নিজস্ব আয়ের নিরিখে রাজ্যে প্রথম হয়েছে শিলিগুড়ি মহকুমার পাথরঘাটা গ্রাম পঞ্চায়েত। পরিষদ সূত্রে খবর, ২০২৩-২০২৪ অর্থবছরে পঞ্চায়েতটি আয় করেছে ২.৪০ কোটি টাকা। রাজ্যে যা কোনও পঞ্চায়েত করতে পারেনি বলে দাবি। পঞ্চায়েত প্রধান, তৃণমূলের মহম্মদ শাহিদকে রাজ্যের পঞ্চায়েত নগরোন্নয়ন দফতরের তরফে প্রশংসা করা হয়েছে। রাজ্য অর্থ কমিশনের বরাদ্দ বৃদ্ধিতে প্রধান আশ্বাস পেয়েছেন বলেও দাবি।
পাথরঘাটার প্রধানের বক্তব্য, ‘‘প্রচুর হোটেল, রিসর্ট রয়েছে। নতুন করে অনেকগুলি তৈরি করা হচ্ছে। অনেকের কর বাকি ছিল। সেগুলি সংগ্রহে জোর দেওয়া হয়েছে। তা এলাকার উন্নয়নে কাজে আসবে।’’ পঞ্চদশ অর্থ কমিশনের টাকা খরচের নিরিখেও তাঁরা প্রথম বলে দাবি প্রধানের।
পরিষদ সূত্রে খবর, শুধু পাথরঘাটা নয়, মহকুমার চম্পাসারি এবং আঠারোখাই গ্রাম পঞ্চায়েতও আয়ের নিরিখে রাজ্যে প্রথম দিকে রয়েছে। চম্পাসারি ২ কোটি টাকার বেশি আয় করেছে। তারা পঞ্চায়েতের কর সংগ্রহের আইন তৈরি করে তা আইনি ভাবে পাশ করিয়ে নিয়েছে বলেও দাবি। সেখানে আবর্জনা সংগ্রহের জন্য বাড়ি বাড়ি থেকে একশো টাকা করে নেওয়া হয় বলে জানান প্রধান জনক সাহা। তিনি বলেন, ‘‘নিজস্ব আয় বৃদ্ধিতে কর সংগ্রহে জোর দেওয়া হয়েছে। মানুষ সাড়া দিয়েছেন।’’ একই ভাবে শহর-ঘেঁষা আঠারোখাই পঞ্চায়েতও নানা ভাবে আয় করছে।
পরিষদের এক আধিকারিক বলেন, ‘‘শিলিগুড়ি শহর সংলগ্ন তিনটি পঞ্চায়েত কর এবং অন্যান্য মাধ্যমে তাদের আয় উল্লেখযোগ্য ভাবে বাড়িয়েছে। রাজ্যে তারা প্রথম দিকে রয়েছে।’’ পরিষদ সূত্রে খবর, শিলিগুড়ি শহরকে কেন্দ্র করে এই তিনটি পঞ্চায়েত এলাকায় নগরায়ন হচ্ছে। জমি কেনাবেচা দিন দিন বাড়ছে। পাথরঘাটায় একাধিক সংস্থা অফিস, হোটেল, রিসর্ট তৈরি করছে। সেখানে তৈরি আবর্জনা প্রক্রিয়াকরণ ব্যবস্থাও সাড়া ফেলেছে। তা থেকেও কর সংগ্রহ করে আয়ের নতুন দিশা মিলেছে। চম্পাসারির অনেকটা অংশ শহর-ঘেঁষা। সেখানেও ব্যবসা-বাণিজ্য বাড়ছে বলে দাবি।
পরিষদের সভাধিপতি অরুণ ঘোষ বলেন, ‘‘বামফ্রন্ট আমলে কর সংগ্রহে জোর দেওয়া হয়নি। খাতাকলমে তার হিসেব থাকত না। ফলে উন্নয়নে বাধা হত। রাজ্যের একটি ব্লকের তিনটি পঞ্চায়েতের এমন ফল নিঃসন্দেহে উন্নয়নের কাজ এগিয়ে নিয়ে যাবে।’’
পাল্টা সিপিএমের প্রাক্তন সভাধিপতি তাপস সরকার বলেন, ‘‘সরকারি জমি বিক্রি থেকে অবৈধ নির্মাণ, খনন যে হারে বাড়ছে তার সামান্যই কর হিসাবে দেখানো হচ্ছে। তাতে কি দুর্নীতি আড়ালে থাকে?’’
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)