শিলিগুড়ি পুর নির্বাচনের প্রস্তুতিতে ময়দানে নেমে পড়ল বিজেপি। রবিবার শিলিগুড়ি পুরসভার ১৫ নম্বর ওয়ার্ডে রাজা রামমোহন রায় রোডে এবং ৪০ নম্বর ওয়ার্ডে ঘুগনিমোড়ে বিজেপি’র অস্থায়ী কার্যালয় চালু হল। উদ্বোধন করেন বিজেপি’র জেলা সভাপতি রথীন্দ্র বসু। পুর নির্বাচনের লক্ষ্যে এই অস্থায়ী কার্যালয় থেকে প্রচার চালানো হবে। এ দিন থেকেই কার্যালয়গুলির মাধ্যমে জনসংযোগ বাড়ানোর কাজ শুরু হল বলে জানানো হয়। ওয়ার্ডে কোনও উত্সাহী বাসিন্দা বিজেপি’তে যোগ দিতে চাইলে তিনি এই কার্যালয়ে যোগাযোগ করতে পারবেন। আজ, সোমবার অবিলম্বে পুর নির্বাচনের দাবিতে পুর কমিশনারের কাছে স্মারকলিপি দেবেন বিজেপি নেতৃত্ব।
বিজেপি’র জেলা সভাপতি বলেন, “পুর নির্বাচনে সমস্ত ওয়ার্ডেই দলীয় কার্যালয় দ্রুত চালু করা হবে। আজ, দুটি ওয়ার্ড ছাড়াও ৩৮ নম্বর ওয়ার্ডে ইতিমধ্যেই দুটি কার্যালয় চালু করা হয়েছে। সমস্ত ওয়ার্ডে প্রার্থী দেওয়া হবে। ১ অক্টোবর পুরসভার মেয়াদ ফুরচ্ছে। তার আগে পুর নির্বাচন সম্পন্ন করতে আমরা দাবি জানাচ্ছি।”
এ দিন যে দুটি ওয়ার্ডে বিজেপি’র দলীয় কার্যালয় খোলা হয়েছে, সম্প্রতি লোকসভা নির্বাচনে ৪০ নম্বর ওয়ার্ডে বিজেপি প্রাপ্ত ভোটের নিরিখে অন্যান্য রাজনৈতিক দলের চেয়ে এগিয়ে। ১৫ এবং ৩৮ নম্বর ওয়ার্ডে তৃণমূল এগিয়ে থাকলেও দ্বিতীয়স্থানে রয়েছে তারা। বস্তুত, পুরসভার ৪৭ টি ওয়ার্ডের মধ্যে ২১টিতেই এগিয়ে বিজেপি। এই ফলাফলের পরেই পুর নির্বাচনে সমস্ত ওয়ার্ডে প্রার্থী দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তারা। ইতিমধ্যেই বেশ কিছু ওয়ার্ডে কাদের প্রার্থী করা হবে তা নিয়ে আলোচনা চলছে। বিজেপি’র উত্থানে সিঁদুরে মেঘ দেখছে কংগ্রেস, তৃণমূল-সহ বামফ্রন্টের নেতা-কর্মীদের অনেকেই। যদিও ওই সমস্ত দলের জেলা নেতৃত্বের দাবি লোকসভা ভোটে বিজেপি’র এই ফল পুরভোটে প্রতিফলিত হবে না। পুরসভার ৪৭ টি আসনের মধ্যে বামফ্রন্টের দখলে রয়েছে ১৮টি। কংগ্রেসের ১৪টি এবং তৃণমূলের ১৫টি। জোটের পুরবোর্ড ছেড়ে তৃণমূল বেরিয়ে আসতেই সংখ্যালঘু হয়ে পড়ে কংগ্রেস। তাতে সুষ্ঠুভাবে পুরবোর্ড চালানোর ক্ষেত্রে নানা সমস্যা তৈরি হতে থাকে। সমস্যার জেরে গত ২০ মে মেয়র এবং তাঁর পারিষদরা ইস্তফা দেন। তাতে পুরসভায় অচলাবস্থা তৈরি হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে দ্রুত নির্বাচনের দাবি করেছে কংগ্রেস, সিপিএম এবং বিজিপি’র মতো দলগুলি। তৃণমূলের কাউন্সিলর নান্টু পাল বলেন, “লোকসভা নির্বাচনের মানুষ কেন্দ্রে স্থায়ী সরকারের দিকে লক্ষ্য রেখে ভোট দিয়েছেন। পুর নির্বাচন তা থেকে আলাদা। শহরের উন্নয়নের স্বার্থে তাতে মানুষ আমাদের পাশেই থাকবেন।”
সিপিএমের দার্জিলিং জেলার কাযর্করী সভাপতি জীবেশ সরকারের দাবি, বিজেপি সাম্প্রদায়িক দল। কর্পোরেট দুনিয়ার দ্বারা চালিত। লোকসভা ভোটে পুর এলাকায় তারা যে সমর্থন পেয়েছে পুরভোটে তা হবে না। একই দাবি কংগ্রেসেরও। প্রাক্তন মেয়র গঙ্গোত্রী দত্ত বলেন, “পুর ভোট এবং লোকসভা নির্বাচন দুটি আলাদা বিষয়। কার্যালয় খোলা বা নির্বাচন নিয়ে প্রতিটি দলই তাদের কর্মসূচি পালন করতেই পারেন। তবে শিলিগুড়ি পুরভোটে বিজেপি লোকসভা ভোটের ফল ধরে রাখতে পারবে না।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy