মারধরে এক জন মহিলা পুলিশকর্মী-সহ তিন পুলিশকর্মী আহত হন। —প্রতীকী ছবি।
কোচবিহারের মেখলিগঞ্জে একটি পঞ্চায়েতের বিজেপি প্রধানের স্বামী ও দেওরকে গ্রেফতার করা ঘিরে তুমুল উত্তেজনা ছড়াল মঙ্গলবার রাত থেকে। অভিযোগ, প্রধান এবং তাঁর শ্বশুর-শাশুড়িকে মারধর করে পুলিশ। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন প্রধানের পরিবারের তিন সদস্য। পুলিশের দাবি, পুরনো মামলায় মঙ্গলবার রাতে এক অভিযুক্তকে গ্রেফতার করতে গেলে প্রধানের পরিবারের লোকেরা বাধা দেন। মারধরে এক জন মহিলা পুলিশকর্মী-সহ তিন পুলিশকর্মী আহত হন। মহকুমা পুলিশ আধিকারিক (মেখলিগঞ্জ) আশিস পি সুব্বা বলেন, ‘‘পুরনো একটি মামলায় অভিযুক্ত এক জনের খোঁজে গিয়েছিল পুলিশ।’’
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে খবর, ঘটনার সূত্রপাত ৩ নভেম্বর। ওই গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় মহিলা প্রধান অণিমা রায়ের বাপেরবাড়িতে মদের অবৈধ ব্যবসা চলছে বলে অভিযোগ মিলেছিল। সেখানে অভিযানে যায় কুচলিবাড়ি থানার পুলিশ।
অভিযোগ, সে সময়েও পুলিশকে বাধা দেওয়া হয়। ওই ঘটনায় পাঁচ জনের নামে অভিযোগ দায়ের করা হয়। সেই পরিবারের লোকের পাল্টা দাবি, জোর করে বাড়িতে ঢুকেছিল পুলিশ। কোনও মদ উদ্ধার না করেই বাড়ির লোকেদের নামে মিথ্যা মামলা করা হয়। ঘটনায় নাম জড়ায় প্রধানের স্বামী, দেওর-সহ আরও তিন জনের। প্রধানের স্বামী দয়াল রায় ও দেওর সুবোধ রায়কে মঙ্গলবার রাতে গ্রেফতার করতে যায় পুলিশ। অভিযোগ, তা নিয়েই দু’পক্ষে ধস্তাধস্তি শুরু হয়। ছ’জন আহত হন। ধৃত দু’জনকে বুধবার মেখলিগঞ্জ মহকুমা আদালতে হাজির করানো হলে ১৪ দিনের জেল হেফাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেওয়া হয়।
বুধবার আদালতে হাজির করানোর সময় দয়াল সাংবাদিকদের সামনে অভিযোগ করেন, আদালতে পেশ করার আগে তাঁর বদলে নিয়ম ভেঙে অন্য এক জনের মেডিক্যাল পরীক্ষা করিয়েছে পুলিশ। পুলিশ জানিয়েছে, সমস্ত রিপোর্ট আদালতে পেশ করা হয়েছে। মেখলিগঞ্জ মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি প্রধান অণিমার অভিযোগ, ‘‘তৃণমূলে যোগদানের জন্য দীর্ঘদিন ধরে আমার উপরে চাপ দিচ্ছেন কুচলিবাড়ি থানার ওসি ভাস্কর রায়। গতকাল রাতে ঘরে ঢুকে আমাকে মারধর করা হয়।’’ একই অভিযোগ জানিয়েছেন প্রধানের শ্বশুর দীপেন রায়। তবে এ নিয়ে কিছু বলতে চাননি কুচলিবাড়ি থানার ওসি।
এ দিন সাংবাদিক বৈঠকে বিজেপির জলপাইগুড়ি জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক দধিরাম রায় বলেন, ‘‘পুলিশ তৃণমূলের দলদাস হয়ে কাজ করছে। মিথ্যা মামলা দিয়ে কর্মীদের ফাঁসানোর চেষ্টা করছে। এর প্রতিবাদে, রাজ্য জুড়ে আন্দোলন গড়ে তোলা হবে। পুলিশ হেফাজতে প্রধানের স্বামীকে মারধরের অভিযোগ নিয়ে আমরা মানবাধিকার কমিশনের দারস্থ হব।’’ মহকুমা পুলিশ আধিকারিক (মেখলিগঞ্জ) বলেন, ‘‘যে কেউ, যে কোনও অভিযোগ করতেই পারেন। লিখিত অভিযোগ এলে বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হবে।’’
মেখলিগঞ্জের তৃমমূল বিধায়ক পরেশচন্দ্র অধিকারী বলেন, ‘‘বিজেপি সব জায়গায় রাজনীতি খোঁজে। আমি যত দূর শুনেছি, মদ উদ্ধার নিয়ে পুলিশের সঙ্গে ঝামেলা হয়েছে। এর বাইরে আর কিছু আমার জানা নেই।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy