Advertisement
০৩ নভেম্বর ২০২৪

অভিযোগ করেই কি বদলি নার্স

রায়গঞ্জ জেলা হাসপাতালের ক্রিটিকাল কেয়ার ইউনিটের (সিসিইউ-র) অব্যবস্থার অভিযোগ নিজের ফেসবুক পেজে পোস্ট করেছিলেন সিসিইউয়েরই এক নার্স। সেখানে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে দায়ী করে একাধিক অভিযোগ তোলেন। তার ১২ দিনের মাথায় তাঁকে আলিপুরদুয়ারে বদলি করে দেওয়া হয়েছে।

নিজস্ব সংবাদদাতা
রায়গঞ্জ শেষ আপডেট: ১২ এপ্রিল ২০১৭ ০২:২১
Share: Save:

রায়গঞ্জ জেলা হাসপাতালের ক্রিটিকাল কেয়ার ইউনিটের (সিসিইউ-র) অব্যবস্থার অভিযোগ নিজের ফেসবুক পেজে পোস্ট করেছিলেন সিসিইউয়েরই এক নার্স। সেখানে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে দায়ী করে একাধিক অভিযোগ তোলেন। তার ১২ দিনের মাথায় তাঁকে আলিপুরদুয়ারে বদলি করে দেওয়া হয়েছে।

হাসপাতাল সূত্রের খবর, সাধারণ ভাবে নার্সদের বদলি করা হয় না। কমপক্ষে দশ বছর চাকরির পরে পদোন্নতি হলে তখন বদলি করা হয়। তৃণমূল প্রভাবিত নার্সদের সংগঠন নন গেজেটেড হেল্থ এমপ্লয়িজ অ্যাসোসিয়েশনের জেলা সম্পাদক দুলালি সাহার অভিযোগ, ‘‘প্রকাশ্যে ক্ষোভ প্রকাশ করাতেই ওই নার্সকে বদলি করা হল।’’

জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক প্রকাশ মৃধার অবশ্য দাবি, ‘‘এই বদলির সিদ্ধান্ত রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের। আমার কিছু বলার নেই।’’ হাসপাতালের সুপার গৌতম মণ্ডলও এ ব্যাপারে সরাসরি উত্তর দেননি। তবে ফেসবুকে ক্ষোভ প্রকাশের পরে অর্পিতাকে শো কজ করা হয়েছিল। তার উত্তরও তিনি দিয়েছিলেন।

গত ৩০ মার্চ অর্পিতা নিজের ফেসবুক পেজে সিসিইউতে পড়ে থাকা রোগীদের শয্যার নোংরা বিছানার চাদর, অ্যাপ্রন ও গ্লাভসের একাধিক ছবি সহ একটি পোস্টে অভিযোগ করেন, হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ সিসিইউ-র একমাত্র বিকল ওয়াশিং মেশিন মেরামতের ব্যাপারে কোনও উদ্যোগী হচ্ছেন না। তাঁরা পরিস্থিতি দেখতেও সেখানে যাননি। নার্সদের নিয়মিত রোগীদের শয্যার বিছানার চাদর পাল্টে দিতে হয়। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের ভূমিকা লজ্জাজনক বলে তিনি মন্তব্য করেন। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের দায়িত্বজ্ঞানহীনতার জেরে আর কত দিন নার্সদের চাপে থাকতে হবে, সেই প্রশ্নও তোলেন তিনি। পুরো ঘটনার জন্য তিনি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে দায়ী করেন। রাজ্য স্বাস্থ্য দফতর হাসপাতালের চিকিত্সা পরিকাঠামো উন্নয়নের চেষ্টা চালালেও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ দায়িত্বজ্ঞানহীন বলেও ওই পোস্টে তিনি দাবি করেন। ওই ঘটনা জানাজানি হতেই মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিকের নির্দেশে তিন সদস্যের একটি দল অর্পিতার বিরুদ্ধে তদন্ত করে! পরবর্তীতে সেই তদন্তের রিপোর্ট রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের কাছে পাঠিয়ে দেয় জেলা স্বাস্থ্য দফতর। তাঁকে শো-কজও করা হয়।

সুপার গৌতমবাবু বলেন, ‘‘কোনও সরকারি কর্মী এই ভাবে প্রকাশ্যে ফেসবুকে অভিযোগ করতে পারেন না। সে কারণেই তাঁকে শো-কজ করা হয়েছিল।’’ অর্পিতার দাবি, সুপার অভিযোগ শোনেননি বলেই তিনি ফেসবুকে তা লিখেছেন।

কিন্তু অর্পিতা সিসিইউয়ের অবস্থা সম্বন্ধে যে অভিযোগ করেছেন, তা কি ঠিক? গৌতমবাবুর কথায়, ‘‘ওয়াশিং মেশিন খারাপ হতেই পারে। বিকল্প ওয়াশিং মেশিনও রয়েছে। আর এই ক্ষেত্রে এক দিন পরেই ওই ওয়াশিং মেশিন ঠিক করে দেওয়া হয়। সে ক্ষেত্রে এ সব কথা অবান্তর।’’

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE