এ বার কালীপুজোর উদ্বোধনকে কেন্দ্র করেও প্রকাশ্যে এল তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব। শনিবার রাতে উত্তর দিনাজপুরের হেমতাবাদ এলাকায় দু’টি পুজোর উদ্বোধন হয়। এই উদ্বোধন ঘিরেই ওই দিন রাতে জেলা তৃণমূল সভাপতি তথা ইটাহারের বিধায়ক অমল আচার্যের গোষ্ঠীর সঙ্গে দলের জেলা সম্পাদক মৃত্যুঞ্জয় দত্তের গোষ্ঠীর দ্বন্দ্ব প্রকাশ্যে চলে আসে।
মৃত্যুঞ্জয়বাবু এবং তাঁর অনুগামী তথা দলের হেমতাবাদ ব্লকের সাধারণ সম্পাদক আশরাফুল আলির আমন্ত্রণে এ দিন রাতে হেমতাবাদের পূর্বপাড়া সর্বজনীন শ্যামাপুজো কমিটির পুজো উদ্বোধন করেন গোয়ালপোখরের তৃণমূল বিধায়ক তথা রাজ্যের পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন দফতরের প্রতিমন্ত্রী গোলাম রব্বানি। তাঁদের আমন্ত্রণে ওই অনুষ্ঠানে দলের রাজ্য সম্পাদক কালিয়াগঞ্জের বাসিন্দা অসীম ঘোষ, করণদিঘির তৃণমূল বিধায়ক মনোদেব সিংহ, চোপড়ার তৃণমূল বিধায়ক হামিদুল রহমান, সদ্য কংগ্রেস ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দেওয়া ইসলামপুরের বিধায়ক কানাইয়ালাল অগ্রবাল হাজির ছিলেন। কিন্তু অমলবাবুকে সেখানে আমন্ত্রণ জানানো হয়নি বলে অভিযোগ।
একই সময়ে প্রায় ৫০০ মিটারের ব্যবধানে অমলবাবুর অনুগামীদের ক্লাব বলে পরিচিত বিদ্রোহী ক্লাবের পুজোর উদ্বোধন হয়। অনুগামীদের আমন্ত্রণে অমলবাবু ওই পুজোর উদ্বোধন করেন। অমলবাবু ছাড়াও সেখানে মৃত্যুঞ্জয়বাবুর বিরোধী নেতা তথা অমলবাবুর অনুগামী বলে পরিচিত দলের হেমতাবাদ ব্লক সভাপতি প্রফুল্ল বর্মন, দলের জেলা কার্যকরী সভাপতি শেখর রায় সহ একাধিক নেতা হাজির ছিলেন। ওই অনুষ্ঠানে আবার মন্ত্রী গোলাম রব্বানি, করণদিঘি, চোপড়া ও ইসলামপুরের বিধায়ককে আমন্ত্রণ জানানো হয়নি বলে অভিযোগ। রবিবার দিনভর তৃণমূলের দু’টি শিবিরেই ওই ঘটনাকে ঘিরে
চর্চা চলে।
মৃত্যুঞ্জয়বাবুর দাবি, অমলবাবুর স্বেচ্ছাচারী মনোভাব ও নিজের ঘনিষ্ঠদের দলে নানা পদ ও সুবিধা পাইয়ে দেওয়ার প্রবণতার জেরে তাঁর সঙ্গে দলের বেশিরভাগ জেলা নেতা ও বিধায়কের দূরত্ব তৈরি হয়েছে। তিনি বলেন, ‘‘আমরা রাজ্য নেতৃত্বের কাছে তাঁর অপসারণ দাবি করেছি।’’
অমলবাবুর পাল্টা দাবি, মৃত্যুঞ্জয়বাবু দলবিরোধী নানা কার্যকলাপে অভিযুক্ত। তিনি বলেন, ‘‘দলের বেশ কিছু নেতা পদ ও ক্ষমতার লোভে আমার বিরুদ্ধে দীর্ঘদিন ধরে ষড়যন্ত্র করছেন। রাজ্য নেতৃত্ব সব জানেন।’’
উল্লেখ্য, গত অগস্ট মাসে দলের জেলা পর্যবেক্ষক রাজ্যের মন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারীর কাছে অমলবাবুর বিরুদ্ধে দলীয় নির্দেশ না মেনে জেলার একাধিক কমিটি ভাঙার অভিযোগ জানিয়ে তাঁকে জেলা সভাপতির পদ থেকে অপসারণের দাবি জানান। যাঁরা বিদ্রোহ ঘোষণা করেছিলেন তাঁদের মধ্যে ছিলেন জেলার একাধিক তৃণমূল নেতা ও বিধায়ক। সেই তালিকাতেই নাম ছিল মৃত্যুঞ্জয়বাবু, অসীমবাবু সহ তাঁদের অনুগামী একাধিক নেতাদের। এরপরেই অমলবাবু মৃত্যুঞ্জয়বাবুকে দলের হেমতাবাদ ব্লক সভাপতির পদ থেকে সরিয়ে তাঁর জায়গায় প্রফুল্লবাবুকে দায়িত্ব দেন। এর পর থেকেই মৃত্যুঞ্জয়বাবুর গোষ্ঠীর সঙ্গে অমলবাবুর গোষ্ঠীর দ্বন্দ্ব তীব্র হয়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy