বিজ্ঞাপনে দেখা যাচ্ছে দার্জিলিঙের টয় ট্রেন। ছবি ইউটিউবের সৌজন্যে।
বাহ! বাহ! বাহ!
স্কুটির বিজ্ঞাপনে দেখা যাচ্ছে দার্জিলিঙের টয় ট্রেন। সপ্তাহখানেক ধরে দিনে অন্তত কয়েক বার টিভির পর্দায় ভেসে উঠছে বিজ্ঞাপনটি।
দেখা যাচ্ছে, জঙ্গল পথে কয়লার ইঞ্জিনে ধোঁয়া ছেড়ে চলছে টয় ট্রেন, পাশে চলছে স্কুটি। ট্রেনের জানলা দিয়ে স্কুটি দেখে যাত্রীরা গান শুরু করেছেন। ট্রেনের কামরায় দার্জিলিং হিমালয়ান রেলওয়ে ‘ডিএইচআর’ লেখাও দেখা যাচ্ছে।
এক কালে টয় ট্রেনে বসে জানলা দিয়ে উঁকিঝুকি দিতে দেখা গিয়েছিল শর্মিলা ঠাকুরকে। সত্তর দশকের সেই ‘আরাধনা’ থেকে শুরু করে হালফিল ‘বরফি’ পর্যন্ত বলিউডি ছবিতে টয় ট্রেন ফিরে এসেছে বারবার। নতুন চেহারার টয় ট্রেন এ বার হাজির হল টিভি বিজ্ঞাপনেও।
সাম্প্রতিক ধসের কারণে অনেক রুটেই বর্তমানে টয় ট্রেন চলাচল বন্ধ রয়েছে। রেল সূত্রের খবর, পুজোর আগে দার্জিলিং থেকে শিলিগুড়ি পর্যন্ত ১৫টি রুটে টয় ট্রেন চালু হচ্ছে। বেশ কিছুদিন বন্ধ থাকার পরে গত শুক্রবার শিলিগুড়ি থেকে রংটং পর্যন্ত জঙ্গল পথে টয় ট্রেনের সাফারিও শুরু হয়েছে। ঘটনাচক্রে, বিজ্ঞাপনে এই যাত্রাপথই দেখা যাচ্ছে।
আগামী মাসের মাঝামাঝি থেকে পাহাড়ে পর্যটকদের জন্য টয়ট্রেনের ‘জয় রাইড’ও চালু হচ্ছে। সব মিলিয়ে পুজোর মরসুমে টয় ট্রেনের ‘সুদিন’ ফেরার আশায় রেল কর্তৃপক্ষ। তাঁদের আশা, পুজোর মরসুমে টয় ট্রেনে যাত্রী সংখ্যা বাড়বে। ট্যুর অপারটের থেকেও তেমন ইঙ্গিত মিলেছে।
শিলিগুড়ি লাগোয়া সুকনায় টয় ট্রেন ভাড়া করে বিজ্ঞাপনের শুটিং হয়েছে বলে রেল সূত্রের খবর। ট্যুর অপারেটরদের একাংশের মতে, দেশ জুড়ে নানা টিভি চ্যানেল ২০ সেকেন্ডের টিভি কমার্শিয়াল টয় ট্রেনেরও বড় বিজ্ঞাপন। উত্তর পূর্ব সীমান্ত রেলওয়ের কাটিহার বিভাগের ডিআরএম উমাশঙ্কর সিংহ যাদব বলেন, ‘‘মালিগাঁওয়ের সদর দফতর থেকে অনুমতি নিয়ে একটি বিজ্ঞাপন সংস্থা টয় ট্রেনে শুটিং করেছে। সেই বিজ্ঞাপন দেখে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকেই কোন সময়ে, কোন পথে টয় ট্রেন চলে তার খোঁজখবর নিচ্ছে। আপাতত সমতলে জঙ্গল সাফারি শুরু হয়েছে। ধস সরিয়ে পাহাড়ে ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক হতে সপ্তাহ দুয়েক সময় লাগবে।’’
ডিএইচআর জানিয়েছে, শিলিগুড়ি থেকে দার্জিলিং পর্যন্ত প্রতি দিন এক জোড়া ট্রেন চলার কথা। এ ছাড়াও দার্জিলিং-কার্শিয়াং পথে সাধারণ ও পর্যটকদের জন্য ‘জয় রাইডে’ বিশেষ টয় ট্রেন চলাচল করে। কয়লা এবং ডিজেল দুই ইঞ্জিনেই ট্রেন চালানো হয়। ‘রেড পান্ডা’ নামে আরও একটি টয় ট্রেন পর্যটকদের জন্য পাহাড়ের পথে চালানো হয়। সমতলে অর্থাৎ শিলিগুড়ি লাগোয়া সুকনা থেকে রংটং পর্যন্তও পর্যটকদের জন্য আর একটি বিশেষ টয় ট্রেন চলে। সেটির যাত্রাপথ বেশ খানিকটা জঙ্গলের মধ্যে দিয়ে যাওয়ায় ‘জঙ্গল সাফারি’ নামে ট্রেনটি চালানো হয়। স্কুটির বিজ্ঞাপনে সেই পথেরই ছবি দেখানো হচ্ছে।
রেল সূত্রের খবর, দিন পিছু প্রায় সাড়ে ৫ লক্ষ টাকা ভাড়া দিয়ে চলতি বছরের শুরুতে সুকনার কাছে টয় ট্রেনের শুটিং করেছিল বিজ্ঞাপন সংস্থা। ইতিমধ্যে বিজ্ঞাপনটি দেখে ট্যুর অপারেটরদের কাছে পর্যটকেরা খোঁজখবরও শুরু করেছেন। ট্যুর অপারেটর সংগঠনের দাবি, পুজোর মরসুমের জন্য দার্জিলিঙের হোটেল-রিসর্টে ইতিমধ্যে বুকিং শুরু হয়ে গিয়েছে। বেশ কয়েকটি হোটেলে বুকিং শেষও হয়ে গিয়েছে।
ট্যুর অপারেটর সংগঠন এতোয়া-র কার্যকরী সভাপতি সম্রাট সান্যাল বলেন, ‘‘বিজ্ঞাপনে ডিএইচআর লেখা দেখে অনেক ভিন্ রাজ্যের পর্যটক ইন্টারনেটে দার্জিলিঙের টয় ট্রেন খুঁজে পেয়েছেন। বুকিংয়ের জন্য আমাদের ফোন করছেন। এটা টয় ট্রেনের জন্য এক বিপুল সম্ভাবনা।’’ তবে তাঁর আক্ষেপ, পর্যটকদের মধ্যে চাহিদা বাড়লেও ইন্টারনেট মারফত টয় ট্রেনে বুকিংয়ের কোনও সুযোগ নেই। রেলের ডিআরএম উমাশঙ্করবাবু অবশ্য আশ্বাস দেন, ধস সরে গিয়ে রাস্তা স্বাভাবিক হলেই ইন্টারনেটেও টয় ট্রেনের সব রুটের আসন সংরক্ষণ করা যাবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy