ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র দুর্গাপ্রতিমা গড়ছেন রায়গঞ্জের শিল্পী মানস রায়। —নিজস্ব চিত্র।
কাঠামো বলতে মাত্র একটি দেশলাই কাঠি। তার উপরেই কাঠ-খড়-মাটির প্রলেপ। তাতে চড়ছে রঙের আঁচড়। এ ভাবেই ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র দুর্গাপ্রতিমা গড়ছেন রায়গঞ্জের শিল্পী মানস রায়। এ প্রতিমা উচ্চতায় মাত্র ২ মিলিমিটার! আকারে যা একটি পিঁপড়ের থেকেও ছোট। মানস জানিয়েছেন, দশভুজার ক্ষুদ্রতম প্রতিমা গড়ে গিনেস বুক অব রেকর্ডস-এ নাম তোলাই তাঁর লক্ষ্য।
রায়গঞ্জ শহরের বীরনগরে মানসের একচিলতে ঘরে এই মুহূর্তে চূড়ান্ত ব্যস্ততা। ঘর জুড়ে ছড়িয়েছিটিয়ে দেশলাই কাঠি, রং-তুলি, খড়-মাটি। রাতের পর রাত জেগে টেবিল-বাতির আলোর নীচে চলছে দুর্গাপ্রতিমা গড়ার কাজ। প্রতিমা আকারে এতটাই ক্ষুদ্র যে, ভাল করে দেখতে হলে আতশকাচের সাহায্য নিতে হয়। মানস জানিয়েছেন, এর আগে ৬, ৫ বা ৩ মিলিমিটারের দুর্গা বানিয়েছেন তিনি। তবে এই প্রথম ২ মিলিমিটারের প্রতিমা তৈরি করছেন। শুধু দুর্গাই নয়, সঙ্গে দেশলাইয়ের কাঠামোয় লক্ষ্মী-সরস্বতী, কার্তিক-গণেশ, অসুর বা সিংহও রয়েছে। তাঁর কথায়, ‘‘একটা পিঁপড়ের থেকেও ছোট আকারে দুর্গাপ্রতিমা তৈরি করছি। আগে ৩, ৫ বা ৬ মিলিমিটার দৈর্ঘ্যের প্রতিমা তৈরি করেছি। তবে এ বার সেটা আরও ছোট করার চেষ্টা করেছি।’’
পেশায় কমার্শিয়াল আর্টিস্ট মানসের কাজের পরিধি কমে গিয়েছিল গত বছর লকডাউনের সময়। তার পর একটি চশমার দোকান খোলেন তিনি। ওই দোকান করার পাশাপাশি মিনিয়েচার আর্টিস্ট হিসাবেও কাজ শুরু করেছেন। মানস বলেন, ‘‘আমি আদতে কমার্শিয়াল আর্টিস্ট। তবে লকডাউনে সে সমস্ত কাজ কমে যাওয়ায় চশমার দোকান করেছিলাম। দোকানের পাশাপাশি রাত জেগে এই কাজও করি।’’ কেন দুর্গাপ্রতিমা তৈরির দিকে ঝোঁক তৈরি হল? মানস বলেন, ‘‘ছোট থেকে দুর্গাপ্রতিমা তৈরির দিকে আমার ঝোঁক রয়েছে। সে জন্যই এ কাজ করা। তবে সবচেয়ে ছোট দুর্গাপ্রতিমা তৈরি করে গিনেস বুক অব রেকর্ডস-এ নাম তুলতে চাই।’’
মানসের কাজ নিয়ে উৎসাহী তাঁর প্রতিবেশী অরিন্দম কুন্ডু। পেশায় শিক্ষক অরিন্দম বলেন, ‘‘এত ছোট প্রতিমা যে তৈরি করা যেতে পারে তা কখনও শুনিনি, দেখিওনি। মানস রায়গঞ্জের গর্ব। আমি মনেপ্রাণে চাই ওঁর নাম গোটা বিশ্বে ছড়িয়ে পড়ুক।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy