কোচবিহার মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল। ফাইল চিত্র
নিছক দুর্ঘটনা, না অন্তর্ঘাত? অথবা, স্রেফ গাফিলতি কিংবা বছরের পর বছর ধরে ঔদাসীন্যই কি দায়ী?
কোচবিহার মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের মাদার অ্যান্ড চাইল্ড হাব-এ (মাতৃমা) বৃহস্পতিবার সকালের অগ্নিকাণ্ডের কারণ নিয়ে নিশ্চিত হতে চাইছে প্রশাসন। শুক্রবার অগ্নিকাণ্ডের কারণ খতিয়ে দেখতে গঠিত তদন্ত কমিটির বৈঠক হয়। জেলাশাসকের দফতরের কনফারেন্স হলে ওই বৈঠকে সমস্ত প্রসঙ্গই উঠেছে। প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, বৈঠকের প্রাথমিক পর্বে জেলাশাসক কৌশিক সাহা নিজেও কিছু ক্ষণ উপস্থিত ছিলেন। পরে বৈঠক পরিচালনা করেন অতিরিক্ত জেলাশাসক তথা প্রশাসনের তৈরি তদন্ত কমিটির প্রধান জ্যোতির্ময় তাঁতি। কমিটির ১১ সদস্যের সকলেই ওই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন। জ্যোতির্ময় বলেন, “পুরো বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে দেখা হচ্ছে। সামগ্রিক ব্যাপারে বৈঠকে আলোচনা হয়।” মাতৃমা ভবনে অগ্নিকাণ্ডে ব্যাপক আতঙ্ক ছড়িয়েছিল। শতাধিক শিশু ও প্রসূতিকে বাইরে বের করে আনা হয়। কেউ জখম না হলেও ঘটনার জেরে হাসপাতালের অগ্নিনির্বাপণ পরিকাঠামো নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা ঠিক ভাবে কাজ করেনি বলেও রোগীর পরিজনদের একাংশ অভিযোগ তোলেন। দমকলের তরফে জানান হয়, প্রাথমিক ভাবে বিদ্যুতের শর্ট সার্কিট থেকে মাতৃমা ভবনের দোতলার প্যানেল রুমে আগুন লেগে যায়।
তাতে অবশ্য পুরোপুরি সংশয় মুক্ত হতে পারছেন না প্রশাসনের কর্তাদের একাংশ। এ দিনের বৈঠকে প্রশাসনের এক কর্তাও অবশ্য সাফ জানিয়েদেন, আদৌ শর্ট সার্কিটের জন্য ওই দুর্ঘটনা, অন্য কারণ রয়েছে নাকি অন্তর্ঘাতের কোনও ব্যাপার থাকতে পারে সে সবই ভাল করে খতিয়ে দেখা দরকার। সে জন্য, ওই প্যানেল রুমটির ভাল করে পরীক্ষা করা দরকার। জানা দরকার, সেখানে বৈদ্যুতিক যন্ত্রপাতিগুলো ঠিক কী ভাবে রয়েছে। ওই যন্ত্রপাতি যাঁরা দেখভাল করেন, তাঁদের সঙ্গে কথা বলা হবে। তেমনই দেখা হবে, সেখানে কাজ চালানোর জন্য জোড়াতালি দিয়ে কোনও বিদ্যুতের তার জড়ানো রয়েছে কি না। যদি দেখা যায়, তেমন কিছু রয়েছে এবং সে কথা জানার পরেও কর্তৃপক্ষ চোখ বুজে রয়েছেন—তা-ও খতিয়ে দেখা হবে। হাসপাতাল সূত্রেই খবর, পরিকাঠামোগত গাফিলতি কিছু রয়েছে বলেই আশঙ্কা করা হচ্ছে। সে ক্ষেত্রে সেই গাফিলতি যাঁরা করেছিলেন এবং যাঁরা সেই সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করেননি, তাঁদের কাছ থেকেও উত্তর জানতে চাওয়া হবে।
প্রশাসন সূত্রেই জানা গিয়েছে, এ দিনের বৈঠকেও বিভিন্ন দফতরের আধিকারিকদের কাছে সুনির্দিষ্ট কিছু বিষয় জানতে চেয়ে রিপোর্ট দিতে বলা হয়েছে। হাসপাতালের অগ্নিনির্বাপণ পরিকাঠামোও কী ছিল, তাতে কোনও খামতি ছিল কি না, অগ্নিনির্বাপক যন্ত্র ব্যবহারে কর্মীদের প্রশিক্ষণ রয়েছে কি না, তা জানাতে বলা হয়েছে স্বাস্থ্যকর্তাদের। পূর্ত ও বিদ্যুৎ দফতরের প্রতিনিধির কাছে কোনও ঠিকাদার সংস্থা হাবের কাজের দায়িত্বে ছিল, ঠিকঠাক কাজ হয়েছিল কি না, তা খতিয়ে দেখে রিপোর্ট দিতে বলা হয়েছে। বিদ্যুৎ বণ্টন কোম্পানির কাছে বিদ্যুতের ভোল্টেজ জনিত কোনও সমস্যার জেরে এমন সমস্যা হয়েছে কি না, সে ব্যাপারে খতিয়ে দেখে রিপোর্ট চাওয়া হয়। প্রশাসনের এক কর্তা জানান, দমকলের যাতায়াতে সমস্যা রয়েছে। তা নিয়ে রিপোর্ট চাওয়া হয়েছে। দমকল, হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ, পুলিশের কর্তাদেরও অগ্নিকাণ্ডের কারণ আরও খতিয়ে দেখতে বলা হয়। পৃথক রিপোর্ট মিললে অগ্নিকাণ্ডের প্রকৃত কারণ নিয়ে স্পষ্ট তথ্য উঠে আসবে বলেই মনে করা হচ্ছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy