হাসপাতালের তিন আর চার তলায় রয়েছে শিশু ও প্রসূতি বিভাগ। হাসপাতাল ভবনে লিফট নেই। ফলে চিকিৎসা নিতে আসা রোগীদের, প্রসূতিদের সিঁড়ি ভেঙে উঠতে হয় তিন ও চার তলায়। এখানেই শেষ নয়, হাসপাতালে আসা অনেকেই শয্যা পান না বলে অভিযোগ। তাঁদের বাধ্য হয়ে মেঝেয় থাকতে হয় বলে জানাচ্ছেন রোগীর আত্মীয়রা। শিলিগুড়ি জেলা হাসপাতাল নিয়ে উঠেছে এমনই অভিযোগ।
হাসপাতালের চিকিৎসকদের একাংশ জানাচ্ছেন, উন্নত পরিষেবা দিতে গেলে প্রসূতি বিভাগকে আলাদা করে তৈরি করতে হবে। লেবার রুম, ওটি নতুন করে সংস্কার করা প্রয়োজন বলেও জানাচ্ছেন চিকিৎসকেরা। হাসপাতাল সূত্রে বলা হয়েছে, প্রসূতি বিভাগে ৫০টি শয্যা রয়েছে। সেখানে মাঝেমধ্যে রোগী বেড়ে ৭০-৭৫ জনও ভর্তি থাকেন। ফলে অনেককে ঘরের মেঝেতে থাকতে হয়। রোগীদের দেখতে অনেক সময় দাঁড়ানোর জায়গা পায় না বলেই চিকিৎসকদের একাংশ জানিয়েছেন।
শিলিগুড়ি জেলা হাসপাতালের রোগী কল্যাণ সমিতির চেয়ারম্যান রুদ্রনাথ ভট্টাচার্য জানান, এক বছরেরও আগে শিশু ও প্রসূতি বিভাগের নতুন ভবন তৈরির জন্য স্বাস্থ্য দফতরে প্রস্তাব পাঠান হয়েছিল। স্বাস্থ্য দফতরের আধিকারিকরা জমি পরিদর্শন করেও গিয়েছিলেন। আর্থিক অনুদান মিললে শিশু এবং প্রসূতি বিভাগের জন্য নতুন ভবন তৈরির কাজ শুরু হবে বলে জানান তিনি। রুদ্রনাথবাবু বলেন, ‘‘জেলা হাসপাতালে যেভাবে রোগীর চাপ বাড়ছে তাতে নতুন ভবন তৈরি করা জরুরি।’’
জেলা হাসপাতালের দুই এবং তিনতলায় রয়েছে নিউ এবং ওল্ড লেবার ওয়ার্ড। চারতলায় রয়েছে শিশু ওয়ার্ড। হাপসাতালের অন্য ভবনগুলোয় দু’টি লিফট থাকলেও শিশু ও প্রসূতি বিভাগের ওই ওয়ার্ডে কোনও লিফট নেই। ফলে অসুস্থ শিশুকে কোলে নিয়ে সিঁড়ি ভেঙে উপরে উঠতে হয় অভিভাবককে। অসুস্থ প্রসূতিকেও সিঁড়ি বেয়েই উঠতে হয় উপরে। লেবার রুম, ওটি-ও দীর্ঘ দিনের পুরনো। সেগুলোও সংস্কার করার দাবি জানিয়েছেন রোগীদের একাংশের।
সোমবার মেয়েকে নিয়ে শিলিগুড়ি জেলা হাসপাতালে শিশু বিভাগে গিয়েছিলেন হায়দারপাড়ার তরুণ মিত্র। তিনি তাঁর অসুস্থ মেয়েকে কোলে করে উপরে তোলেন। জানান, জরুরি বিভাগে চিকিৎসককে দেখানোর পরে অনেকটা দূরে শিশু বিভাগে আসতে হয়। তিনি বলেন, ‘‘রোগীকে কোলে করে উপরে উঠতে যে কোনও দিন দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। আমাদের অসুবিধের দিকটা অন্তত দেখা উচিত।’’ এ দিনই দেখা গেল এক ব্যক্তি তাঁর অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রীকে নিয়ে উপরে উঠছেন। সমস্যার কথা জিজ্ঞেস করতেই ক্ষোভে ফেটে পড়লেন তিনি। বলেন, ‘‘লেবার ওয়ার্ডে যেতে লিফট নেই। রোগীকে চেয়ারে তুলে নিয়ে যাওয়া যায় না। হাসপাতালে এসে ভয় লাগছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy