২০১৬ সালের এসএসসি নিয়োগ মামলায় বৃহস্পতিবার রায় দিল সুপ্রিম কোর্ট। চাকরি গেল ২৫ হাজার ৭৫২ জনের, ব্যতিক্রম শুধু এক জন— ক্যানসার আক্রান্ত শিক্ষক সোমা দাস। সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি সঞ্জীব খন্না এবং বিচারপতি সঞ্জয় কুমারের বেঞ্চ কলকাতা হাই কোর্টের রায় বহাল রেখে জানিয়েছে, ‘মানবিক কারণে’ সোমার নিয়োগ বাতিল করা হচ্ছে না।
বৃহস্পতিবার সুপ্রিম কোর্টের রায় শুনে সোমা বলেন, ‘‘আমি কখনওই চাইনি আমার চাকরি থাকুক, বাকিদের চলে যাক। এই রায় আমার কাছে অনভিপ্রেত। কারণ, গোটা প্যানেলে অনেকেই যোগ্য ছিলেন। সরকার এবং কমিশনের (এসএসসি) কিছুটা গাফিলতির কারণেই যোগ্য এবং অযোগ্যদের আলাদা করা সম্ভব হল না।’’ প্রসঙ্গত, কলকাতা হাই কোর্টের বিচারপতি দেবাংশু বসাক এবং বিচারপতি মহম্মদ শাব্বার রশিদির ডিভিশন বেঞ্চ ২০২৪ সালের ২২ এপ্রিলের রায়েও এসএসসিতে নিয়োগের অনিয়মে পুরো প্যানেল বাতিল করে ছাড় দিয়েছিলেন শুধু হাই কোর্টেরই ‘অনুরোধে’ চাকরি পাওয়া সোমাকে।
বীরভূমের নলহাটির কন্যা সোমা ২০১৬ সালে নবম-দশম শ্রেণির শিক্ষক নিয়োগের (এসএলএসটি) পরীক্ষায় বসেছিলেন। সেই নিয়োগের মেধাতালিকায় নাম থাকা সত্ত্বেও তাঁকে চাকরি দেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ। সেই অভিযোগের ভিত্তিতে মামলা হয় হাই কোর্টে। তার মধ্যেই ২০১৯ সালের ফেব্রুয়ারিতে ক্যানসার ধরা পড়ে তাঁর। পাইকপাড়া গ্রাম পঞ্চায়েতের আশ্রমপাড়া গ্রামের মেয়ে সোমা কিন্তু লড়াই ছেড়ে দেননি। চাকরির দাবিতে রোদ, বৃষ্টি মাথায় নিয়ে অসুস্থ অবস্থায় দিনের পর দিন কলকাতার রাস্তায় ধর্না, অবস্থান বিক্ষোভ করে গিয়েছেন।
এসএসসি মামলায় তৎকালীন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের এজলাসেও বার বার এসেছেন সোমা। মামলাকারীদের থেকেই সোমার শারীরিক অবস্থার কথা জানতে পেরেছিলেন তৎকালীন বিচারপতি অভিজিৎ। সব শুনে রাজ্য সরকারের কাছে তিনি ‘অনুরোধ’ করেছিলেন যাতে সোমাকে চাকরি দেওয়া হয়। ২০২২ সালে সেই ‘অনুরোধ’ মেনে ক্যানসার আক্রান্ত সোমাকে চাকরির সুপারিশপত্র দেয় কমিশন। বীরভূমের নলহাটি-১ ব্লকের মধুরা হাই স্কুলে বাংলার শিক্ষক হিসাবে সোমাকে নিয়োগ করা হয়। এখনও সেই পদেও রয়েছেন তিনি। সুপ্রিম কোর্টের বৃহস্পতির রায় স্বস্তি দিল তাঁকে।