গাড়ি চালাতে চালাতে কানেফোন। শিলিগুড়িতে তোলা নিজস্ব চিত্র
• অবাক অভিভাবকেরা
মাল্লাগুড়ির একটি বাস স্টপে স্কুলের গাড়িটি দাঁড়াতেই কয়েকজন অভিভাবক চিৎকার শুরু করে দিলেন। কী ব্যাপার! স্কুলবাসের চালকের কানে মোবাইল। এক হাতে গাড়ি চালাচ্ছেন তিনি। একজন অভিভাবক বাসের চালককে সতর্ক করলেন। বেপরোয়া বাসচালক জানান, তিনি এ ভাবেই নাকি ৪ বছর ধরে চালান। অভিভাবকরা মুর্শিদাবাদের ভয়াবহ বাস দুর্ঘটনার কথা বলে হইচই করতেই চালক গুটিয়ে গেলেন। নাছোড় অভিভাবকরা চালকের মোবাইল গাড়ির খালাসির হাতে তুলে দিলেন। তার পরে বাস ছাড়ল স্কুলের দিকে। বিভিন্ন স্কুল কর্তৃপক্ষকেই জানানো হয়েছে অভিভাবকদের দুর্ভাবনার কথা। তাঁরা ব্যবস্থা নেবেন বলেছেন।
• গার্ডওয়ালে ধাক্কা
গত ২৬ জানুয়ারি বেলা ১১টা নাগাদ তিন যুবক একটি মোটরবাইকে চেপে রায়গঞ্জের মোহনবাটীর দিক থেকে কর্ণজোড়ার দিকে যাচ্ছিলেন। পুলিশের দাবি, তাঁদের কারোর মাথায় হেলমেট ছিল না। বাইকটি অত্যন্ত দ্রুতগতিতে চালাচ্ছিলেন চালক। শিলিগুড়িমোড় এলাকায় বাইকটি পৌঁছনো মাত্র চালকের মোবাইলে ফোন আসে। চালক ঘাড় মাথা ডানদিকে বাঁকিয়ে ঘাড় ও কানের মাঝে মোবাইল আটকে কথা বলতে বলতে বাইক চালাচ্ছিলেন। সেই সময় শিলিগুড়িমোড় ট্রাফিক পয়েন্টের সিগন্যালে লাল আলো জ্বলে উঠলে চালক নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলেন। বাইকটি থামাতে গিয়ে মোবাইলটি রাস্তায় পড়ে যায়। বাইকটি ট্রাফিক পুলিশের গার্ডওয়ালে গিয়ে ধাক্কা মেরে থেমে যায়। অল্পের জন্য মালদহগামী ট্রাকের ধাক্কা থেকে রক্ষা পান ওই তিন যুবক। ওই ঘটনার পর কর্তব্যরত ট্রাফিক পুলিশের কর্মীরা দৌড়ে তাঁদেরকে ধরার চেষ্টা করেন। কিন্তু রাস্তায় গাড়ির ভিড়ে আটকে গিয়ে অভিযুক্তদের ধরতে ব্যর্থ হন ট্রাফিক পুলিশের কর্মীরা। সেই সুযোগে পুলিশ কর্মীরা কাছাকাছি আসার আগেই ওই তিন যুবক ফের বাইকে উঠে জোরে চালিয়ে উধাও হয়ে যান। নিমেষের মধ্যে সমস্ত ঘটনা ঘটায় ট্রাফিক পুলিশ বাইকটির নম্বরও নথিভুক্ত করতে পারেনি বলে দাবি।
• গতি জানতে বসছে যন্ত্র
রায়গঞ্জ ট্রাফিক পুলিশের ওসি জামালুদ্দিন আহমেদ বলেন, মুর্শিদাবাদের বাস দুর্ঘটনার বহু আগে থেকে রাজ্যে সেফ ড্রাইভ, সেভ লাইফ কর্মসূচি শুরুর থেকেই তাঁরা রাস্তায় নজর রাখছিলেন। হেলমেটহীন বাইক চালক, যানবাহন চালানোর সময়ে চালকদের মোবাইল ফোন ব্যবহার, বেপরোয়া ভাবে গাড়ি চালানোর সহ সব ধরনের ট্রাফিক আইন অমান্যর বিরুদ্ধে ট্রাফিক পুলিশের অভিযানও চলছে। এ ছাড়াও গোটা উত্তর দিনাজপুর জেলা জুড়ে জাতীয় ও রাজ্য সড়কে স্পিড রিডার গান বসিয়ে বিভিন্ন যানবাহনের গতিবেগ নিয়ন্ত্রণের কাজও চলছে। কিন্তু এখনও বহু চালকের সচেতন না হওয়ায় প্রতিদিনই অনেকে হেলমেট ছাড়া বাইক চালাচ্ছেন বা গাড়ি চালানোর সময়ে মোবাইলে কথা বলছেন। তবে মুর্শিদাবাদে বাস দুর্ঘটনার পর ট্রাফিক পুলিশের নজরদারি আরও বাড়ানো হয়েছে। জেলা পুলিশ সুপার শ্যাম সিংহের দাবি, যে কোনও যানবাহন চালানোর সময়ে চালকেরা যাতে মোবাইল ফোনে কথা বলতে পারেন, তার জন্য জেলা জুড়ে নজরদারি রয়েছে। গত ছয়মাস ধরে প্রতি মাসে জেলার দশটি থানা এলাকায় গড়ে ২০০ জন করে চালকের কাছ থেকে জরিমানা আদায় করা হয়েছে।
• জরিমানা ৭০ জনের
বাইক-ছোট বড় গাড়ি, টোটো, অটোর চালকরাও অনেকে নিষেধাজ্ঞার তোয়াক্কা না করে মোবাইলে কথা বলছেন। এত দিন তা নিয়ে তেমন হেলদোল ছিল না ট্রাফিক পুলিশের। কিন্তু, দৌলতাবাদের ঘটনার পরে সক্রিয় ট্রাফিক পুলিশ। কোচবিহারে দু’দিনে মোবাইলে কথা বলার জন্য ৭০ জনকে জরিমানা করা হয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy