আগামী দিনে বনকর্মী নিয়োগের জন্য স্টাফ সিলেকশন কমিশনের বদলে পুলিশ রিক্রুটমেন্ট বোর্ডের উপর ভরসা করতে চায় বন দফতর। বুধবার আলিপুরদুয়ার সার্কিট হাউসে এক সাংবাদিক বৈঠকে এ কথা জানান রাজ্যের বনমন্ত্রী। প্রায় দেড় বছর আগে ২০৮ জন বনকর্মী নিয়োগের জন্য স্টাফসিলকশন কমিশনকে জানানো হলেও সাড়া পায়নি বন দফতর। বনমন্ত্রী বিনয় কৃষ্ণ বর্মন বলেন,“২০১৪ সালে জানুয়ারি মাসে স্টাফ সিলেকশন কমিশনে ২০৮ জন বনকর্মী নিয়োগের জন্য চিঠি পাঠানো হয়। প্রায় দেড়বছর হতে চললেও এগোয়নি সেই প্রক্রিয়া। তাই আমরা চিন্তাভাবনা করছি পুলিশ রিক্রুটমেন্ট বোর্ডকে অনুরোধ করব। তাদের মাধ্যমে বনকর্মী নিয়োগ শুরু করার চেষ্টা হবে। সে জন্য মন্ত্রিসভার অনুমোদন চাওয়া হয়েছে।’’
এদিন মন্ত্রী জানান, রাজ্য ওয়াইল্ড লাইফ বোর্ডে বক্সা ব্যাঘ্র প্রকল্পকে বায়োস্ফিয়ার ঘোষণার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তা কেন্দ্রীয় বন ও পরিবেশ মন্ত্রকে পাঠানো হয়েছে। বিষয়টি দেখতে আগামী ১৮-১৯ মে কেন্দ্র ও রাজ্যের উচ্চপদস্থ বনকর্তারা বক্সা ব্যাঘ্র প্রকল্প পরিদর্শনে আসবেন। বায়োস্ফিয়ার ঘোষণার বিষয় কেন্দ্রের অনুমতি মিললে, তবেই বিষয়টি ইউনিস্কোর কাছে যাবে। তারা বায়োস্ফিয়ার ঘোষনায় ছাড়পত্র দিলে বিভিন্ন দেশের পর্যটক ভিড় জমাবেন বক্সায়। রাজ্যে একমাত্র সুন্দরবন বায়োস্ফিয়ার ঘোষণা হয়েছে।
তা ছাড়া বক্সা ব্যাঘ্র প্রকল্পে বাঘের প্রজননের জায়গা বাড়াতে কোর এলাকা সম্প্রসারণের চিন্তাভাবনা চলছে। বিষয়টি নিয়ে বনকর্তারা আলোচনা করবেন। বনমন্ত্রী বলেন, “রাজ্যের প্রধান মুখ্য বনপাল আজম জাইদিকে রাজ্যের জঙ্গলের সীমানা নির্ধারণের বিষয় নির্দেশ দিয়েছি। কেউ যদি জঙ্গল এলাকা দখল করে তাহলে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে।”
বন দফতর সূত্রের খবর, রাজ্যে স্থায়ী বনরক্ষীর মোট ৫৫১টি পদ দীর্ঘদিন খালি পড়ে রয়েছে। তার মধ্যে ২০৮টি পদে নিয়োগের ব্যাপারে ২০১৪ সালের জানুয়ারি মাসে অনুমোদন দেয় রাজ্য মন্ত্রিসভা। স্টাফ সিলেকশন কমিটির মাধ্যমে ওই নিয়োগের সিদ্ধান্ত হয়। ওই ব্যাপারে স্টাফ সিলেকশন কমিটিকে দায়িত্বও দেওয়া হয়। কিন্তু তারপর দেড় বছর পেরিয়ে গেলেও একটি পদেও নিয়োগ হয়নি। বনমন্ত্রী বলেন, “বনরক্ষীর ২০৮টি স্থায়ী পদে নিয়োগের ব্যাপারে স্টাফ সিলেকশন কমিটিকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। তাও প্রায় দেড় বছর হয়ে গিয়েছে। ওরা প্রক্রিয়া ঝুলিয়ে রেখেছেন। সেজন্যই আইনী সমস্যা না হলে পুলিশ রিক্রুটমেন্ট বোর্ড বা অন্য কোন নিয়োগ বোর্ডের মাধ্যমে ওই শূন্যপদ করা যায় কিনা তা নিয়ে চিন্তাভাবনা করতে হচ্ছে। কোন সিদ্ধান্ত হয়নি।”
উত্তরবঙ্গের এক পদস্থ বন কর্তা জানান, বনরক্ষীদের শূন্যপদের তালিকায় অর্ধেক উত্তরের বিভিন্ন এলাকায় রয়েছে। শুধু কোচবিহার বন্যপ্রাণ বিভাগের ১০৯টি অনুমোদিত পদের মধ্যে ৪০টি, গরুমারায় ৮২টি বনরক্ষী পদের তিরিশ শতাংশের বেশি পদ ফাঁকা রয়েছে। বাধ্য হয়েই শুধু ওই দুটি এলাকাতে গড়ে ৫০ জন করে বিভিন্ন কমিটির সদস্যদের নিয়ে এবার ‘ অ্যান্টি পোচিং ডিউটি’ চালাতে হয়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy