হাই কোর্ট। — ফাইল চিত্র।
হাই কোর্টে স্বস্তি পেলেন তৃণমূল থেকে সাসপেন্ড হওয়া জলপাইগুড়ির মালবাজারের পুরপ্রধান স্বপন সাহা। স্বপন সাহার বিরুদ্ধে আবাস প্রকল্পে দুর্নীতির অভিযোগে কেন্দ্রীয় এজেন্সি দিয়ে তদন্তের আর্জি জানিয়ে কলকাতা হাই কোর্টে জনস্বার্থ মামলা হয়েছিল। সে মামলার শুনানি হয়েছে বৃহস্পতিবার। স্বপনের তরফের আইনজীবীর দাবি, কলকাতা হাই কোর্টের প্রধান বিচারপতি টি এস শিবগণনমের নেতৃত্বে ডিভিশন বেঞ্চ কেন্দ্রীয় এজেন্সিকে দিয়ে মামলার আবেদন নাকচ করে দিয়েছে। রাজ্যের তরফে এ দিন আদালতে জানানো হয়, রাজ্যের পুর ও নগরোন্নয়ন দফতর মালবাজার পুরসভায় বিশেষ অডিট করাচ্ছে। প্রধান বিচারপতি নির্দেশ দিয়েছেন, সে অডিট-প্রক্রিয়া তিন মাসের মধ্যে শেষ করতে হবে। যদিও মামলাকারী বিজেপি নেতার দাবি, আদালত মামলা খারিজ না করে রাজ্যের সংশ্লিষ্ট দফতরকে অভিযোগের তদন্ত করতে বলেছে। আদালতের রায়ের পরেই স্বপন সাহা দলে ফিরতে চেয়ে আবেদন করেছেন। এ দিন মালবাজারে তাঁর অনুগামীরা বাজি পুড়িয়ে উল্লাস করেছেন।
তৃণমূল নেতা তথা পুরপ্রধান স্বপন সাহার বিরুদ্ধে একাধিক দুর্নীতির অভিযোগ তুলে সম্প্রতি হাই কোর্টে মামলা হয়েছিল। পুজোর আগে তৃণমূল থেকে স্বপন সাহাকে সাসপেন্ড করা হয়। এর পরে স্বপন সাহা পুরপ্রধানের পদ থেকে ইস্তফা দিয়েও তা প্রত্যাহার করে নেন। তিনি ছুটিতে যাচ্ছেন বলে লিখিত ভাবে পুর কর্তৃপক্ষকে জানিয়ে দেন। স্বপন সাহার আইনজীবী অমৃতান মণ্ডল বলেন, “সিবিআই তদন্ত চেয়ে জনস্বার্থে মামলা হয়েছিল। বিভিন্ন নথি জাল করে আবেদন করা হয়েছিল। সে জনস্বার্থ মামলা খারিজ করতে আবেদন করেছিলাম। শুনানিতে আমাদের আবেদন এবং অন্য পক্ষের নথি দেখেছে আদালত। সিবিআই তদন্ত-সহ ওদের সব আবেদনই হাই কোর্ট খারিজ করে দিয়েছে। রাজ্য যে অডিট করছে, সেটা ঠিকঠাক হয়েছে কি না দেখতে বলেছে হাই কোর্ট। মামলা খারিজ হয়ে গিয়েছে এ দিন।”
স্বপন সাহার বিরুদ্ধে মামলা করেছিলেন বিজেপির মালবাজার টাউন মণ্ডল সহ-সভাপতি তথা আইনজীবী সুমন শিকদার। এ দিন তিনি পাল্টা দাবি করে বলেন, “হাইকোর্ট মামলা খারিজ করেনি। আগামী তিন মাসের মধ্যে সংশ্লিষ্ট দফতরকে আমাদের অভিযোগগুলি খতিয়ে দেখে তদন্ত করতে বলেছে। সে তদন্তের পরবর্তীতে আমরা সিদ্ধান্ত নেব, আগামীতে কি করণীয়।”
অন্য দিকে, এ দিন স্বপন সাহা বলেন, “আমার বিরুদ্ধে চক্রান্ত করা হয়েছিল এটা আজ পরিষ্কার হল। ১২০ কোটি টাকার দুর্নীতির অভিযোগ আনা হয়েছিল। আমি এবং আমার পরিবার বিগত দেড় মাস মানসিক যন্ত্রণার মধ্যে ছিলাম। মালবাজারবাসীকে আমার পাশে দাঁড়ানোর জন্য ধন্যবাদ জানাই। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং দলের সর্ব ভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে চিঠি দিয়ে জানাব আমাকে দলে ফিরিয়ে নেওয়ার জন্য।” দ্রুত মালবাজার ফিরবেন বলে স্বপন সাহা দাবি করেছেন। তৃণমূলের অন্দরে স্বপন সাহার ‘বিরোধী গোষ্ঠীর’ বলে পরিচিত তৃণমূলের পুর প্রতিনিধি অজয় লোহার বলেন, “এই মামলা স্বপন সাহার একার বিরুদ্ধে ছিল না। এটা মাল পুরসভার বিরুদ্ধে ছিল। কাজেই মাল পুরসভা কালিমালিপ্ত হয়েছিল। যদি সত্যি মামলা খারিজ হয়ে গিয়ে থাকে, তবে সেটা মালবাজার পুরসভার জন্য ভাল।”
জেলা তৃণমূলের তরফে কেউ কোনও মন্তব্য করেননি। জেলার এক শীর্ষ নেতা বলেন, “এ বিষয়ে যা বলার, রাজ্যের নির্দেশের পরেই বলব।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy