মুখোমুখি: মন্ত্রীর কাছে প্রাক্তন জঙ্গিরা। নিজস্ব চিত্র
একসময় কামতাপুর লিবারেশন অর্গানাইজেশনের হয়ে কেউ ভুটানে অস্ত্র চালানোর প্রশিক্ষণ নিয়েছিলেন। কেউ আবার লিঙ্কম্যান হিসেবে ওই সংগঠনের সাহায্যকারী হিসেবে ছিলেন। এমনই নানা অভিযোগ যাঁদের বিরুদ্ধে ছিল তাঁরা অনেকেই সমাজের মূলস্রোতে ফিরে এসেছেন। কোচবিহারের বাসিন্দা সেই প্রাক্তন কেএলও ও লিঙ্কম্যানরাই এ বার স্থায়ী কর্মসংস্থানের দাবিতে সরব হলেন। শনিবার উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করেন তাঁদের পাঁচ সদস্যের এক প্রতিনিধি দল।
এ দিন কোচবিহারে মন্ত্রীর বাড়ির দফতরে গিয়ে মন্ত্রীর সঙ্গে প্রায় আধ ঘন্টা নিজেদের সমস্যার পাশাপাশি স্থায়ী কর্মসংস্থান নিয়ে আলোচনা করেছেন। মন্ত্রী তাঁদের কথা শুনেছেন। দাবির বিষয়গুলিও মুখ্যমন্ত্রীর নজরে আনার আশ্বাস দিয়েছেন। উত্তরবঙ্গ উন্নয়নমন্ত্রী রবীন্দ্রনাথ ঘোষ বলেন, “অস্ত্র ত্যাগ করে ওঁরা সমাজের মূলস্রোতে ফিরে এসেছেন। এ দিন তাঁরা পুনর্বাসনের ব্যাপারে আর্জি জানান। ওই বক্তব্য আমি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে পৌঁচ্ছে দেব।” প্রশাসনের তরফেও সহযোগিতার কথা জানানো হয়। জেলাশাসক কৌশিক সাহা বলেন, “ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশ মতো প্রশাসনিকভাবে ওই ব্যাপারে প্রয়োজনীয় সহযোগিতাও করা হবে।”
এ দিন মন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করতে যাওয়া ওই পাঁচ সদস্যের প্রতিনিধি দলে ছিলেন পুলস্ত্য বর্মন, প্রাণেশ ইশোর, পরিমল বর্মন, নীতিশ মণ্ডল ও শ্যামল বর্মন। মাথাভাঙার খলিসামারির বাসিন্দা স্নাতক পুলস্ত্য কেএলও-র ফিনান্স সেক্রেটারির দায়িত্বে ছিলেন। কেএলও চিফ জীবন সিংহের ঘনিষ্ঠ বলেও পরিচিত হয়ে উঠেছিলেন। মন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করে বেরিয়ে এসে পুলস্ত্য বলেন, “সবার জন্য স্থায়ী কর্মসংস্থানের দাবি করেছি। মন্ত্রী আমাদের বক্তব্য শুনেছেন। আশ্বস্ত করেছেন।” প্রতিনিধি দলের সদস্য শ্যামল বর্মন বলেন, “কৃষিকাজ করে কষ্টে সংসার চালাতে হিমসিম খেতে হচ্ছে। স্থায়ী কর্মসংস্থান বা সরকারি চাকরির ব্যবস্থা হলে ভাল হয়। সেই আশাতে আবেদন করছি।”
এক সদস্যের কথায়, জেলায় এমন প্রাক্তনীর সংখ্যা প্রায় একশো। মূলস্রোতে ফেরার পর হাতেগোনা কিছু লোক পুনর্বাসনের জন্য আর্থিক ঋণ বা পাওয়ার টিলারের মতো চাষবাসের কাজের সামগ্রী পেয়েছেন। স্থায়ী কর্মসংস্থানের ব্যাপারে উদ্যোগ নেই। প্রতিনিধিদের সূত্রের দাবি, সবার বর্তমান অবস্থা, শিক্ষাগত যোগ্যতা, বয়সের তালিকা করে দ্রুত মন্ত্রীর কাছে জমা দেওয়ার ব্যাপারেও আলোচনা হয়েছে। তাতেই ভবিষ্যৎ নিয়ে আশার আলো দেখছেন তারা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy