হাসপাতালের উদ্বোধন। — নিজস্ব চিত্র
গঙ্গা-ফুলহার-কোশী, এই তিন নদী দিয়ে ঘেরা মানিকচক ব্লকের ভুতনির চরে মঙ্গলবার চালু হল ১০ শয্যার হাসপাতাল। এ দিন দুপুরে হাসপাতালের উদ্বোধন করেন মালদহের জেলাশাসক শরদ দ্বিবেদী। ছিলেন জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক দিলীপকুমার মণ্ডল, বিডিও উৎপল মুখোপাধ্যায়, বিএমওএইচ জয়দীপ মজুমদার, জেলা পরিষদের সদস্য গৌর মণ্ডল প্রমুখ।
এ দিন প্রাথমিক স্বাস্থকেন্দ্রের যে ভবনে হাসপাতাল চালু হল সেখান এতদিন শুধুমাত্র বর্হিবিভাগ চালু ছিল। এ দিন থেকে সেখানে থাকবে ১০টি শয্যা। থাকবে প্রসবের ব্যবস্থাও। ওই হাসপাতালে দু’জন চিকিৎসক, চারজন নার্স ও একজন করে জিডিএ ও সাফাই কর্মী নিয়োগ করা হয়েছে।
প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র থাকলেও নদী ঘেরা মানিকচক ব্লকের ভুতনিতে তিন বছর আগেই পিপিপি মডেলে একটি ১০ শয্যার হাসপাতাল চালু হওয়ার কথা ছিল। লক্ষ্য ছিল ওই হাসপাতালে অন্তত প্রসবের ব্যবস্থা করতে হবে। কিন্তু চার বছর আগে প্রস্তাবিত সেই হাসপাতাল ভবন তৈরির কাজ শুরু হলেও এখনও তা অর্ধসমাপ্ত হয়ে পড়ে আছে। এদিকে, মালদহ জেলাজুড়েই স্বাস্থ্য দফতর ও প্রশাসন মিলে প্রাতিষ্ঠানিক প্রসবের সংখ্যা বাড়াতে পদক্ষেপ করেছে। জেলায় চালু হয়েছে আনন্দী প্রকল্পও। কিন্তু সেই প্রকল্পের ফলাফল ভুতনির তিনটি গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় পৌঁছাচ্ছে না। জেলায় গড় প্রাতিষ্ঠানিক প্রসবের হার যেখানে ৭৬ শতাংশ, সেখানে ভুতনিতে সেই হার মাত্র ১০-১২ শতাংশ। ফলে বিপাকে পড়ে স্বাস্থ্য দফতর ভুতনিতে থাকা প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রটিকেই মেরামত করে চালু করলো ১০ শয্যার ওই হাসপাতাল। মালদহ জেলায় প্রাতিষ্ঠানিক প্রসবের হার আগামী মার্চ মাসের মধ্যে ৮৫ শতাংশে নিয়ে যাওয়ার লক্ষ্য রয়েছে। কিন্তু সেই লক্ষ্য থেকে ভুতনি যেন বাদ না যায় সেজন্যই আজ থেকে সেখানে চালু হতে চলেছে ১০ শয্যার হাসপাতালটি।
চারদিক নদী দিয়ে ঘেরা মানিকচক ব্লকের ভুতনিতে থাকা হীরানন্দপুর এবং উত্তর ও দক্ষিণ চণ্ডিপুর এই তিনটি গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকা পুরোপুরি বিচ্ছিন্ন। মূল ব্লকের সঙ্গে সরাসরি সংযোগের জন্য ফুলহার নদীর ওপর একটি সেতু তৈরির কাজ চলছে। সেই সেতু তৈরি হতেও লাগবে দীর্ঘ সময়। এখনও ওই তিন এলাকার লক্ষাধিক মানুষ নৌকায় পারাপার করেই যাতায়াত করেন। স্বাস্থ্য দফতরের কর্তাদের দাবি, মূলত যাতায়াতের অসুবিধের জেরেই ওই তিনটি গ্রাম পঞ্চায়েতে প্রাতিষ্ঠানিক প্রসব বাড়ছে না। সেখানে এখনও বাড়িতেই প্রায় ৯০ শতাংশ প্রসব হয়। বারবার সচেতনতার প্রচার করেও পরিস্থিতি বদলানো যায়নি বলে আধিকারিকদের দাবি। ভুতনির গর্ভবতী মহিলারা যাতে মানিকচক ব্লক বা গ্রামীণ হাসপাতালে এসে প্রসব করায় তার জন্য রাত্রিকালীন নৌকা পরিষেবাও চালু করেছিল স্বাস্থ্য দফতর। কিন্তু তাতেও চিত্র বিশেষ পাল্টায়নি। যার জন্য এই ব্যবস্থা নেওয়া হল। এর সঙ্গে চিকিৎসত ও নার্সদের আবাসনও সংস্কার করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক দিলীপকুমার মণ্ডল। জেলা পরিষদের তৃণমূলের সদস্য গৌর মণ্ডল বলেন, ‘‘ভোট প্রচারে এসে ভুতনির মানুষকে হাসপাতালের আশ্বাস দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। এ দিন সেই প্রতিশ্রুতি রক্ষা হল।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy