বাড়িতে আগুন লেগে দম্পতি, তাঁদের কিশোরী মেয়ের মৃত্যুর ঘটনার পর ৪৮ ঘণ্টা কেটে গেলেও, ঘটনার তদন্ত এগোয়নি বলে বাসিন্দাদের অভিযোগ। শুক্রবার শিলিগুড়ির চম্পাসারিতে ওই দম্পতির বাড়িতে গ্যাস সিলিন্ডার থেকেই আগুন লাগে বলে দমকলের রিপোটের্র্ উল্লেখ করা হয়। সিলিন্ডার থেকে গ্যাস লিক করার ফলেই আগুন লাগে বলে মৃত্যুর আগে ছেলেকে জানিয়েছিলেন উত্তম সাহা। পুলিশের তরফেও অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা রুজু করা হয়েছে। এলাকার বাসিন্দাদের অভিযোগ, রবিবার রাত পর্যন্ত যে সিলিন্ডার থেকে আগুন লেগেছে সেটি বাজেয়াপ্ত হয়নি। ডিস্ট্রিবিউটারের সঙ্গে পুলিশ কথা বলেনি বলে অভিযোগ। সে কারণে আগুন লাগার কারণ এবং গ্যাস সিলিন্ডারটি যথাযথ অবস্থায় সরবরাহ হয়েছিল কিনা তা নিয়েও ধন্দ রয়েই গিয়েছে বলে অভিযোগ।
উল্টে ঘটনার তদন্ত কে করবে সেই প্রশ্নে পুলিশ ও দমকল কর্তৃপক্ষ পরস্পর বিরোধী বক্তব্য জানিয়েছে। পুলিশের দাবি, দমকল তদন্ত করে রিপোর্ট না দিলে তাদের পক্ষে তদন্ত এগিয়ে নিয়ে যাওয়া সম্ভব নয়। দমকলের আধিকারিকরা পাল্টা দাবি করেছেন, কেউ দুর্ঘটনায় মারা গেলে তা তদন্ত করা পুলিশের দায়িত্ব। এই চাপানউতোরে বিরক্ত বাসিন্দা থেকে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারা। দ্রুত ঘটনার তদন্ত না হলে প্রতিবাদ ও আন্দোলনের হুমকিও দিয়েছেন তাঁরা।
এডিসি কে সাভারি রাজকুমার বলেন, “পুলিশ আগুন লাগার কারণ জানার বিশেষজ্ঞ নয়। এটা দমকলের কাজ। ওরাই তদন্ত করে রিপোর্ট দেন। তারপরে তেমন কিছু থাকলে পুলিশ পদক্ষেপ করে। দমকল থেকে এখনও কিছু জানায়নি।” গ্যাস সিলিন্ডারগুলি যথাযথ ভাবে বাড়িতে পৌঁছে দেওয়া হয় কিনা তা দেখার জন্য পুলিশের কাছে যথেষ্ট সংখ্যক বাহিনী নেই। খবর পেলে পুলিশ অভিযান চালায় বলেও এডিসি দাবি করেছেন। এই ঘটনায় ক্ষুব্ধ সিপিএমের কার্যকরী জেলা সম্পাদক জীবেশ সরকার। তিনি বলেন, “আইনি ব্যবস্থা বলে কিছু নেই। পুলিশ শাসক দলের হয়ে কাজ করছে। এটা দুঃখজনক। দ্রুত তদন্ত না হলে প্রতিবাদ আন্দালন শুরু হবে।” প্রদেশ কংগ্রেসের অন্যতম সাধারণ সম্পাদক সুবীন ভৌমিক বলেন, “রাজ্যে কর্মসংস্কৃতির যে বড়াই করা হয়, তার নমুনা পাওয়া যাচ্ছে। আগুনে তিন জনের মৃত্যু হল, তার তদন্ত নিয়ে এমন গাফিলতি বরদাস্ত করা যা না। সাধারণ মানুষের নিরাপত্তা দিতে পুলিশকেই ভূমিকা নিতে হবে।” সুষ্ঠু তদন্ত না হলে প্রশাসনের উপর মহলে যাওয়ারও হুমকি দেন তিনি। তৃণমূলের জেলার অন্যতম সাধারণ সম্পাদক কৃষ্ণ পাল বলেন, “তদন্ত করা প্রশাসন, পুলিশ এবং দমকলের কাজ। আর এই ব্যাপারে আমাদের দাবি প্রকৃত ঘটনা সামনে আসুক। তদন্তে যদি কোনও গাফিলতি দেখা যায়, তবে আমরা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি জানাব।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy