জলপাইগুড়িতে প্রচারে বিমান বসু। বুধবার ছবিটি তুলেছেন সন্দীপ পাল।
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে ‘মিথ্যাচারিতার’ অভিযোগ আনলেন বামফ্রন্ট চেয়ারম্যান বিমান বসু। বুধবার জলপাইগুড়ি সদর ব্লকের বাহাদুর গ্রাম পঞ্চায়েতের চরকডাঙ্গি হাট সংলগ্ন এলাকায় নির্বাচনী কর্মী সভায় কংগ্রেস ও বিজেপির কড়া সমালোচনা করার সঙ্গেই তৃণমূল নেত্রীর তিনি ওই অভিযোগ করেন। বেহাল রাস্তা নিয়ে কংগ্রেস সহ সভাপতির রাহুল গাঁধীর বক্তব্যের পাল্টা জবাব হিসেবে তৃণমূল নেত্রীর বক্তব্যের প্রসঙ্গ টেনেই এ দিন এই অভিযোগ করেন বিমানবাবু।
বিমানবাবুর অভিযোগ, “রাজ্যে বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্প নিয়ে শুধু মিথ্যা প্রচার চলছে। যা বলা হচ্ছে সেই কাজ হয়নি। মিথ্যা তথ্য সামনে রেখে মানুষকে বিভ্রান্ত করা হচ্ছে।” তাঁর কথায়, “তৃণমূল নেত্রী শুধু মিথ্যা কথা বলেন। তিনি যা বলেন ঠিক তার উল্টো কাজ করেন।” তৃণমূলের ‘মিথ্যাচারিতার নমুনা’ হিসেবে বেহাল রাস্তা নিয়ে কংগ্রেস সহ সভাপতির রাহুল গাঁধীর বক্তব্যকে ঘিরে তৃণমূল শিবিরের সমালোচনার প্রসঙ্গ টেনে আনেন বিমানবাবু। মঙ্গলবার নাগরাকাটার জুরান্তি চা বাগানে যাওয়ার সময় রাস্তার বেহাল দশা দেখে কটাক্ষ করেন রাহুল। ওই দিনই নকশালবাড়িতে কর্মিসভায় মুখ্যমন্ত্রী নাম না করে রাহুলের বক্তব্যের কড়া সমালোচনা করে অভিযোগ করেন, জাতীয় সড়ক মেরামত করছে না কেন্দ্র। সেই প্রসঙ্গ টেনে বিমানবাবু এ দিন বলেন, “তৃণমূল নেত্রী ব্যঙ্গ করে বলছেন রাস্তাটি কি রাজ্যের? কত বড় মিথ্যাচারিতা। রাজ্য সড়ককে জাতীয় সড়ক হিসেবে তুলে ধরার চেষ্টা করছেন। টেলিভিশনে খবরে দেখলাম মঙ্গলবার কংগ্রেস নেতা যে রাস্তা দিয়ে গেলেন পুরোটাই রাজ্য সড়ক। কত বড় মিথ্যা ভাবা যায়?”
দলনেত্রীর বিরুদ্ধে তোলা অভিযোগের কড়া সমালোচনা করেছেন জেলা তৃণমূল পর্যবেক্ষক সৌরভ চক্রবর্তী। তিনি বলেন, “আপাদমস্তক দুর্নীতিগ্রস্থ বামফ্রন্ট নেতাদের এখন কিছুই বলার নেই। আমাদের নেত্রী দেখিয়ে দিচ্ছেন কাজ কেমন করে করতে হয়। রাজ্যে উন্নয়নের গতি দেখে ওঁরা আতঙ্কিত। তাই প্রলাপ বকছেন।” তাঁর পাল্টা অভিযোগ, “রাজ্যবাসী ওঁদের কথা বিশ্বাস করছে না। কারণ প্রত্যেকে জানে বামফ্রন্ট ৬৫ হাজার কোটি টাকা দুর্নীতিতে জড়িত।”
বামফ্রন্ট চেয়ারম্যান এ দিন দাবি করেন তিনি ব্যক্তিগত আক্রমণ পছন্দ করেন না। তৃণমূল নেত্রীর আনা সিপিএম-বিজেপি যোগসাজশের অভিযোগের প্রসঙ্গের পাল্টা অভিযোগ তুলে তিনি বলেন, “তৃণমূল বিজেপির সঙ্গে বোঝাপড়া করে লড়ছে। তাই কারণে লড়াই শুরু করার আগে থেকেই ওরা বলছে রাজ্যে ৪২টি আসনের ৪২টিই ওঁরা পাবেন।” অতীতে তৃণমূলের সঙ্গে কংগ্রেস ও বিজেপির জোটের প্রসঙ্গ তুলে তাঁর কটাক্ষ, “কখনও কংগ্রেসের সঙ্গে আবার কখনও বিজেপির সঙ্গে আঁতাত। কখনও তালাক। অনেক ঢলাঢলির পরে বিচ্ছেদ। এ সব বেশিদিন চলে না।” রাজ্যে শিক্ষা ব্যবস্থাকেও এ দিন বিঁধেছেন বিমানবাবু। তিনি প্রশ্ন তোলেন, “ক্লাস এইট পর্যন্ত পড়েছে এমন একজনকে কলেজ পরিচালন কমিটির সভাপতি করা হয়েছে। কে করেছেন? তৃণমূল নেত্রী ভাবতে পারেন কলেজের চৌকাঠ পার হল না এমন ব্যক্তি কলেজ চালাবে?”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy