Advertisement
০৫ নভেম্বর ২০২৪
Madhyamik 2020

প্রশ্নের প্যাঁচ প্রথমেই

স্কুল সূত্রে জানা যায়, পরীক্ষাকেন্দ্রে মোবাইল ফোন বার করে উত্তর লিখতে গিয়ে ধরা পড়েছে কয়েক জন পরীক্ষার্থী।

শেষ-মুহূর্তে: আলিপুরদুয়ারে একটি পরীক্ষাকেন্দ্রে। ছবি: নারায়ণ দে

শেষ-মুহূর্তে: আলিপুরদুয়ারে একটি পরীক্ষাকেন্দ্রে। ছবি: নারায়ণ দে

নীতেশ বর্মণ
শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০২০ ০২:২০
Share: Save:

পরীক্ষা শুরু হয়েছে সব ঘণ্টাখানেক। হঠাৎই পরীক্ষাকেন্দ্রের বাইরে অপেক্ষারত অভিভাবক ও পরীক্ষার্থীদের পরিবারের লোকজন পেয়ে যান বাংলার প্রশ্নপত্র। সেটি এ বারের কিনা, তা অবশ্য তখনও স্পষ্ট নয়। এর মধ্যে স্কুলের মধ্যেও হট্টগোল শুরু হয়।

স্কুল সূত্রে জানা যায়, পরীক্ষাকেন্দ্রে মোবাইল ফোন বার করে উত্তর লিখতে গিয়ে ধরা পড়েছে কয়েক জন পরীক্ষার্থী। তাদের জেরা শুরু হয়। ১৮ জনের কাছ থেকে মোট ১৯টি মোবাইল ফোন বাজেয়াপ্ত করা হয়। তারা নিয়মিত পরীক্ষার্থী নয়। পরীক্ষা পরিচালনার কাজে যুক্ত শিলিগুড়ি শিক্ষা জেলার যুগ্ম আহ্বায়ক রাম ছেত্রী জানান, এই পরীক্ষার্থীদের এ দিনের পরীক্ষা বাতিল করা হয়েছে। মঙ্গলবার বাগডোগরার শুভমায়া সূর্যনারায়ণ হাইস্কুলের ঘটনা।

এ দিন মাধ্যমিকে প্রথম ভাষার পরীক্ষা ছিল। অভিযোগ, সাড়ে ১২টার কিছু পরে বাগডোগরার ওই স্কুলের পরীক্ষাকেন্দ্রের বাইরে মির স্যামুয়েলের নামে এক যুবকের হোয়াটসঅ্যাপে প্রশ্নপত্র মেলে। তাঁর দাবি, তিনি মালদহের তার এক বন্ধুর কাছে ওই প্রশ্নপত্র পেয়েছেন। বাগডোগরার পরীক্ষাকেন্দ্রে পরীক্ষা দিচ্ছিলেন তার বন্ধু শেখ সাবিক। স্যামুয়েল জানান, উত্তরও পাওয়া যাচ্ছে হোয়াটসঅ্যাপে। আর তা পরীক্ষার্থীর মোবাইলে দেওয়া হচ্ছে। তিনি বলেন, ‘‘এ রকম হয়েই থাকে।’’

এর পরেই অভিযোগ ওঠে, ওই কেন্দ্রে বহিরাগত একদল পরীক্ষার্থী নিয়ম ভেঙে মোবাইল ফোন নিয়ে পরীক্ষা দিতে ঢুকেছে। একটি ‘হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ’ খুলে তাদের সকলের মধ্যে প্রশ্ন-উত্তরপত্র সরবরাহ করা হচ্ছিল, জানান স্কুলে পরিদর্শকের দায়িত্বে থাকা আধিকারিকদের কয়েক জন। তাঁরা জানান, পরীক্ষাকেন্দ্রে এক ছাত্রী মোবাইল বার করে লিখতে গেলে বিষয়টি প্রথম নজরে আসে কর্তব্যরত শিক্ষকের। তিনি মোবাইলটি নিয়ে পরীক্ষা করে দেখেন প্রশ্ন এবং উত্তর চালাচালি হচ্ছে। সেন্টার ইনচার্জকে জানালে ওই ছাত্রীকে জেরা করে একে একে ১৮ জনের কাছে মোবাইল ফোন মেলে। এক জনের কাছে দু’টি মোবাইল ছিল। যুগ্ম আহ্বায়ক জানান, বাজেয়াপ্ত মোবাইলগুলো শিক্ষা দফতরের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে। তারাই খতিয়ে দেখবে। পরের পরীক্ষাগুলিতে পরীক্ষার্থীদের তল্লাশি করে কেন্দ্রে ঢোকানোর নির্দেশ
দেওয়া হয়েছে।

ওই পরীক্ষার্থীদের মোবাইল থেকেই প্রশ্ন ফাঁস হয়েছে কি না, সেই প্রশ্নও উঠেছে। শিলিগুড়ি শিক্ষা জেলার ডিআই রাজীব প্রামাণিক বলেন, ‘‘বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে। মধ্যশিক্ষা পর্ষদের কর্তাদের সমস্ত ঘটনা জানান হয়েছে।’’ পর্ষদের উত্তরবঙ্গ আঞ্চলিক দফতরের একটি সূত্রে জানা গিয়েছে, বাগডোগরার ওই স্কুলে অন্য জেলা থেকে ১১০ জন পরীক্ষার্থী পরীক্ষা দিচ্ছে। তারা সকলেই বাগডোগরার চিত্তরঞ্জন হাইস্কুলের ছাত্র হয়ে পরীক্ষায় বসেছেন। ওই পরীক্ষার্থীরা হরিশ্চন্দ্রপুর, হবিবপুর, মানিকচক-সহ মালদহের বিভিন্ন জায়গার বাসিন্দা। তারা মালদহের স্কুল থেকে পরীক্ষা না দিয়ে কেন বাগডোগরা চিত্তরঞ্জন হাইস্কুল থেকে পরীক্ষা দিচ্ছে, সেই প্রশ্নও উঠেছে। এর পিছনে কোনও চক্র সক্রিয় কিনা, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

এ বছর রাজ্যের বেশ কিছু ব্লকে পরীক্ষা চলাকালীন নেট বন্ধ থাকছে। যার মধ্যে মালদহও আছে। বাগডোগরা চিত্তরঞ্জন হাইস্কুল কর্তৃপক্ষের দাবি, পর্ষদ থেকে তাঁদের ওই বহিরাগত ছাত্রদের ভর্তি নিতে বলা হয়েছিল। নিয়ম মাফিক তাঁরা ভর্তি নিয়েছেন। পর্ষদ বিষয়টি তদন্ত করে দেখছে।

অন্য বিষয়গুলি:

Madhyamik 2020 Bengali Question
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE