়ে তুলতে পারেনি বামেরা। অধিকাংশ পুরসভাই বিরোধীশূন্য, হাতে-গোনা চারটি পুরসভায় নামমাত্র প্রার্থীরা জিততে পেরেছেন। শাসক দলের বিরুদ্ধে গা-জোয়ারি ও জালিয়াতির অভিযোগ থাকলেও সংগঠনকে কেন প্রতিরোধে দেখা যাচ্ছে না, সেই প্রশ্নও উঠেছে সম্মেলনে। তারই মধ্যে বাম শিবিরের ‘ঘরের লোক’ বলে পরিচিত শিল্পী, অসুস্থ শুভেন্দু মাইতির সমালোচনামূলক সুর শুনে জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য সুভাষ মুখোপাধ্যায়ের রুক্ষ মন্তব্য ঘিরে এক প্রস্ত বিতর্ক তৈরি হয়েছে। তবে দলীয় সূত্রের খবর, তাঁর মন্তব্য শিল্পীকে আঘাত দিয়েছে বলে সুভাষবাবু সম্মেলনের মঞ্চেই দুঃখপ্রকাশ করেছেন।
কলকাতার আর এক লাগোয়া জেলা দক্ষিণ ২৪ পরগনায় অবশ্য সম্পাদক বদল হয়নি। ফের জেলা সম্পাদক হয়েছেন শমীক লাহিড়ীই। সম্মেলনে ঘোষিত ৫৯ জনের জেলা কমিটিতে নতুন অন্তর্ভুক্তি ১১ জন। সাগর, কাকদ্বীপের মতো এলাকা থেকে কিছু নতুন মুখকে জেলা কমিটিতে জায়গা দেওয়া হয়েছে। ছাত্র ও যুব সংগঠন থেকে আসা তরুণ মুখও জায়গা পেয়েছে। আমন্ত্রিত করা হয়েছে কান্তি গঙ্গোপাধ্যায়, কমল গঙ্গোপাধ্যায়, মোহিত ভট্টাচার্য, তাপস অধিকারী ও সমর নাইয়াকে। সিপিএমে সচরাচর কাউকে পরপর দু’বার আমন্ত্রিত সদস্য করা হয় না। প্রাক্তন মন্ত্রী ও সুন্দরবন এলাকার ডাকাবুকো নেতা কান্তিবাবুর ক্ষেত্রে ‘ব্যতিক্রম’ হয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy