গরুমারা জাতীয় উদ্যানে পরপর দু’টি এক শৃঙ্গ গন্ডার হত্যার পিছনে মণিপুরের জঙ্গি সংগঠনগুলির হাত রয়েছে বলে জানিয়ে দিলেন রাজ্যের বনমন্ত্রী বিনয়কৃষ্ণ বর্মন। বুধবার বিকেলে শিলিগুড়ি লাগোয়া বেঙ্গল সাফারি পার্কের একটি অনুষ্ঠানে এসেছিলেন বনমন্ত্রী। তিনি জানান, তদন্ত কমিটির রিপোর্টে এমনই তথ্য রয়েছে। বিনয়বাবু বলেন, ‘‘ওই ঘটনায় মণিপুরের জঙ্গি সংগঠনগুলির কিছু যোগসূত্র পাওয়া যাচ্ছে। এরা অস্ত্র, মাদকের পাশাপাশি বন্যপ্রাণ চোরাশিকারে জড়িত। মুখ্যমন্ত্রীকে আমরা সব জানিয়েছি। সিআইডি তদন্ত শুরু হয়েছে। আমরা নজরদারির জন্য লোকবল বাড়ানো-সহ নানা প্রক্রিয়া শুরু করেছি।’’
এপ্রিল মাসের শেষ নাগাদ গরুমারার জঙ্গল থেকে দু’টি গন্ডারের পচাগলা দেহ উদ্ধার হয়। যা নিয়ে গোটা রাজ্যে হইচই পড়ে যায়। দু’টি ক্ষেত্রেই গন্ডারের শৃঙ্গ কেটে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।
ফেব্রুয়ারি এবং মার্চ মাস নাগাদ গন্ডার দু’টিকে হত্যা করা হয়েছে বলে পরে তদন্তে জানা গিয়েছে। তার আগেই গত ১৪ মার্চ অসমের কামরূপের কাছে একটি গাড়ি দুর্ঘটনায় তিন জনের মৃত্যু হয়। জখম হন একজন। গাড়ি থেকে একটি গন্ডারের শৃঙ্গ উদ্ধার হয়েছিল। পরে জখম ব্যক্তিকে জেরা করে জানা গিয়েছিল উত্তরবঙ্গের জঙ্গলেই শিকার করা হয়েছে গন্ডার দু’টিকে। অসম সরকার এ রাজ্যের বন দফতরের সঙ্গে যোগাযোগ করে। যদিও সেই সময় কোনও গন্ডারের দেহের খোঁজ মেলেনি।
সিআইডি সূত্রের খবর, অভিযুক্তরা সকলে মণিপুরের চূড়াচান্দপুরের বাসিন্দা। দুর্ঘটনায় তিনজন মারা গেলেও জীবিত ওই ব্যক্তি এখনও অসমের একটি জেলে বন্দি। অভিযুক্তদের সঙ্গে মণিপুরের একটি জঙ্গি সংগঠনের সরাসরি যোগ রয়েছে। একটি গন্ডার সম্ভবত ফেব্রুয়ারি মাসে মারা হয়। সেটির শৃঙ্গ মণিপুর হয়ে সম্ভবত মায়ানমারে পাচার হয়ে গিয়েছে। সিআইডির অফিসারেরা অসম এবং মণিপুরে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে।
এ দিন বনমন্ত্রী বলেন, ‘‘বনরক্ষী, বিট অফিসার এবং রেঞ্জারদের সংখ্যা দ্রুত বাড়ানো হচ্ছে। এসএসসি-র মাধ্যমে সময় বেশি লাগায় পুলিশ রিক্রুটমেন্ট বোর্ডের মাধ্যমে নিয়োগ করা হবে। এতে আগামী ছ’মাসের মধ্যে ২৬৯ বনরক্ষী, ১৩১ জন বিট অফিসার এবং ২৭ জন রেঞ্জার প্রশিক্ষণের পর কাজে যোগ দেবেন। সবার কাছে ছোট আগ্নেয়াস্ত্র রাখার ব্যাপারে সরকারকে প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। আশা করছি, তাও অনুমোদন হয়ে যাবে।’’
এ দিন বেঙ্গল সাফারিতে নানা ধরণের বিদেশি পাখি, মযূর, ভাম-সহ ১৪ প্রজাতির নতুন বন্যপ্রাণ সাফারির উদ্বোধন করেন বনমন্ত্রী। তিনি জানান, পুজোর আগেই ২০ হেক্টরে হিমালয়ান ব্ল্যাক বিয়ার সাফারি চালু হবে। পরে মন্ত্রী সাফারি পার্কটি ঘুরে দেখেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy