সেজে উঠছে রামসাইয়ের রাইনো ক্যাম্প। নিজস্ব চিত্র।
পুজোর সাজ বন বাংলোতেও।
বর্ষায় তিন মাস বন্ধের পরে আগামী ১৬ সেপ্টেম্বর খুলে যাবে ডুয়ার্সের সমস্ত বন বাংলো। পর্যটকদের জন্য কার্যত ওই দিন থেকেই ডুয়ার্সের জঙ্গলে শারদোৎসবের সূচনা হবে। তাই প্রস্তুতি এখন চলছে জোরকদমে। পানঝোরা থেকে রামসাই রাইনো ক্যাম্প প্রতিটি বনবাংলোই ঢেলে সাজা হচ্ছে। নতুন রঙয়ের পোঁচ পড়ছে কাঠের ঘরবাড়ির গায়ে। সবুজ জঙ্গলের কথা মাথায় রেখে এ বার খয়েরি, সবুজ ও সাদা রং বেছে নেওয়া হয়েছে সাজের জন্য। পর্যটক টানতেই এই সাজ। পর্যটকদের ঘোরার জন্য নতুন নতুন জায়গার খোঁজ চলছে। সব কিছু ঠিক থাকলে এবার পুজোর ছুটিতে উত্তরবঙ্গে বেড়াতে এসে নতুন করে জঙ্গলকে খুঁজে পাওয়ার সুযোগ পাবেন ভ্রমণ পিপাসুরা।
যেমন, গরুমারা জঙ্গল লাগোয়া রামসাই এলাকার রাইনো ক্যাম্পের চালে খয়েরি ও সবুজের রং পড়েছে। দেওয়াল সাদা। আরও কিছু কারুকাজ রয়েছে। পাল্টে ফেলা হচ্ছে পর্দা থেকে অনেক কিছুই। বন দফতর বনকর্তারা জানান, সাজসজ্জার কাজ শেষ হয়ে গেলে ডুয়ার্সের প্রতিটি বন বাংলোকে নতুন মনে হবে। শুধু বাংলো রং করা নয়, আশপাশের পরিবেশও ঢেলে সাজানোর কাজ চলছে। লনের ঘাস ছেঁটে দেওয়া হচ্ছে। ইটের নকশায় গড়া হয়েছে আঁকাবাঁকা রাস্তা। জলপাইগুড়ি বন বিভাগের (বন্যপ্রাণ) ডিএফও সুমিতা ঘটক বলেন, “প্রতিটি বন বাংলো এবার পর্যটকদের নতুন মনে হবে। বেড়াতে এসে প্রত্যেকে যেন ডুয়ার্সকে নতুন করে খুঁজে পায় সেই চেষ্টা আমরা করছি।”
বন দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, ইতিমধ্যে বাংলো বুকিং-এ পর্যটকদের ভাল সাড়া মিলেছে। এবার ভাল ভিড় হবে। থাকার জায়গা নিয়ে যে ভাবে হুড়হুড়ি শুরু হয়েছে। শেষ পর্যন্ত কি দাঁড়াবে বনকর্তারা বলতে পারছেন না। পর্যটন শিল্পের সঙ্গে জড়িত বিভিন্ন বেসরকারি সংস্থার কর্মকর্তাদেরও আশঙ্কা, এবার ডুয়ার্সে বেড়াতে এসে অনেকে পছন্দের জায়গা পাবেন না অন লাইন বুকিং-এর সুবিধার জন্য। তাঁদের হিসেবে অন্য বছরের তুলনায় এবার ৩৫ শতাংশ বেশি পর্যটকের ভিড় হবে। বেসরকারি ট্যুরিজম সংস্থার কর্ণধার রাজ বসু বলেন, “এ বার বিপুল সাড়া মিলছে। অনলাইন বুকিং-এর সুবিধার জন্য পুজোয় ডুয়ার্সের জঙ্গল ভিড়ে ঠাসা থাকবে। প্রত্যেকে বন বাংলতে থাকার জায়গা পাবেন কিনা সন্দেহ আছে।”
জঙ্গলে থাকার জায়গা না পেয়ে পর্যটকদের কেউ যেন ডুয়ার্স থেকে অন্য কোথাও চলে না যান সে জন্য বিকল্প জায়গার ব্যবস্থা করার দাবি তুলেছেন ট্যুর অপারেটারদের একাংশ। রাজবাবু জানান, বিকল্প ব্যবস্থা বলতে বনবস্তিগুলিতে ‘হোম স্টে’-র ব্যবস্থা করার কথা বলা হয়েছে। সেটা হলে বনবস্তি এলাকার বাসিন্দারা বিকল্প রোজগারের পথ খুঁজে পাবে। এ ছাড়াও পর্যটকদের পরিষেবা দেওয়ার জন্য নতুন প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত অনেক ছেলেমেয়ে দরকার। সেটা হলেও কর্মসংস্থানের সুযোগ বাড়বে।
বন কর্তারা অবশ্য জানান, পানঝোরা, মূর্তি, ধূপঝোরা, গাছবাড়ি, রাইনো ক্যাম্প, কালিপুর ইকো ভিলেজের মতো বন বিভাগের থাকার জায়গা ছাড়াও প্রচুর বেসরকারি রিসর্ট রয়েছে। এছাড়াও বনবস্তিবাসীদের হোম স্টে চালু করার জন্য পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy