কৃষ্ণ কল্যাণীর বেশ কয়েকটি ব্যবসা আছে। সে সব সম্পর্কে তথ্য নিতে ইডি হানা হয়েছে বলে সূত্রের খবর। —ফাইল চিত্র।
খাতায়কলমে তিনি বিজেপি বিধায়ক। তবে এখন তৃণমূলে রয়েছেন। সেই রায়গঞ্জের বিধায়ক কৃষ্ণ কল্যাণীর বাড়িতে হানা দিল এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি)। বুধবার সকালে বিধায়কের বাড়িতে যান ইডি আধিকারিকরা। একটি দল অফিসেও হানা দেয়। তদন্তকারীদের সূত্রে খবর, কৃষ্ণের ব্যবসায়িক লেনদেন সংক্রান্ত তথ্য জানতেই এই অভিযান। পরে জানা যায়, ওই অভিযানে রয়েছেন আয়কর দফতরের আধিকারিকেরাও।
২০২১ সালে বিজেপির টিকিটে রায়গঞ্জ বিধানসভা থেকে জয়ী হন কৃষ্ণ। পরে তিনি তৃণমূলে যোগ দেন। জনপ্রতিনিধি কৃষ্ণ ব্যবসায়ীও বটে। তাঁর একাধিক ব্যবসা রয়েছে। ওই ব্যবসা সংক্রান্ত কিছু তথ্য জানতে কৃষ্ণের বাড়িতে হানা দেয় ইডি। তাঁর বাড়ির চারপাশে দেখা যায় কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানদের। এখনও এ নিয়ে বিধায়কের কোনও প্রতিক্রিয়া মেলেনি। তবে তৃণমূল নেতৃত্বের দাবি, এই অভিযানের পিছনে রয়েছে রাজনৈতিক প্রতিহিংসা। তাঁরা বলছেন, এখন উত্তরবঙ্গ সফরে রয়েছেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি রায়গঞ্জ ঘুরে গিয়েছেন। তৃণমূলে নবজোয়ার কর্মসূচিতে তাঁর জনভিত্তির প্রমাণ পেয়েছেন সবাই। এ সব দেখে বিজেপি ভয় পেতে শুরু করেছে। তাই কেন্দ্রীয় তদন্তকারীদের দিয়ে এই অভিযান। যদিও এই পুরো অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছে গেরুয়া শিবির।
২০২২ সালের মার্চ মাস। রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু বিধানসভায় তাঁর বক্তব্যে রাজ্যের আইন-শৃঙ্খলা নিয়ে সমালোচনা করছিলেন। সেই সময় উঠে দাঁড়িয়ে প্রতিবাদ করেন তৃণমূলে যোগ দেওয়া তথা খাতায়কলমে বিজেপিতে থাকা চার বিধায়ক— কৃষ্ণ কল্যাণী, তন্ময় ঘোষ, সৌমেন রায় এবং বিশ্বজিৎ দাস। তার কিছু ক্ষণ পর মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যখন বলতে ওঠেন, তখন বিজেপি বিধায়করা ওয়াক-আউট করেন। সেই সময় শুভেন্দু কৃষ্ণের দিকে এগিয়ে গিয়ে কিছু একটা বলেন। দু’জনের মধ্যে বচসা হয়।
পরে বিধানসভায় দাঁড়িয়েই কৃষ্ণ অভিযোগ করেন, শুভেন্দু যাওয়ার সময় তাঁকে বলে যান, তাঁর বাড়িতে আয়কর হানা দেবে। তিনি বিষয়টি অধ্যক্ষ বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়ের নজরে আনেন। এ নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতাও বলেন, ‘‘খুবই গুরুতর অভিযোগ এটা। বিধানসভায় যে কোনও সদস্য তাঁর কথা বলতেই পারেন। কিন্তু তার জন্য তাঁকে আয়কর দফতরের হুমকি দেওয়া হবে? এর থেকে বোঝা যাচ্ছে ইডি, সিবিআই, আয়কর দফতর কারা চালায়।’’
বছর পার করতেই সত্যিই আয়কর হানা দিল বিধায়ক কৃষ্ণের বাড়িতে। সঙ্গে দোসর হল ইডিও। এই পুরো বিষয়টিতে তৃণমূল রাজনীতি দেখলেও স্থানীয় বিজেপি নেতৃত্বের দাবি, তদন্তকারীদের কাজ তাঁরা করছেন। এখানে রাজনীতি খোঁজা ভুল। সব মিলিয়ে রায়গঞ্জে তীব্র হচ্ছে রাজনৈতিক চাপান-উতোর।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy