Advertisement
০৬ নভেম্বর ২০২৪

বাসযাত্রায় দুর্বিপাক

গত তিন দিনে এনবিএসটিসি-র বাস দু’দিন পাহাড়ে চলেনি। এক দিন তিনধারিয়ায় বিক্ষোভের মুখে পড়ে ফিরে এসেছে। কালিম্পঙে অবশ্য তিনটি বাস এ দিন যাতায়াত করতে পেরেছে। রাতে ট্রাক ও ছোট গাড়িতে রসদ গেলেও তাতে মালিকেরা থাকেন।

পরিবহণ সমস্যায় জেরবার সিকিম। ছবি: এএফপি।

পরিবহণ সমস্যায় জেরবার সিকিম। ছবি: এএফপি।

কৌশিক চৌধুরী
শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ০৩ জুলাই ২০১৭ ০৩:৪৭
Share: Save:

দার্জিলিংয়ের লেবঙের বাসিন্দা পাহাড়ি দম্পতি। স্কুল পড়ুয়া ছেলের দাঁতে মারাত্মক সংক্রমণ। গত দু’দিনে শিলিগুড়ি পৌঁছানোর জন্য সরকারি বাসে ওঠার চেষ্টা করে বিফল হন। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে শনিবার মাঝরাতে এক বন্ধুর গাড়ি নিয়ে সমতলে নেমেছেন। এর কয়েক ঘণ্টা আগে-পরেই রাস্তায় একাধিক দমকলের ইঞ্জিন, গাড়ি জ্বালানোর ঘটনা ঘটে।

জলপাইগুড়ি ও কোচবিহারের বাসিন্দা দুই সরকারি কর্মী। গত শুক্রবার তাঁদের ২৪ ঘণ্টার মধ্যে পাহাড়ে রিপোর্ট করতে বলা হয়। গাড়ি তো দূরের কথা, বাসও ঠিকঠাক নেই। মালবাজারের এক পরিচিত চালককে তিন গুণ টাকায় রাজি করিয়ে, কালিম্পং হয়ে রাত ২টোয় দার্জিলিং গিয়েছেন। ভোরের আগেই ফিরে এসেছেন চালক।

সিকিম বিশ্ববিদ্যালয়ের এক অফিসার গোলমালের সময় কোনও মতে সমতলে নেমেছিলেন। এখন যা চলছে, তাতে আগামী সপ্তাহে সিকিমের বাস চলবে কি না, সন্দেহ। অফিসারটি সংশয়ে পড়ে গিয়েছেন। এই অবস্থায় দার্জিলিং, সিকিমের অনেক বাসিন্দাই কড়া সুরক্ষা ব্যবস্থায় সরকারি বাস যাতায়াতের দাবি তুলেছেন। নিরাপত্তার কথা ভেবে দায়িত্ব সেনাকে দেওয়ার দাবিও তুলেছেন যাত্রীদের একাংশ।

রবিবার দু’টি সরকারি বাস দার্জিলিং গেলেও সেগুলিকে আর ফিরতে দেওয়া হয়নি। তেমনই, সিকিমের একটি বাসে পাথর ছোড়ার ঘটনা সামনে এসেছে। গত দুই সপ্তাহে দুটি বাস পোড়ানো হয়েছে। পাহাড়ের এক দল বাসিন্দা জানিয়েছেন, বাসিন্দাদের নানা সময়ে আপৎকালীন পরিস্থিতি তৈরি হচ্ছে। চিকিৎসা, চাকরি-সহ নানা বিষয় সামনে আসছে। তখন আর যাতায়াতের উপায় থাকছে না। প্রথম দিকে দুধ, সংবাদপত্র বা জলের গাড়ি মিললেও তা ভাঙচুরের পরে বন্ধ। মোর্চার আন্দোলনের পর থেকে সরকারি বাসই মূল পরিবহণের মাধ্যম হলেও, প্রতিদিন তার যাতায়াত নিয়ে অনিশ্চয়তা তৈরি হচ্ছে। ভাঙচুর, আগুন যে ভাবে চলছে, তাতে পরিস্থিতি ক্রমে জটিলতর হচ্ছে। চালক, কন্ডাক্টরদের একাংশ নিরাপত্তার অভাব বোধ করছেন।

সিকিমের রাষ্ট্রীয় পরিবহণের (এসএনটি) বাসকে ঘিরে একাধিকবার বিক্ষোভের পর থেকে শহরের ডিপোয় বাস ফাঁকাই করে দেওয়া হয়। রংপো, নামচি বা গ্যাংটক থেকে বাস সমতলে এলেও সেগুলির যাতায়াত নিয়েও অনিশ্চয়তা থাকছে। গত তিন দিনে এনবিএসটিসি-র বাস দু’দিন পাহাড়ে চলেনি। এক দিন তিনধারিয়ায় বিক্ষোভের মুখে পড়ে ফিরে এসেছে। কালিম্পঙে অবশ্য তিনটি বাস এ দিন যাতায়াত করতে পেরেছে। রাতে ট্রাক ও ছোট গাড়িতে রসদ গেলেও তাতে মালিকেরা থাকেন। তেমনিই কোন গাড়ি কোথা থেকে চালানো হচ্ছে, তা কেউ জানে না।

এনবিএসটিসি-র ডিভিশনাল ম্যানেজার বিকাশ দাস বা এসএনটি-র এজিএম এইচএল লামিচানে জানিয়েছেন, সকাল থেকে সামগ্রিক পরিস্থিতি এবং নিরাপত্তা কতটা রয়েছে, সে সব দেখেই বাস চালাতে হচ্ছে।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE