মুখোমুখি: এনআরসির বিরুদ্ধে প্রচারে জেলা পরিষদ সদস্য বিপাশা দাস সিংহ। নিজস্ব চিত্র
নতুন নাগরিকত্ব আইন ও নাগরিকপঞ্জির বিরুদ্ধে বাড়ি বাড়ি প্রচারে দিল্লির ভোটের ফলের কথাও জুড়ল তৃণমূল। বৃহস্পতিবার করণদিঘির আলতাপুরে এ ভাবেই জনসংযোগ করলেন স্থানীয় বিধায়ক মনোদেব সিংহের স্ত্রী তথা জেলা পরিষদের সদস্য বিপাশা দাস সিংহ।
বিপাশা প্রচারে রাজবংশীতে বলেন, ‘‘দেখে শুনে বুঝো, দিল্লির মানশী লা সিএএ আর এনআরসি-র খেলাপ ভোট দিলে। সিএএ ও এনআরসি লোক মারা কল। ইয়ার হাত থাকি বাঁচিবা হোলে হামাক পশ্চিম বাংলা থাকি বিজেপিক ভাগাবা হোবে। বিজেপির ফানদত পড়িলে জিন্দেগিভর কান্দিবা হোবে।’’ (দিল্লির লোকেরা সিএএ, এনআরসি-র বিরুদ্ধে ভোট দিলেন। সিএএ আর এনআরসি মানুষ মারার কল। সে সবের হাত থেকে বাঁচতে হলে এ রাজ্য থেকে বিজেপিকে তাড়াতে হবে।)
এ দিনের প্রচারে কার্যত বাড়ির হেঁশেলেও ঢুকে যান বিপাশা। তৃণমূলের নেত্রীকে বাড়িতে দেখে প্রথমে অবাক হয়েছিলেন করণদিঘির কাশীবাড়ির গৃহবধূ জ্যোৎস্না সিংহ। তিনি বিপাশাকে বলেন, ‘‘কী ব্যাপার বৌদি তুমি! আবার কোনও ভোট নাকি।’’ বিপাশা তাঁকে বলেন, ‘‘দিল্লির ভোটের ফল তো শুনেছ। ওই ভোটের সঙ্গে আমাদের কোনও যোগসূত্র নেই। কিন্ত ওই ফলাফল দেখিয়ে দিল, নতুন নাগরিকত্ব আইন ও নাগরিকপঞ্জির বিরুদ্ধে মানুষ ফুঁসছে। দিল্লিবাসীর মতো আমাদেরও সচেতন হতে হবে।’’
জেলার সীমান্তঘেঁষা এলাকা করণদিঘি। নতুন নাগরিকত্ব আইনের কথায় প্রান্তিক ওই এলাকার অনেকেই পড়েছেন চিন্তায়। দিল্লির ভোটের ফলাফলে সেই গ্রামের কৃষক শম্ভু সিংহের মুখে হাসি ফিরেছে। তিনি বলেন, ‘‘স্থানীয় বিজেপি নেতারা বলেছিলেন, ভয় নেই। আমি তাঁদের একটা প্রশ্ন করেছিলাম, নথি দেখাতে না পারলে আমার কী হবে? ওঁরা বলেছিলেন, বাংলাদেশ থেকে অত্যাচারিত হয়ে এ দেশে আসার কথা জানাতে। কিন্তু এ দেশে জন্মেও আমাকে বিদেশি পরিচয় দিতে হবে! এমন আইন আমি চাই না।’’
তৃণমূল সূত্রে জানা গিয়েছে, এ দিন বিপাশার সঙ্গে ছিলেন করণদিঘি ব্লকের এসসি ও এসটি সেলের সভাপতি রমেশ সিংহ। তিনি বলেন, ‘‘এই এলাকার আদিবাসী ও রাজবংশীদের অনেকের কাছে নথি নেই। দেশছাড়া হওয়ার ভয়ে তাঁরা কাজ ফেলে নথির খোঁজে ঘুরছেন। দিল্লির ফলে কিছুটা হলেও সাধারণ মানুষের স্বস্তি ফিরেছে।’’
উত্তর দিনাজপুর জেলা তৃণমূল সভাপতি কানাইয়ালাল আগরওয়াল বলেন, ‘‘নতুন নাগরিকত্ব আইন ও নাগরিকপঞ্জির বিরুদ্ধে বাড়ি বাড়ি প্রচারের পূর্বঘোষিত কর্মসূচিই ছিল। দিল্লির ভোটের ফল কেন্দ্রের বিজেপি সরকারের অমানবিক আইনের বিরুদ্ধে মানুষের রায়।’’
জেলা বিজেপি সম্পাদক বিশ্বনাথ মৃধার দাবি, ‘‘তৃণমূল নিজেদের ব্যর্থতা ঢাকতে দিল্লিকে হাতিয়ার করছে। বিরোধীরা নতুন আইন নিয়ে সাধারণ মানুষের মধ্যে আতঙ্ক ছড়াচ্ছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy