Advertisement
০৫ নভেম্বর ২০২৪
Siliguri

১৫ বছর পর মা ফিরে পেলেন ছেলে

৩১ নম্বর জাতীয় সড়কের বিধাননগর আন্ডারপাসে প্রায় ৩ বছর ধরে থাকতেন মানসিক ভারসাম্যহীন গাজুলি সিংহ।

ফিরে পাওয়া। নিজস্ব চিত্র

ফিরে পাওয়া। নিজস্ব চিত্র

নীতেশ বর্মণ
শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ১৪ জানুয়ারি ২০২১ ০৬:৩৬
Share: Save:

সোশ্যাল মিডিয়ায় ছবি দেখে পড়শিরা খোঁজ দিয়েছিলেন তাঁর মায়ের। ছেলে ঠিক চিনতে পারেননি। কিন্তু মায়ের একটি ডাকেই শেষপর্যন্ত তাঁকে ফিরে পেলেন ছেলে। প্রায় ১৫ বছর পর মা এল ঘরে।

৩১ নম্বর জাতীয় সড়কের বিধাননগর আন্ডারপাসে প্রায় ৩ বছর ধরে থাকতেন মানসিক ভারসাম্যহীন গাজুলি সিংহ। সেখানে একাই দিন কাটত তাঁর। সংলগ্ন বিধাননগর বাজারের ব্যবসায়ীদের দেওয়া খাবারে তাঁর দিন চলত। লকডাউনের সময় এমন মানসিক ভারসাম্যহীনদের পাশে দাঁড়িয়েছিলেন সেখানকার সমাজসেবী বাপন দাসেরা। গাজুলিদেবীকে খাবার ও শীতবস্ত্র দিয়েছেন তাঁরা। ভাইফোঁটাও দিয়েছেন তিনি। সেই ছবি সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করতেন বাপন। সেটা দেখতে পান ফাঁসিদেওয়া ব্লকের লিউসুপাখুরির এক বাসিন্দা। তিনি গাজুলিদেবীকে চিনতে পেরে তাঁর ছেলে বিক্রম রায়কে জানান।

মঙ্গলবার বিধাননগরে মাসির সঙ্গে মায়ের খোঁজে গিয়েছিলেন বিক্রম। আন্ডারপাসের পাশ দিয়ে যাওয়ার সময় শুনতে পান, ‘বাবু’ বলে কেউ ডাকছেন তাঁকে। কাছে যেতেই ছেলেকে জড়িয়ে ধরেন গাজুলিদেবী। আচমকা মায়ের স্পর্শ পেয়ে কেঁদে ওঠেন বিক্রম। দৃশ্য দেখে জড়ো হন আশপাশের অনেকেই। বিক্রম বলেন, ‘‘কতদিন পর মাকে ডাকলাম। মা আমাকে নতুন জীবন দিল।’’

পরিবারের দাবি, প্রথম থেকেই কিছুটা মানসিক ভারসাম্যহীন ছিলেন গাজুলিদেবী। তাঁর দুই ছেলে ছিল। প্রায় ১৫ বছর আগে বাড়ি ফেরার পথে এক সন্তানকে দুষ্কৃতীরা মারধর করে চুরি করে নিয়ে গিয়েছিল বলে দাবি। তখন থেকে আরও বেশি মানসিক ভাবে অসুস্থ হয়ে পড়েন গাজুলিদেবী। কয়েকদিনের মধ্যে এলাকায় তাঁকে আর খুঁজে পাওয়া যায়নি বলে দাবি। থানায় অভিযোগ জানিয়েছিলেন তাঁর স্বামী বিশু রায়। ৭০ ছুঁই ছুঁই বিশুবাবুর প্রতীক্ষার অবসান হল। বিক্রমের কথায়, ‘‘বাবাকে এমন খুশি কোনওদিন দেখিনি।’’ সমাজসেবী বাপন দাস এ দিন বলেন, ‘‘ওই ভদ্রমহিলা নিজের ঘরে ফিরেছেন, এর থেকে আর কী ভাল হতে পারে!’’

অন্য বিষয়গুলি:

Siliguri Lost and found
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE