শিবমন্দিরের বাসিন্দা, পেশায় শিক্ষক সুমন্ত দে প্রায় নানা কাজে দক্ষিণবঙ্গে যান। ট্রেনের সময়ের অন্তত তিন ঘন্টা আগে বাড়ি থেকে বার হয়ে তাঁকে পরিবার নিয়ে শিলিগুড়ি যেতে হয়। বাগডোগরা স্টেশন হয়ে কোনও ট্রেন থাকলে যাতায়াত অনেকটাই সহজ হতো বলে মনে করেন সুমন্তবাবু। তেমনিই, বাগডোগরার বাসিন্দা অভিষেক দে বেসরকারি সংস্থার কর্মী। মাঝেমধ্যেই সংস্থার কাজে তাঁকে দিল্লি বা কলকাতায় যেতে হয়। বাগডোগরা বা নকশালবাড়ি স্টেশন থেকে কোনও ট্রেন থাকলে টাকা এবং সময় দুটোই বাঁচানো যেত বলে মনে করেন অভিষেকবাবু। শিলিগুড়ি মহকুমার ওই বিস্তীর্ণ এলাকার বাসিন্দাদের সমস্যার কথা মাথায় রেখে কলকাতা ও দিল্লিগামী দুটি ট্রেন শিলিগুড়ি মহকুমার বিভিন্ন স্টেশন হয়ে চালানোর অনুরোধ করেছে উত্তরবঙ্গের ব্যবসায়ীদের অন্যতম সংগঠন ফোসিন।
পুজোর আগে শিলিগুড়ি এসেছিলেন রেল বোর্ডের অন্যতম সদস্য (ট্রাফিক) ডিপি পান্ডে। তাঁর কাছে শিলিগুড়ি জংশন থেকে দিনভর হলদিবাড়ি অবধি ডেমু পরিষেবা চালুর দাবিও জানানো হয়েছে। ফোসিনের সদস্যরা জানিয়েছেন, দিল্লি বা কলকাতার কোনও ট্রেন ধরার জন্য মাটিগাড়া, ফাঁসিদেওয়া, শিবমন্দির, বাগডোগরা, নকশালবাড়ির ব্যবসায়ী ও বাসিন্দাদের শিলিগুড়ি আসতে হয়। কলকাতাগামী কাঞ্চনকন্যা এক্সপ্রেস এবং দিল্লিগামী মহানন্দা লিঙ্ক এক্সপ্রেসকে এনজেপির বদলে জংশন হয়ে বাগডোগরা, নকশালবাড়ি লাইন দিয়ে আলুয়াবাড়ি স্টেশন অবধি নিয়ে গেলে বাসিন্দারা উপকৃত হবে।
বর্তমানে ওই ট্রেন দুটি প্রতিদিন জংশন থেকে ছেড়ে এনজেপি হয়ে আলুয়াবাড়ি স্টেশনে যায়। ফোসিনের সাধারণ সম্পাদক বিশ্বজিত্ দাস বলেন, “রেল বোর্ডের সদস্য খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন।” এই প্রসঙ্গে উত্তর পূর্ব সীমান্ত রেলের কাটিহার ডিভিশনের ডিআরএম অরুণ কুমার শর্মা বলেন, “এই ধরণের সমস্ত সিদ্ধান্ত ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ নিয়ে থাকেন। সেখান থেকে আমাদের কিছু জানানো হলে সঙ্গে সঙ্গে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
দূরপাল্লার ট্রেনের মতই শিলিগুড়ি থেকে হলদিবাড়ি ডেমু চালানোর দাবিও তুলেছে ফোসিন। বর্তমানে ওই রুটে প্যাসেঞ্জার ট্রেন চলাচল করে। এনজেপি থেকে টাউন স্টেশন, জংশন হয়ে মাটিগাড়া, বাগডোগরা, নকশালবাড়ি, ঠাকুরগঞ্জ, চটহাট হয়ে আলুয়াবাড়ি অবধি দিনে দুই জোড়া ডেমু পরিষেবা রয়েছে। ওই লাইনের বৈদ্যুতিকরণ করে দিন লোকাল ট্রেনের মত দিনভর কমপক্ষে ৪-৬ জোড়া ডেমু চালানোর প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে।
জলপাইগুড়ির রানিনগরের বাসিন্দা খগেশ্বর রায় প্রতিদিন একটি বেসরকারি সংস্থার চাকরির জন্য শিলিগুড়ি আসেন। তিনি বলেন, “হাতে গোনা প্যাসেঞ্জার ট্রেনে প্রতিদিন যাতায়াত করতে হয়। সকালে সময় সূচি ঠিক থাকলেও বিকালের পরে ভোগান্তি পোহাতে হয়। একাধিক ডেমু থাকলে সমস্যা অনেকটাই মিটবে।” জলপাইগুড়ি শিলিগুড়ি রেলওয়ে ডেলি প্যাসেঞ্জার অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক গোপাল পোদ্দার বলেন, “প্যাসেঞ্জার ট্রেনও কম থাকায় প্রচন্ড ভিড় হয়। তার উপরে এনজেপিতে ইঞ্জিন বদলানোর জন্য অনেক সময় লাগে। সব্জি ব্যবসায়ীরাও কামরা দখল করে নেন। সেখানে দিনভর ডেমু চললে এবং তাতে একটি করে ব্যবসায়ীদের মালপত্রের কোচ জুড়লে সমস্যা অনেকটাই মিটে যাবে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy