শিলিগুড়ির কোর্ট মোড়ে আইএনটিটিইউসির অটো চালকদের অবরোধ।—নিজস্ব চিত্র।
তৃণমূল ও তাদের সহযোগী সংগঠনের অটো চালকদের দাপটে দিনভর শিলিগুড়ির বিস্তীর্ণ এলাকার বাসিন্দাদের দুর্ভোগে পড়তে হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। সোমবার সকাল থেকে টোটো চলাচলের অভিযোগে শিলিগুড়ির আশিঘর-কোর্টমোড় রুটের অটো চালকদের একাংশ তৃণমূলের পতাকা নিয়ে অটো চলাচল বন্ধ করে দেন। সকাল ১১ টা নাগাদ কোর্ট মোড়ে রাস্তায় অটো দাঁড় করিয়ে অবরোধ শুরু করেন তাঁরা। ঘন্টাখানেক অবরোধ চলার পর পুলিশ গিয়ে অবরোধ উঠিয়ে দেয়।
ব্যস্ত রাস্তায় তৈরি হওয়া যানজট ছাড়তে বহু সময় চলে যায়। বিকেলে চারটা নাগাদ তৃণমূলের পক্ষ থেকে মিছিলের আয়োজন করা হয় শিলিগুড়ির বাঘাযতীন পার্ক থেকে। হিলকার্ট রোড, সেবক রোড, বিধান রোড হয়ে ফের বাঘাযতীন পার্কে মিছিল শেষ হয়। ব্যস্ত সময়ে মিছিলে শহর স্তব্ধ হয়ে পড়ে।
এদিন সকাল ১১ টা নাগাদ হঠাত্ করেই কোর্ট মোড় অবরোধ করে দেন অটো চালকরা। তাদের দাবি, টোটোগাড়ি বেআইনি। তা অবিলম্বে বন্ধ করতে হবে। টোটোগাড়ি মানুষের দরজায় পৌঁছে যাচ্ছে। ফলে তাঁদের ব্যবসা মার খাচ্ছে। এদিন তৃণমূল কংগ্রেস ও আইএনটিটিইউসির পতাকা নিয়েই অবরোধে সামিল হন অটোচালকেরা। এঁদের মধ্যে অনেকেই নিজেদের আইএনটিটিইউসির সদস্য বলে দাবি করেন। যদিও আইএনটিটিইউসি সমর্থিত কোর্ট মোড়ের সিটি অটো অপারেটর্স ওয়ালফেয়ার ইউনিয়নের সম্পাদক নির্মল সরকার ওই চালকদের উপরেই দায় চাপান। তিনি বলেন, “ওই চালকেরা আমাদের সংগঠনের সদস্য নয়। এঁরা ইউনিয়নে থেকেও কারও কথা শোনেন না। সকাল থেকে মালিকদের পয়সা ফাঁকি দিতে নতুন নতুন পন্থা বের করে।” এই অবরোধের দায় নিতে চাননি দার্জিলিং জেলা আইএনটিটিইউসিও। জেলা কমিটির সদস্য প্রসূন দাশগুপ্ত বলেন, “আমাদের অনুমতি না নিয়েই ওঁরা অবরোধ করেছে। তাঁদের বিরুদ্ধে সংগঠনগতভাবে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” অবরোধের কারণে সাধারণ মানুষের যে ভোগান্তি হয়েছে তার জন্য দুঃখপ্রকাশ করেন নির্মলবাবু ও প্রসূনবাবু। শিলিগুড়ি পুলিশের ডিসি ট্রাফিক শ্যাম সিংহ বলেন, “অবরোধের খবর পেয়ে তা উঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। বিশেষ কোনও সমস্যা হয়নি।”
এদিন বিকেলে তৃণমূলের জেলা সভাপতি তথা উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী গৌতম দেবের নেতৃত্বে মিছিল বের হতেই শহরের রাস্তার একদিক বন্ধ হয় যায়। কোর্ট মোড়, হাসপাতাল মোড়, হিলকার্ট রোডের হাসমিচক, সেবক মোড়, সেবক রোডের পানিট্যাঙ্কি মোড়, বিধান রোডে যানজট তীব্র আকার নেয়। রাস্তার একপাশ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় ক্ষোভে ফেটে পড়েন পথচারীরা। ট্রাফিক পুলিশকে দেখা যায় যানজট নিয়ন্ত্রণ করতে গিয়ে হিমশিম খেতে। এক পথচারী উর্ণাভ আচার্য অভিযোগ করেন, “মিছিলের কারণে হিলকার্ট রোড থেকে দেশবন্ধু পাড়ার এইটুকু রাস্তা পেরোতে দীর্ঘ সময় লাগল।” গেটবাজার থেকে মাটিগাড়ার একটি নার্সিংহোমে মাকে নিয়ে যাচ্ছিলেন বিকাশ দাস। গাড়িতে বসে তিনি বলেন, “সাধারণ মানুষকে যদি ভুগতে হয়, তা হলে কার জন্য মিছিল?”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy