পরিবহণ দফতর থেকে গাড়ি ভাড়ার তালিকা সংশোধন না করেই নিউ জলপাইগুড়ি স্টেশনে ‘প্রিপেড ট্যাক্সি’ বুথ চালু করতে গিয়ে বিপাকে পড়েছে শিলিগুড়ি পুলিশ। গাড়ির মালিক এবং চালিকেরা জানিয়ে দেন, ভাড়ার তালিকা সংশোধন করা না হলে তাঁদের পক্ষে প্রিপেড বুথের মাধ্যমে গাড়ি চালানো সম্ভব নয়। আজ, মঙ্গলবার এনজেপি স্টেশনের পার্কিং এলাকায় পুলিশের ওই নতুন তৈরি বুথের উদ্বোধনের কথা। বর্তমান পরিস্থিতিতে তা স্থগিত করতে বাধ্য হয়েছে পুলিশ। শিলিগুড়ির পুলিশ কমিশনার জগমোহন বলেছেন, “কিছু পরিকাঠামো এবং নিয়মের ব্যাপারে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি বলে এখনই বুথটি উদ্বোধন হচ্ছে না।”
গাড়ির মালিক সংগঠন সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০০৮-এর পর এনজেপির প্রিপেড বুথের ভাড়ার তালিকা সংশোধন করা হয়নি। সম্প্রতি তৃণমূল কংগ্রেস অনুমোদিত জাতীয়তাবাদী ট্যাক্সি ও প্রাইভেট কার ড্রাইর্ভাস ইউনিয়নের তরফেও পুলিশকে ভাড়া সংশোধন করার দাবি জানানো হয়। গাড়ির চালকদের সংগঠনের যুগ্ম সম্পাদক নৃপেন দাস বলেন, “২০০৮ সালের ভাড়ার তালিকা ধরে বুথ থেকে গাড়ি চালালে লোকসান হয়। নতুন ভাড়ার তালিকা ঘোষণা করতে বলেছি। না হলে বুথে কোনও গাড়িই যাবে না।” এনজেপি স্টেশন থেকে রোজ প্রায় ৭০০ গাড়ি চালাচল করে। বুথের আওতায় থাকবে ৫০০ গাড়ি।
গত বছর বাগডোগরা বিমানবন্দরে প্রিপেড বুথ চালু করতে গিয়ে বিপাকে পড়েছিল শিলিগুড়ি কমিশনারেটের পুলিশ। কারণ, এয়ারপোর্ট অথরিটি অব ইন্ডিয়ার তরফে একটি বেসরকারি সংস্থাকে বরাত দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু, পুলিশ ওই বুথটি নিজেরাই প্রিপেড বলে চালানোর চেষ্টা করে। তখন বরাতপ্রাপ্ত সংস্থা হাইকোর্টে যায়। ফলে, তৎকালীন পুলিশ কমিশনার কারলিয়াপ্পন জয়রামনকে কলকাতা হাইকোর্ট গিয়ে হাজিরা দিতে হয়। এর পরেই ফের পুলিশ প্রিপেড বুথ চালু করার দিন ঠিক করার আগে সতর্ক হয়নি কেন তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।
পুলিশ সূত্রের খবর, এনজেপি স্টেশনের প্রিপেইড বুথটি রাজ্য পর্যটন উন্নয়ন নিগমের। টেন্ডারের মাধ্যমে তা বিভিন্ন সংস্থা দীর্ঘদিন ধরে পেয়ে আসছে। গত বছর মাল্লাগুড়ির মৈনাক অতিথি নিবাসে বুথের টেন্ডার নিয়ে বড় গোলমাল হয়। দুটি গোষ্ঠীর মধ্যে গোলমাল চরমে ওঠে। পুলিশকে হস্তক্ষেপ করতে হয়। তৃণমূলের দুটি গোষ্ঠীর মধ্যে গোলমাল হয়েছিল অভিযোগ ওঠে। পর্যটন দফতর বুথটি পুলিশের হাতে তুলে দেয়। ইতিমধ্যে রাজ্য সরকারের নতুন নির্দেশিকা জারি হয়ে যায়। ভাড়া বাড়ানোর দাবি ওঠে। পরিবহণ দফতর দার্জিলিঙের ভাড়া কিছুটা বাড়িয়ে দেয়। তবে বাকি গন্তব্যের ভাড়া বাড়েনি।
এই অবস্থায় গাড়ি চালকেরা বুথের মাধ্যমে না গিয়ে খেয়ালখুশি মত ভাড়া নিচ্ছিলেন বলে বারবার অভিযোগ উঠছিল। বিশেষ করে পর্যটন মরশুমে লাগাম ছাড়া ভাড়া নেওয়ার হচ্ছিল বলে অভিযোগ। পর্যটক এবং যাত্রীদের হেনস্থা করার একের পর এক অভিযোগ সামনে আসে। গত সপ্তাহেই ভাড়া ও বসা নিয়ে বচসায় দিল্লির এক বাঙালি পর্যটক পরিবারকে মারধরের অভিযোগে গ্রেফতার হয় গাড়ির চালক। তড়িঘড়ি স্টেশনের সামনে পার্কিং এলাকায় নতুন করে কার লেন, বুথ তৈরির জন্য রেলের থেকে জায়গা নেয় পুলিশ। একইভাবে জায়গা পাওয়ার কথা পর্যটন দফতরের। দফতরের যুগ্ম অধিকর্তা (উত্তর) সুনীল অগ্রবাল বলেন, “আমাদের ১-এ প্ল্যাটফর্মে পর্যটক সহায়তা কেন্দ্র রয়েছে। সেটিও সামনে আনা হচ্ছে। তবে এখনও রেল জায়গা দেয়নি।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy