পড়ুয়াদের প্রশিক্ষণ চলছে। মঙ্গলবার তোলা নিজস্ব চিত্র।
স্কুল পড়ুয়াদের বিপর্যয় মোকাবিলার প্রশিক্ষণ দেওয়ার কাজ শুরু করেছে কোচবিহার জেলা প্রশাসন। চলতি মাসে জেলার ২০০টি হাইস্কুল পড়ুয়াদের ওই প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে। প্রতিটি স্কুলের ১৫ জন পড়ুয়াকে নিয়ে একটি দল গড়ে একসঙ্গে সাতটি স্কুলের পড়ুয়াদের দিনভর ওই প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে। অসামরিক প্রতিরক্ষা দফতর ও বিপর্যয় মোকাবিলা দফতরের কর্মীরা ওই প্রশিক্ষণ দিচ্ছেন। বিপর্যয় মোকাবিলা দফতরের কোচবিহার জেলা আধিকারিক মহেশ বর্মন বলেন, “ভূমিকম্প, বন্যা, ঝড়ের মত বিভিন্ন দুর্যোগের ক্ষেত্রে আত্মরক্ষার কৌশলের পাশাপাশি ক্ষয়ক্ষতি এড়ানোর ব্যাপারে সচেতনতা বাড়ানোর ভাবনা থেকেই ওই প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে। আগামী জুন মাসের মধ্যে সমস্ত স্কুলে ওই প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে।”
কোচবিহার সদর, তুফানগঞ্জ, মেখলিগঞ্জের বিস্তীর্ণ এলাকা বন্যা প্রবণ। ফি বছর তুফানগঞ্জের বালাভূত থেকে মেখলিগঞ্জের তিস্তা পয়েস্তির মত বিভিন্ন এলাকার বাসিন্দারা বন্যায় দুর্ভোগে পড়েন। সম্প্রতি পরপর ভূমিকম্পের ঘটনার জেরেও উদ্বেগ বেড়েছে। অগ্নিকাণ্ড, সর্পাঘাতের মত বিপদে কী করণীয় তা নিয়েও পড়ুয়াদের অনেকের সঠিক ধারণা নেই। সে কারণেই ছাত্র-ছাত্রীদের বিপর্যয় মোকাবিলার ওই প্রশিক্ষণ দেওয়ার ব্যাপারে বাড়তি জোর দেওয়া হয়েছে বলে প্রশাসনের দাবি।
কী শেখান হচ্ছে ওই প্রশিক্ষণে?
বিপর্যয় মোকাবিলা দফতর সূত্রের খবর, আচমকা ভূমিকম্প অনুভব করা মাত্র খোলা জায়গায় বেরিয়ে আসা কেন দরকার তা হাতে কলমে বোঝানো হচ্ছে। ঘরের ভিতর থাকলে কীভাবে তুলনামূলক আত্মরক্ষায় নিরাপদ আশ্রয় বেছে নিতে হবে দেখান হচ্ছে তাও। বন্যার সম্ভাবনা বুঝে ত্রাণ শিবিরে পৌঁছনোর জন্য কী কী আগাম সতর্কতা নেওয়া দরকার তা মহড়ার মাধ্যমে তুলে ধরছেন প্রশিক্ষণের সঙ্গে যুক্ত কর্মীরা। একই ভাবে অগ্নিকাণ্ড নিয়ে সতর্কতায় আগাম ব্যবস্থা নেওয়ার পরিকাঠামো রাখা নিয়েও সচেতনতা বাড়ানো হচ্ছে। বিপর্যয়ের পর উদ্ধার কাজ কীভাবে করা দরকার, তিনতলা ভবন থেকে মই, দড়ি ব্যবহার করে কীভাবে সঙ্কটাপন্নদের নামাতে হবে তাও হাতে কলমে দেখানো হয়। সাপ ছোবল দিলে কীভাবে বাঁধন দিতে হবে তা নিয়েও ওয়াকিবহাল করা হয়। প্রতিটি স্কুলের ১৫ জন করে পড়ুয়াদের ওই প্রশিক্ষণ সম্পূর্ণ হলে নিজেদের স্কুলের বাকী ছাত্র-ছাত্রীদের ওই প্রশিক্ষণের মহড়া দেখিয়ে সচেতন করবে তারা। সিতাই হাইস্কুলের প্রধানশিক্ষক অনিমেষ ভট্ট বলেন, “আমাদের স্কুলের মাঠে মোট ৫টি স্কুলের ছাত্রদের নিয়ে ওই প্রশিক্ষণ হয়েছে। আমি নিজে পুরো সময়টা সেখানে ছিলাম। নিয়মিত অভ্যাস করানো হলে বিপর্যয়ের সময় ওই অভিজ্ঞতা অনেকটাই কাজে লাগবে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy