— প্রতিনিধিত্বমূলক চিত্র।
হুমকি সংস্কৃতি (থ্রেট কালচার)-র অভিযোগে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজে সাসপেন্ড (নিলম্বিত) করা হয়েছিল সাত জন পড়ুয়া ও জুনিয়র ডাক্তারকে। পাশাপাশি, তাঁদের পরীক্ষাতেও বসতে না দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিলেন কলেজ কর্তৃপক্ষ। এ বার সেই সিদ্ধান্তেই স্থগিতাদেশ দিল কলকাতা হাই কোর্ট। মঙ্গলবার উচ্চ আদালতের নির্দেশ, কলেজ কর্তৃপক্ষ ওই পড়ুয়াদের সাসপেন্ড করার যে নির্দেশ দিয়েছিলেন, তা আপাতত কার্যকরী নয়। বুধবার থেকে ক্লাস করতে পারবেন ওই সাত জন পড়ুয়া। বসতে পারবেন পরীক্ষাতেও।
সম্প্রতি হুমকি সংস্কৃতিতে নাম জড়ানোর অভিযোগে অরিত্র রায়-সহ উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজের সাত জন পড়ুয়াকে সাসপেন্ড করা হয়। অভিযোগ, নানা সময়ে কলেজে ভয়ের পরিবেশ তৈরি করেছেন ওই সাত পড়ুয়া। এর পরেই অভিযোগের ভিত্তিতে পদক্ষেপ করেন কলেজ কর্তৃপক্ষ। কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে ওই সাত পড়ুয়া হাই কোর্টে মামলা করেন। সেই মামলার শুনানিতেই মঙ্গলবার বিচারপতি জয় সেনগুপ্ত জানিয়ে দেন, আপাতত কলেজ কর্তৃপক্ষের ওই সিদ্ধান্ত স্থগিত থাকবে। বুধবার থেকে ক্লাসে আসতে পারবেন ওই পড়ুয়ারা। পরীক্ষাতেও বসতে পারবেন। তবে পরীক্ষা আর ক্লাস ছাড়া তাঁরা কলেজ ক্যাম্পাসে এখনই প্রবেশ করতে পারবেন না। আগামী পাঁচ সপ্তাহ পরে এই মামলায় পরবর্তী শুনানি রয়েছে।
মঙ্গলবার আদালতে মামলাকারীদের আইনজীবী কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘থ্রেট কালচারও তো এক ধরনের র্যাগিং। যে কোনও মেডিক্যাল কলেজে অ্যান্টি র্যাগিং কমিটি থাকার কথা। অথচ এই মেডিক্যাল কলেজে এই ধরনের কোনও কমিটি নেই। ওই কলেজ ন্যাশনাল মেডিক্যাল কাউন্সিলের নিয়ম মেনে চলছে না।’’ কল্যাণের দাবি, ওই ছাত্রদের বিরুদ্ধে একতরফা ভাবে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তাঁদের আত্মপক্ষ সমর্থনের কোনও সুযোগই দেওয়া হয়নি। কী ভাবে শুধু মাত্র অভিযোগের প্রেক্ষিতে ছাত্রদের পরীক্ষায় বসা আটকাতে পারেন কলেজ কর্তৃপক্ষ? এতে ওই পড়ুয়াদের ভবিষ্যৎ নিয়ে অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে।
যদিও উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজের আইনজীবী সুমন সেনগুপ্তের পাল্টা যুক্তি, ওই পড়ুয়াদের বিরুদ্ধে অভিযোগ আসার পরেই পদক্ষেপ করা হয়নি। প্রথমে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছিল। এর পর অভিযোগ খতিয়ে দেখেই পদক্ষেপ করেন কর্তৃপক্ষ। এখানে কর্তৃপক্ষের উপর কোনও রকমের চাপ কিংবা বাধ্যবাধকতা ছিল না। তদন্ত কমিটির পর্যবেক্ষণ অনুযায়ী সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
গত ৯ অগস্ট কলকাতার আরজি কর মেডিক্যাল কলেজে এক চিকিৎসক-পড়ুয়াকে ধর্ষণ এবং খুনের অভিযোগ ওঠে। সেই ঘটনার প্রতিবাদে উত্তাল হয়ে ওঠে সারা দেশ। রাজ্যের হাসপাতালে হাসপাতালে চলা ‘থ্রেট কালচার’ নিয়ে সরব হয়ে আন্দোলনে নামেন পড়ুয়ারা। উল্লেখ্য, গত সেপ্টেম্বরে আরজি কর হাসপাতালের কলেজ কাউন্সিলও থ্রেট কালচারে জড়িত থাকার অভিযোগে ৫১ জন চিকিৎসককে সাসপেন্ড করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। কয়েক জনকে ঢুকতে বারণ করা হয়েছিল হস্টেলে। সেই ঘটনার পরেও সাসপেনশনের বিরুদ্ধে সরব হয়ে হাই কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন ওই ৫১ জন। সেই মামলাতেও বিচারপতি কৌশিক চন্দের অবকাশকালীন বেঞ্চ জানিয়ে দেয়, কর্তৃপক্ষের নির্দেশ কার্যকরী হবে না। এই সাসপেনশন নিয়ে সিদ্ধান্ত নেবে রাজ্য। এই রায় প্রকাশ পাওয়ার আগে জুনিয়র ডাক্তারদের সঙ্গে বৈঠকে ৫১ জনকে সাসপেন্ড করা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy