আরজি কর-কাণ্ডের প্রতিবাদে মালদহে তৃণমূলের প্রতিবাদ সভায় (বাঁ দিকে) জেলা সভাপতি আব্দুলরহিম বক্সী ও জেলা সহসভাপতি দুলাল সরকার (ডান দিকে)। —নিজস্ব চিত্র।
আরজি কর-কাণ্ডের প্রতিবাদে তৃণমূলের পথসভা চলছিল। সেই পথসভা থেকেই এ বার বিরোধীদের ‘চামড়া তুলে দেওয়ার’ হুঁশিয়ারি শোনা গেল তৃণমূলের মালদহ জেলা সভাপতি আব্দুলরহিম বক্সীর গলায়। ওই প্রতিবাদ সভায় উপস্থিত ছিলেন দলের জেলা সহসভাপতি দুলাল সরকারও। তিনি আরও এক ধাপ এগিয়ে দাবি করলেন, চাইলেই তাঁরা বিরোধীদের রাস্তায় ফেলে মারতে পারতেন। কিন্তু তা করেননি। রবিবার সকালে মালদহ শহরে প্রতিবাদসভা থেকে এই ভাবেই বিরোধীদের শাসানি দিয়ে রাখলেন তৃণমূলের নেতারা।
উল্লেখ্য, গত ৪ সেপ্টেম্বর আরজি কর-কাণ্ডের প্রতিবাদে এক কর্মসূচি আয়োজিত হয়েছিল। শাসকদলের অভিযোগ, সেই কর্মসূচির শেষে মালদহ শহরে রাস্তার ধারে তৃণমূলে বেশ কিছু পতাকা খুলে পড়েছিল। সেই ছবি সমাজমাধ্যমেও ছড়িয়েছিল। তৃণমূলের জেলার নেতাদের বক্তব্য, তারা আরজি কর-কাণ্ডের প্রতিবাদ কর্মসূচিকে সমর্থন করেন। কিন্তু ওই কর্মসূচির আড়ালে বিরোধী রাজনৈতিক দলের সদস্যরা এই কাণ্ড ঘটিয়েছে বলে অভিযোগ ঘাসফুল শিবিরের। আব্দুলরহিম বলেন, “যখন (বিরোধীরা) মানুষের সমর্থন পাচ্ছেন না, যখন মানুষ সিপিএম ও বিজেপির পতাকার তলায় আসছেন না, তখন আমাদের পতাকা ছিঁড়ে অশান্তি পাকানোর চেষ্টা করেছিল। বিজেপি কর্মীদের গায়ের চামড়া টেনে নামিয়ে দেবে তৃণমূলের কর্মীরা।”
এর পরেই তিনি আরও বলেন, “আমরা আরজি করের প্রতিবাদে সমস্ত আন্দোলনকে সমর্থন করছি। কিন্তু সিপিএমের সঙ্গে গোপনে হাত মিলিয়ে বিজেপির ঘৃণ্য চক্রান্তের বিরুদ্ধে তৃণমূল লড়বে।” দলের জেলা সহসভাপতি দুলালও বিরোধীদের আক্রমণের সুরে বলেন, “শিক্ষিত মানুষ ও ছাত্রদের আন্দোলনের পিছনে দাঁড়িয়ে কেউ কেউ তৃণমূলের ঝান্ডা খুলে দিয়েছেন। তাঁদের বিরুদ্ধে আমাদের কাছে নির্দিষ্ট অভিযোগ আছে। ঝান্ডা আমাদের কাছে পরিবারের মতো। আমরা চাইলে তাদের মেরে রাস্তায় ফেলে দিতে পারতাম। কিন্তু মারিনি। কারণ, হাসপাতালে ডাক্তারদের (একাংশ) চিকিৎসা করছেন না। যাঁদের মারব, তিনিও মারা যেতে পারেন। সেই কারণে আমরা মারধরের থেকে বিরত থেকেছি।”
তৃণমূলের দুই নেতার এমন মন্তব্যকে বিরোধীদের উদ্দেশে হুমকি হিসাবেই দেখছে পদ্ম শিবির। মালদহ উত্তরের বিজেপি সাংসদ খগেন মুর্মু বলেন, “হুমকি, ধমকানো ছাড়া তৃণমূলের আর কোনও কাজ আছে! এটা শুধু তৃণমূলের নিচু তলার বিষয় নয়, এটিই তৃণমূলের সংস্কৃতি। এ সব কথা ওদের মুখেই সাজে। ওরা মানুষের জন্য নেই। মানুষকে ভয় দেখিয়ে, ধমকিয়ে, চমকিয়ে টিকে থাকতে চায় ওরা।” তৃণমূলের পতাকা ছেঁড়ার যে অভিযোগ শাসকদলের নেতারা তুলেছেন, তার সত্যতা নিয়েও সংশয় প্রকাশ করেছেন খগেন মুর্মু।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy