পাশাপাশি: আদালত চত্বরে বিয়ের রেজিস্ট্রি। নিজস্ব চিত্র
বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে দিনের পর দিন এক যুবতীকে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছিল প্রতিবেশী এক যুবকের বিরুদ্ধে৷ যার জেরে অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়ে ওই যুবতী। দিন চারেক আগে একটি কন্যা সন্তানের জন্মও দেন৷ যুবকের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ দায়ের হলেও, আশা ছাড়েননি যুবতী৷ হাসপাতাল থেকে ছাড়া পাওয়ার পরদিনই কোলে সন্তানকে নিয়েই চলে এসেছিলেন আদালত চত্বরে৷ আশা ছিল, যুবক এসে কথা রাখবেনই৷ শেষ পর্যন্ত হলও তা৷ শুক্রবার বিকালে আলিপুরদুয়ার আদালত চত্বরেই রেজিস্ট্রি করে বিয়ে হয়ে গেল দু’জনের৷
পুলিশ সূত্রের খবর, যুবক ও যুবতীর দু’জনেরই বাড়ি শামুকতলা থানার মাঝেরডাবরি চা বাগান এলাকায়৷ গত ২৪ অগস্ট যুবতীর মা শামুকতলা থানায় অভিযোগ করেন, প্রতিবেশী এক যুবক তাঁর মেয়েকে দিনের পর দিন ধর্ষণ করেন৷ যার ফলে তাঁর মেয়ে অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়েন৷ দিন চারেক আগে আলিপুরদুয়ার জেলা হাসপাতালে একটি কন্যা সন্তানের জন্ম দেন যুবতী৷
যুবতীর আইনজীবী সোমশংকর দত্ত বলেন, ‘‘যুবতীর বাড়ির লোকেরা থানায় অভিযোগ দায়ের করার পরে অভিযুক্ত যুবক বুঝতে পেরেছিলেন যে, তিনি ভুল করে ফেলেছেন৷ দিন চারেক আগে যুবতী সন্তানের জন্ম দেওয়ার পর তিনি ওই যুবতী ও তাঁর সন্তানের দায়িত্ব নিতে রাজিও হন৷ ফলে আমরা আর এই বিয়েতে না করিনি৷’
সূত্রের খবর, বৃহস্পতিবার আলিপুদুয়ার হাসপাতাল থেকে ছাড়া পান যুবতী৷ এরপর এ দিন দুপুরে সন্তানকে কোলে নিয়ে আদালত চত্বরে হাজির হন তিনি৷ সেখানেই বাড়ির কয়েকজনকে নিয়ে বিকালে পৌঁছয় অভিযুক্ত যুবক৷ কয়েক জনের উপস্থিতিতে বিয়ের রেজিস্ট্রি ফর্মে সই করেন তাঁরা৷ যুবতীর কথায়, ‘‘আমার বাড়ির লোকেদের থেকে শুনছিলাম, ওই যুবক না কি আমায় বিয়ে করতে চাইছে না৷ কিন্তু আমার মনে আগে থেকেই বিশ্বাস ছিল ও আমায় একদিন না একদিন বিয়ে করবেই৷’’ আর পেশায় কাঠমিস্ত্রী যুবকের কথায়, ‘‘একটা ভুল করে ফেলেছিলাম৷ এখন আর পেছনের দিকে তাকাতে চাই না৷ স্ত্রী ও সন্তান নিয়ে ভাল ভাবে সংসার করতে চাই৷’’
যুবকের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ ওঠার পর যুবতীকে হাসপাতালে ভর্তি করানো থেকে শুরু করে তার পরিবারকে পুলিশের কাছে নিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে আলিপুরদুয়ারের একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন উদ্যোগী হয়েছিল৷ সেই সংগঠনের কর্মকর্তা রাতুল বিশ্বাস বলেন, ‘‘শেষ পর্যন্ত অভিযুক্ত যুবক ওই যুবতীকে বিয়ে করায় আমরা খুশি৷’’
তবে তিনি ‘চাপের’ মুখে পড়ে বিয়ে করলেন নাকি ভালবেসে বিয়ে করলেন তা নিয়ে অবশ্য প্রশ্ন তুলেছেন অনেকে। আলিপুরদুয়ারের পুলিশ সুপার সুনীল যাদব অবশ্য সাফ বলেন, “যুবতীকে অভিযুক্ত বিয়ে করলেও, তার আগের অপরাধ মিটবে না৷ ফলে পুলিশ আইনের পথেই চলবে৷’’ যুবতীর আইনজীবী সোমশংকরবাবু বলেন, “আমরা আইন মেনেই চলব৷ গোটা বিষয়টি অবশ্যই আদালতকে জানাব৷”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy