আলোচনা: সভায় উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী। নিজস্ব চিত্র
একই বিষয়ে একই আধিকারিকদের নিয়ে পরপর দু’দিন আলাদা বৈঠক করলেন দুই মন্ত্রী। বিষয়, উত্তরবঙ্গ উৎসবের শুরুর দিন বদলে যাওয়া। মঙ্গলবার মৈনাক টুরিস্ট লজে বৈঠক করে পর্যটনমন্ত্রী গৌতম দেব ওই ঘোষণা করেন। বুধবার উত্তরকন্যায় বৈঠক করে প্রায় একই ঘোষণা করেন উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী রবীন্দ্রনাথ ঘোষ। তা নিয়ে পুলিশ-প্রশাসনের অফিসার-কর্মীদের একাংশের মধ্যে একযোগে বিস্ময় ও বিরক্তি দেখা দিয়েছে। দুই মন্ত্রীর মধ্যে সমন্বয় না থাকার প্রভাব কর্মীদের মধ্যে কতটা পড়বে, তা নিয়ে তৃণমূলের অন্দরেও আলোচনা শুরু হয়েছে।
যদিও পর্যটনমন্ত্রী বৈঠকের পরেই দাবি করেন, তিনি মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশেই বৈঠক করেছেন। সে কথা জানিয়েছেন উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রীকেও বলে দাবি তাঁর। তিনি বলেছেন, ‘‘দিনবদলের বিষয়টি তাড়াতাড়ি অফিসারদের জানিয়ে দিতেই বৈঠক করেছি।’’ এদিন উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী জানান, তিনিও মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে বৈঠক ডেকেছেন। তবে অফিসার-কর্মীদের কয়েক জন মনে করেন, বৈঠক এক দিনে হলেই মিটে যেত। একই বিষয় দু’দিন দু’বার করে বৈঠক হলে কাজের সময়ও নষ্ট হয়, মনে করছেন অনেকেই।
সরকারি সূত্রের খবর, ২৫ জানুয়ারি উত্তরবঙ্গ উৎসব শুরু হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু, মুখ্যমন্ত্রী ২১ জানুয়ারি শিলিগুড়িতে সেই উৎসবের উদ্বোধন করে চলে যাবেন দার্জিলিঙে। সে কথা জানার পরেই তড়িঘড়ি বৈঠক করে প্রস্তুতি নেওয়ার নির্দেশ দেন পর্যটনমন্ত্রী। সে দিন কোচবিহারে ছিলেন উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী। তিনি দফতরের অফিসারদের মাধ্যমে বুধবার বৈঠক ডাকেন। এবং এ দিনের সেই বৈঠকে মূলত আগের দিন মৈনাকে হাজির অফিসারেরাই ছিলেন।
নানা বিষয়ে এই দুই মন্ত্রীর মতানৈক্য নতুন কিছু নয় বলে তৃণমূলের অনেকে মনে করছেন। গৌতমের আমলে তৈরি হওয়া কয়েকটি রাস্তার হাল নিয়ে একসময়ে উষ্মা প্রকাশ করেছিলেন বর্তমান উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী রবীন্দ্রনাথ। ঠিকাদারকে ভর্ৎসনাও করেছিলেন তিনি। তা নিয়ে দুই মন্ত্রীর মধ্যে চাপানউতোর চলতে থাকে। এক সময়ে মুখ্যমন্ত্রীর গোচরে গেলে তিনি বাগডোগরা বিমানবন্দরেই দু’জনকে ডেকে মিলেমিশে থাকার নির্দেশ দেন।
এর পরে শিলিগুড়িতে গৌতমের বাড়িতে চা খেতে যান রবীন্দ্রনাথ। তার পরে সম্প্রতি উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন দফতরের কাজকর্ম নিয়ে নতুন করে দু’জনের ঠোকাঠুকি শুরু হয়। উত্তরবঙ্গ পর্ষদের প্রধান গৌতম দফতরের কাজকর্মের খুঁত ধরলে রবীন্দ্রনাথ বিরক্তি প্রকাশ করেন। এই পরিস্থিতিতে রাসমেলা শুরু হয়। সেখানে গৌতম যাননি। উল্টে জলাইগুড়িতে সার্কি বেঞ্চের মঞ্চে গিয়ে গৌতম দিল্লি যাওয়ার কথা বলেন। পরদিনই সেখানে গিয়ে রবীন্দ্রনাথ জানান, এমন কোনও ব্যাপার নেই।
এ বারে উত্তরবঙ্গ উৎসব নিয়েও ঠোকাঠুকি লাগল। বিব্রত দলীয় কর্মীদের একাংশের কথায়, মুখ্যমন্ত্রী উৎসব উদ্বোধনের পাশাপাশি যদি দু’জনকে ডেকে ফের বোঝান, তা হলে খুব ভাল হয়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy