ভোগান্তি: শয্যা নেই, মশারিও। শিলিগুড়ি হাসপাতালে। নিজস্ব চিত্র
জ্বরের রোগীতে ভরে গিয়েছে হাসপাতাল। সকলকে বিছানাও দেওয়া যায়নি। ফলে অনেকেরই ঠাঁই হয়েছে করিডরে। যাঁরা শয্যা পেয়েছেন, তাঁদের আবার মশারি দিতে পারেনি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। তাতে আতঙ্ক বেড়েছে রোগী এবং তাঁদের আত্মীয়দের মধ্যে। অভিযোগ উঠেছে, হাপিত্যেশ করে পথ চেয়ে বসে থাকতে হচ্ছে ডাক্তারদের জন্যও। সেই নিয়ে বলতে গিয়ে নার্সদের মুখ ঝামটা খেতে হচ্ছে বলেও অভিযোগ।
একনজরে এটাই শিলিগুড়ি জেলা হাসপাতালের ছবি।
হাসপাতালের মেডিসিনের পুরুষ, মহিলা এবং আইডি ওয়ার্ডে জ্বরের রোগী গিজগিজ করছে। ৩৬ শয্যার পুরুষ, মহিলা মেডিসিন ওয়ার্ডে রোগী রয়েছেন ৯০-৯৫ জন করে। ৬০ শতাংশই জ্বরের রোগী। একই শয্যায় দু’জন করে রেখেও কুল পাচ্ছেন না কর্তৃপক্ষ। ওয়ার্ডের মেঝেতে যে বিছানা করা হয়েছে, তাতেও দু’জন করে রাখতে হচ্ছে। ওয়ার্ডের বাইরে করিডর, সিঁড়ির চাতালে, মেঝেতে ঠাঁই হয়েছে অনেক রোগীরই। সেখানে ফ্যান নেই, মশারি নেই। মশার কামড়ে অতিষ্ট হয়ে উঠেছেন রোগীরাই। এই পরিস্থিতি দেখে হাসপাতালে রোগীদের রাখা ঠিক হবে কি না, তা নিয়েই ধন্দে পড়েছেন পরিবারের লোকেরা।
শিলিগুড়ির ডেঙ্গি-চিত্র
• মৃত্যু ৩ জনের
• স্বাস্থ্য দফতরের হিসেবে আক্রান্ত ১৯০ (জুলাই থেকে)
• বেসরকারি সূত্রে দাবি, এ বছর আক্রান্ত ৪০০
শিলিগুড়ি জেলা হাসপাতাল
• ডেঙ্গি আক্রান্ত হয়ে ভর্তি ৪ জন
• ডেঙ্গি সন্দেহে জ্বর নিয়ে আরও অন্তত ৩০ জন বাসিন্দা
• জ্বর নিয়ে ১১০ জন
উত্তরবঙ্গ মেডিক্যালে
• ডেঙ্গি সন্দেহে ভর্তি অন্তত ১০
• জ্বরের রোগী ৭০ জন
শহরের নানা নার্সিংহোম
• ডেঙ্গি সন্দেহে ভর্তি অন্তত ১৪০ জন
ডেঙ্গি সন্দেহে হাসপাতালের আইডি ভর্তি করে জ্বরের রোগী। তাঁদের মধ্যে রয়েছেন পেটের ব্যথায় অসুস্থ গৌরাঙ্গ দাস। তিনি বলেন, ‘‘ডেঙ্গি, জ্বরের রোগীদের মশারি নেই। মশা ঘুরছে। আমাদের মতো রোগীরাও তো এর পর ডেঙ্গিতে অসুস্থ হয়ে পড়ব।’’ জ্বর এবং ডেঙ্গি সন্দেহে রবিবার হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন দশরথপল্লির বাসিন্দা শুভ মোহন্ত, ডিজেল কলোনির রতন দাস, উজ্জ্বল বারুইরা। সকলেরই ঠাঁই এখন করিডরে। উজ্জ্বলবাবুর স্ত্রী পিঙ্কি দেবী বলেন, ‘‘আমাদের মতো পরিবারের লোকদের নার্সিংহোমে রোগীকে রাখার সামর্থ্য নেই। সোমবার বেলা ১২টা পর্যন্ত কোনও চিকিৎসক দেখে যায়নি। মশারি নেই। সারা রাত মশার কামড় খেতে হচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে হাসপাতালে রোগীকে রাখতেই ভয় পাচ্ছি।’’ চার নম্বর ওয়ার্ডের আদর্শনগরের বাসিন্দা মেহেবুজ আলম জ্বর নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন। তাঁর মা সালেবা খাতুন বলেন, ‘‘সকাল থেকে ছেলের শরীর ভাল লাগছে না। তাই নার্সকে জিজ্ঞাসা করি, ডাক্তারবাবু কখন আসবেন? উল্টে তাঁরা আমাকে ধমক দেন।’’ হাসপাতালের সুপার অমিতাভ মণ্ডল অবশ্য বলেন, ‘‘মশারির বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে দেখা হচ্ছে।’’ তাঁর দাবি, মেডিকেটেড মশারি মজুত রয়েছে। জানলায় নেটও দেওয়া রয়েছে। ডাক্তারের অভাব নার্সদের ব্যবহার নিয়েও প্রশ্ন করা হয় তাঁকে। তিনি জানান, নজর রাখছে হাসপাতাল।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy