রেলকর্তা সফরে যাবেন। সরকারি হোক বা ব্যক্তিগত। বিলাসবহুল সেলুন কামরা তৈরি। পছন্দের খাবারদাবার থেকে কামরার দায়িত্বে থাকা দশ থেকে বারো জন কর্মীও প্রস্তুত। এক্সপ্রেস ট্রেনের সঙ্গে জুড়ে দেওয়া হল সেই কামরা। সপরিবারে অথবা সপার্ষদ রেল কর্তা রওনা হলে সফরে।
রেলের এই পরিচিত দৃশ্য এবারে অতীত হতে চলেছে।
রেল বোর্ডের নির্দেশ, রেলের জোনের কোনও অফিসার সেলুন কামরা ব্যবহার করতে পারবেন না। সরকারি সফরে যাওয়ার সময়ে বাতানুকুল প্রথম এবং দ্বিতীয় শ্রেণির কামরাতেও অফিসারদের প্রবেশ নিষেধ। বাতানুকূল তৃতীয় এবং স্লিপার কামরাতেই যেতে হবে অফিসারদের। সম্প্রতি উত্তর পূর্ব সীমান্ত রেলের সদরে এই নির্দেশ এসেছে। সূত্রের খবর, ভারতীয় রেলের সব জোনকেই এই নির্দেশিকা পাঠানো হয়েছে। নির্দেশিকায় জানানো হয়েছে, পদস্থ অফিসারেরা সাধারণ কামরাগুলিতে যাতায়াত করলে আম-যাত্রীদের স্বাচ্ছন্দ্য, তাঁদের অভাব অভিযোগ সে সব সহজেই জানতে পারবেন।
উত্তর পূর্ব সীমান্ত রেলের এক পদস্থ আধিকারিকের কথায়, ‘‘একটি সেলুন কামরা চালানোর বিপুল খরচ। একটি সেলুন কামরাকে মাত্র ১০০ কিলোমিটার চালাতেই প্রায় লাখ টাকা খরচ পড়ে যায়।’’
বিলাসবহুল সেলুন কারে সোফা সেট, বিছানা তো বটেই ড্রইং রুম, স্টাডি রুম, রান্নাঘর, সভা ঘর সবই থাকে। রেলের কেটারিং সংস্থার কর্মীদের দায়িত্ব দেওয়া হয় সেলুন কামরায় রান্নার। তার জন্যও অতিরিক্ত খরচ গুণতে হয় রেলকে। সেলুন কামরার দেখভালের জন্যও প্রতিদিনের খরচ রয়েছে। রেলের এই সিদ্ধান্তের পরে বিভিন্ন সেকশন, বিভাগে সেলুন কামরা রাখার প্রয়োজনই নেই। এতদিন ডিআরএমরা পরিদর্শনে গেলেও সেলুন নিয়ে যেতেন। নতুন নির্দেশিকায় ডিআরএম তো বটেই জোনের জেনারেল ম্যানেজার থেকে শুরু করে রেল বোর্ডের চেয়ারম্যানরাও সেলুন স্বাচ্ছন্দ্য থেকে বঞ্চিত হতে চলেছে। নির্দেশ অনুযায়ী রেলমন্ত্রী, রেল বোর্ডের চেয়ারম্যান ছাড়া রেলের নিজস্ব কোনও অফিসার সরকারি সফরে সেলুন পাবেন না।
মঙ্গলবারই উত্তর পূর্ব সীমান্ত রেলের জেনারেল ম্যানেজার চাহাতে রাম ডুয়ার্সের বিভিন্ন স্টেশন পরিদর্শন করেছেন। সেলুন কামরার পরিবর্তে তিনি এসেছেন বিশেষ পরিদর্শন (ইন্সপেকশন) ট্রেন নিয়ে। এত দিনের প্রথা অনুযায়ী, ইন্সপেকশন ট্রেনে জোড়া হতো সেলুন কামরাও। নয়া নির্দেশিকার জেরে, এ দিন ইন্সপেকশন ট্রেনে অবশ্য কোনও সেলুন কামরা দেখা যায়নি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy