কোচবিহারে চলছে বৈঠক। — নিজস্ব চিত্র
অসম বন্ধের জেরে কোচবিহারে ৩১ নম্বর জাতীয় সড়কে যানজট নিয়ে উদ্বিগ্ন প্রশাসন।
শুক্রবার কোচবিহার সার্কিট হাউসে অসমের কোকরাঝাড়, ধুবুরির পাশাপাশি প্রতিবেশী আলিপুরদুয়ার, জলপাইগুড়ির পুলিশ, প্রশাসনের কর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেন কোচবিহারের প্রশাসনিক কর্তারা। ওই বৈঠকে পুলিশ, বিএসএফ, আবগারি, রেল দফতরের প্রতিনিধিরাও উপস্থিত ছিলেন। প্রশাসন সূত্রের খবর, বৈঠকে নির্বিঘ্নে উপনির্বাচনের ভোট গ্রহণ সম্পন্ন করার ব্যাপারে ওই জেলাগুলির পুলিশ-প্রশাসনের মধ্যে সমন্বয় রেখে কাজ করার ব্যাপারে জোর দেওয়া হয়েছে। সেই সঙ্গে অসমে বন্ধের জেরে কোচবিহারে উদ্ভুত যানজট সমস্যা নিয়েও উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়। পরিস্থিতি পর্যালোচনার পর অসম প্রশাসনের কর্তারা উপনির্বাচনের মুখে তেমন সমস্যার পরিস্থিতি তৈরি হলে বিকল্প রাস্তা দিয়ে যানবাহন সরিয়ে নেওয়ার ব্যাপারে আশ্বাস দেন। কোচবিহারের জেলাশাসক পি উল্গানাথন বলেন, “কোকরাঝাড়ে বন্ধ চলার জন্য কিছু অসুবিধে হচ্ছে। আমরা বলেছি, এরকম হলে নির্বাচন করতে অসুবিধে হবে। ওরা বিকল্প রুটে যানবাহন বের করানোর ব্যাপারে ব্যবস্থা করবে। সমস্ত সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছে। আশা করছি সুষ্ঠু ভাবে নির্বাচন সম্পন্ন হবে।”
প্রশাসন সূত্রেই জানা গিয়েছে, মঙ্গলবার থেকে অসমে আক্রাসু সহ একাধিক সংগঠন তিন দিনের জন্য বন্ধের ডাক দেয়। যার জেরে অসম সহ উত্তর-পূর্ব ভারতের বিভিন্ন রাজ্যগামী কয়েক হাজার পণ্যবাহী ট্রাক কোচবিহার জেলার ৩১ নম্বর জাতীয় সড়কে আটকে পড়ে। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় বন্ধের সময়সীমা পেরোলেও সমস্যা পুরোপুরি মেটেনি।
শুক্রবারেও ওই রাস্তায় বিক্ষিপ্তভাবে যানজট ছিল। কোচবিহার-তুফানগঞ্জ সরাসরি যোগাযোগেও দুর্ভোগে পড়েন বাসিন্দারা। টানা তিন দিন ঘুরপথে বেশিরভাগ বাস ওই রুটে চলাচল করে। উপনির্বাচনের মুখে ফের তেমন সমস্যা হলে কী ভাবে দ্রুত পুলিশ-প্রশাসনের কর্তারা গন্তব্যে পৌঁছবেন স্বাভাবিক ভাবে, তা নিয়ে চিন্তা বেড়েছে কোচবিহারের প্রশাসনিক কর্তাদের একাংশের। এমনকি ভোটের আগে কোন সমস্যায় অসমে যান চলাচল ব্যাহত হলে ভোটকর্মীরা কী ভাবে বুথে যাবেন, সে প্রশ্ন উঠেছে। সব মিলিয়েই এদিনের বৈঠকে বিকল্প রুটে নিয়ে ভাবনা চিন্তার প্রসঙ্গ ওঠে। জেলা প্রশাসনের এক কর্তা জানিয়েছেন, গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় কোন রুট দিয়ে বিকল্প ভাবে যানবাহন সচল রাখা যায়, তা নিয়ে প্রাথমিক খোঁজখবরও শুরু করেছেন অসমের জেলা প্রশাসনের কর্তারা।
এ ছাড়াও এ দিনের বৈঠকে বেআইনি ভাবে মদের পাচার, দুষ্কৃতী দৌরাত্ম্য বন্ধ, নাকা চালু, তথ্য আদানপ্রদানের ব্যাপারেও আলোচনা হয়। বিএসএফকে সীমান্তে নজরদারি বাড়াতে বলা হয়। বিএসএফ তা শুরুও করেছে। দুষ্কৃতী ও জঙ্গি দৌরাত্ম্যের আশঙ্কা নিয়েও পুলিশের সতর্কতা বাড়ানর ব্যাপারেও বিশদে আলোচনা হয়েছে।
পুলিশ জানিয়েছে, কোচবিহারের বক্সিরহাট ও আলিপুরদুয়ারের শ্রীরামপুর হয়ে অসমের সঙ্গে উত্তরের দুই জেলার যোগাযোগ চালু রয়েছে। আগে অসম থেকে ঢুকে পড়া সন্দেহভাজন জঙ্গি গ্রেফতারের নজিরও রয়েছে। তার ওপর কোচবিহারের কিছু ভোটকেন্দ্রে আলিপুরদুয়ার সীমানা হয়ে কর্মীদের যেতে হবে। সব মিলিয়ে তাই আটোসাঁটো নিরাপত্তার ব্যাপারে কোন ঝুঁকিই নিতে চাইছে না জেলা প্রশাসন। জেলাশাসক জানিয়েছেন, কাটাঁতারের বেড়ার ওপারে বসবাসকারী ভোটারদের নিয়েও আলোচনা হয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy